বাসে আগুন দিতে ৪ লাখ টাকার চুক্তি, শ্রমিক লীগ নেতা গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বালুচরা এলাকায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ডিপোর ভেতরে পাঁচটি বাসে আগুন দিতে শ্রমিক লীগের এক নেতা চার লাখ টাকার চুক্তি করেছিলেন বলে আদালতে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন এক হিউম্যান হলার চালক।
আদালতে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি দিদারুল আলম তার সঙ্গে এই মৌখিক চুক্তি করেছিলেন।
হাটহাজারী থানায় দায়ের করা অগ্নিসংযোগের মামলায় মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ মোহাম্মদ জুনায়েদের কাছে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সোহেল রানা।
গত শনিবার রাতে চট্টগ্রামে বিআরটিসির দুটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরদিন অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে বিআরটিসি চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপক জুলফিকার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এই মামলায় শ্রমিক লীগের সভাপতি দিদারুল আলম দিদার ও সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে।
ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সোমবার সোহেল রানাকে প্রথমে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই দিনই দিদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুজনকে আদালতে হাজির করা হয়।
মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সহিংসতার সময় বায়েজিদ বোস্তামী থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি দিদার সুযোগটি নিয়েছিলেন। তিনি তার সহযোগী সোহেলকে ডিপোর ভেতরের বাসগুলো জ্বালিয়ে দিতে বলেন।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সোহেল বলেন, দিদার পাঁচটি বাসে অগ্নিসংযোগ করলে তাকে চার লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এ জন্য তিনি তাকে আগাম ৫০০ টাকা দেন।
সোহেল আরও বলেন, বাস ডিপোর নিরাপত্তারক্ষীরা টের পাওয়ার আগেই তিনি দুটি বাসে আগুন দিতে সক্ষম হন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হাটহাজারী থানার উপ-পরিদর্শক রহমত উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোহেল বিচারকের সামনে তার অপরাধ স্বীকার করে বলেছেন দিদার তাকে গাড়িতে আগুন দেওয়ার জন্য ৫০০ টাকা অগ্রিম দিয়েছে… আমরা দিদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে রিমান্ড চাইব।
পুলিশ ও বিআরটিসি সূত্র জানায়, ডিপো থেকে চুক্তিতে বিআরটিসি বাস ভাড়া নিতেন দিদার। তবে কিছু অনিয়মের কারণে বিআরটিসি তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হন।
ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, দিদার ২০২২ সালের একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, হত্যা মামলাটি এখন বিচারাধীন। মামলার চার্জশিটে বলা হয়েছে, বিআরটিসি বাসের সুপারভাইজার নিয়োগ নিয়ে বিরোধের জের ধরে দিদার ও তার সহযোগীরা ছুরিকাঘাত করে আব্দুল হালিম রুবেলকে হত্যা করেন।
Comments