বাংলাদেশের আন্দোলনে উৎসাহিত হয়ে বিরোধীরা ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে: মমতা

বাংলাদেশ নিয়ে মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি: এএফপি

কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে। এ পরিস্থিতিতে রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বিরোধী দলগুলো 'বাংলাদেশের মতো বিক্ষোভ' চালিয়ে তার হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাচ্ছে।

গতকাল বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস।

এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় মমতা বলেন, 'মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআইএম) ও বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা কুক্ষীগত করতে বাংলাদেশের মতো বিক্ষোভ আয়োজনের চেষ্টা চালাচ্ছে।'

তিনি 'বাংলার অপমান' করার জন্য বিরোধীদলের সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের মদদে বিজেপি ও সিপিআইএম পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাকে (পশ্চিমবঙ্গ) অবমাননা করার সমন্বিত উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। তারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থী আন্দোলনে উৎসাহিত হয়ে একইভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তারা সফল হবে না।'

গত ৫ আগস্ট শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের গণবিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভের এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী তার সরকারের প্রতি সমর্থন সরিয়ে নিলে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি।

পদত্যাগের পর ভারতে আসেন তিনি। এখনো সেখানেই রয়েছেন তিনি।

ইতোমধ্যে কলকাতার হাইকোর্ট এই মামলার তদন্তভার কলকাতা পুলিশ থেকে গোয়েন্দা বিভাগ সিবিআইর কাছে হস্তান্তর করেছে। এ পরিস্থিতিতে মমতা কর্মবিরতিতে থাকা চিকিৎসকদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'আপনাদের এখন কাজে ফিরে আসতে হবে। আমার সরকার সিবিআইকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। আমরাও চাই এ বিষয়টির দ্রুত সুরাহা হোক।'

মধ্যরাতের বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি

পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী আরও দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গে এক ধরনের 'অশুভ প্রচারণা' চলছে।

'আমরা মামলার তদন্তে যা যা করা প্রয়োজন, আমরা তার সবই করেছি। তা সত্ত্বেও, এক ধরনের অশুভ প্রচারণা চলছে', যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'আপনারা আমাকে অবমাননা করতে পারেন, কিন্তু রাজ্যের অবমাননা করবেন না।'

গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ভোররাতে আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক জুনিয়র চিকিৎসকের (৩১) ধর্ষণ-হত্যার পর ভারতজুড়ে চলছে চিকিৎসকদের ধর্মবিরতি ও গণবিক্ষোভ।

বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি হল দায়ীদের আটক করে দ্রুত বিচার করা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য আইন প্রণয়ন।

এই ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে রাস্তার বিক্ষোভ গতকাল রাত ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শুরু হয়; যা কলকাতার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গাসহ অন্যান্য ছোট ও বড় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও বিচারের দাবিতে গত রাতে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় 'রাতের দখল নাও কর্মসূচি পালন করেন নারীরা। এই কর্মসূচির আওতায় রাত ১২টার আগেই হাজার হাজার মানুষ কলকাতার রাস্তায় নেমে আসে।

এর ভেতর বিক্ষোভকারীদের ভেতর থেকে একটি দল আর জি কর হাসপাতালে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।

চলমান পরিস্থিতিতে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় রাজ্য সরকারগুলোকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 

Comments

The Daily Star  | English

Foreign adviser’s China tour: 10 extra years for repaying Chinese loans

Beijing has agreed in principle to extend the repayment period for Chinese loans and assured Dhaka it will look into the request to lower the interest rate to ease Bangladesh’s foreign debt repayment pressure.

10h ago