এক জীবনে খুব বেশি চাইনি, মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি: রাইসুল ইসলাম আসাদ

এক জীবনে খুব বেশি চাইনি, মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি: রাইসুল ইসলাম আসাদ
রাইসুল ইসলাম আসাদ | ছবি: সংগৃহীত

'এক জীবনে খুব বেশি চাইনি, চাওয়াগুলো কম ছিল। মানুষ এতটা ভালোবাসে, এটা আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া'—৭১তম জন্মদিনে সোমবার কথাগুলো বলছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশের খ্যাতিমান অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ।

আজীবন সম্মাননা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত এই অভিনেতার আজ সোমবার জন্মদিন।

রাইসুল ইসলাম আসাদের নাম এলেই উঠে আসে গুড্ডি, পদ্মা নদীর মাঝি, লাল দরজা, লালসালু, মনের মানুষ, লালন, সুরুজ মিয়া, কিওনখোলাসহ আলোচিত ও সাড়া জাগানো অনেক সিনেমার নাম।

এক জীবনে খুব বেশি চাইনি, মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি: রাইসুল ইসলাম আসাদ

অনেক দিন থেকে অভিনয় থেকে দূরে এই গুণী শিল্পী। সর্বশেষ অভিনয় করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন নিয়ে নির্মিত মুজিব সিনেমায়।

কীভাবে কাটছে এই অভিনেতার সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কখনো বই পড়ি, কখনো গান শুনি। পৃথিবীর নানা দেশে আমার বন্ধুরা আছেন, তাদের সাথে ফোনে কথা বলি। এটা আমার ভালো লাগে। বন্ধুদের সাথে গল্প করতে করতে অতীতে ফিরে যাই।

'এক সময় শিল্পকলার ওদিকে যেতাম আড্ডা দিতে। ওদিকে গেলে অনেক পরিচিত মানুষ পেয়ে যাই। সে জন্য আমি মতিঝিলের দিকে চলে যাই, নিরিবিলি সময় কাটাই। কোথাও একটু চা খাই। এ রকম সাধারণ থাকতেই বেশি লাগে,' বলেন আসাদ।

তিনি আরও বলেন, 'আমি কখনো রিকশায় উঠি, রিকশাওয়ালার সাথে গল্প করি। ভ্যানচালকের সাথে গল্প করি। সবজি কিনতে গেলে দেখি অনেকেই আমাকে চিনে ফেলেছেন! আমার ধারণা ছিল তারা কেউই আমাকে চেনেন না। সাধারণ মানুষের ভালোবাসা আমাকে আপ্লুত করে।'

তারকাখ্যাতি নিয়ে জানতে চাইলে আসাদ বলেন, 'ওটা অন্য জীবন। সাধারণ জীবন যাপনের মধ্যে আনন্দ আছে। মানুষের সাথে মিশতে পারার মধ্যে শান্তি আছে। জীবন থেকে আমি এটা শিখেছি।'

এক জীবনে খুব বেশি চাইনি, মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি: রাইসুল ইসলাম আসাদ

'কখনোই আমি খুব বেশি কাজ করিনি। কেউ কেউ নাকি এক হাজারের মতো সিনেমা করেছেন, কয়েক হাজার নাটক করেছেন। ৫০ বছরের অভিনয় জীবনে আমি একশো সিনেমাও করিনি। সব সময় কম কাজ করেছি।'

তিনি বলেন, 'মাঝে মাঝে অনুরোধের ঢেঁকিও গিলেছি। কেউ কেউ এসে যখন খুব করে অনুরোধ করেছেন, বলেছেন—কাজটি করে দেন, সংসার চলছে না, চুলা জ্বলছে না। তখন অনুরোধ ফেলতে পারিনি।'

রাইসুল ইসলামের স্ত্রী-কন্যা-নাতি আমেরিকায় বসবাস করেন। মাঝে মাঝে আসাদ নিজেও আমেরিকায় কিছু দিন কাটিয়ে আসেন। তিনি বলেন, 'গত ২০ বছরে কম করে হলেও ৪০ বার গেছি সেখানে। এক মাস থাকার পর আর পারি না। দেশের জন্য মন কাঁদে, তখন চলে আসি।'

তিনি আরও বলেন, 'আমেরিকায় কিছু দিন থাকার পরে মনে হয়, ওই দেশের নদী আমার না, সমুদ্র আমার না, পাহাড় আমার না, কোনো কিছুই আমার না!

'আমি অনেক দিন বাঁচতে চাই। অনেক কিছু দেখে যেতে চাই। সব সময় চেয়েছি সাধারণ জীবন যাপন করতে এবং সাধারণ মানুষ হয়ে বেঁচে থাকতে। এখনো তাই চাই,' বলেন আসাদ।

Comments

The Daily Star  | English

July 6, 2024: 'Bangla Blockade' announced

Beyond Dhaka, protesters hold the streets with equal resolve

22h ago