‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিন, জনদুর্ভোগ কর্মসূচি দিতে বাধ্য করবেন না’

‘সরকারের কাছ থেকে যেহেতু আশ্বাস পাচ্ছি না। তাই রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে আমরা চাই রাষ্ট্রপতি যেন আমাদের এক দফা দাবির বিষয়টি পার্লামেন্টে তোলেন।'
রোববার দুপুর সোয়া ৩টার দিকে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান শেষে প্রেফ ব্রিফিং করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাবি শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার দুপুর সোয়া ৩টার দিকে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান শেষে প্রেফ ব্রিফিং করে এ ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাবি শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, 'সরকারের কাছ থেকে যেহেতু আশ্বাস পাচ্ছি না। তাই রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে আমরা চাই রাষ্ট্রপতি যেন আমাদের এক দফা দাবির বিষয়টি পার্লামেন্টে তোলেন এবং তিনি যেন আইন পাশ করতে ভূমিকা রাখেন, জরুরি অধিবেশন আহ্বান করেন।'

তিনি আরও বলেন, 'রাষ্ট্রপতির কাছে আমরা ২৪ ঘণ্টার জন্য সুপারিশ করেছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংসদে অধিবেশন ডেকে আইন পাশের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক, অধিবেশন আহ্বান করা হোক। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে চাই।'

'জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন কোনো ধরনের কর্মসূচি দিতে আমাদের বাধ্য করবেন না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিন,' বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, '২০১৮ সালের পরিপত্র নয় সকল গ্রেডে কোটা সংস্কারের যে এখতিয়ার সেটি কেবল সরকারের এখতিয়ার। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, আমাদের দাবি সরকার ও নির্বাহী বিভাগের কাছে। সরকার দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে। জাতীয় সংসদের মাধ্যমে আইন পাশ করে যথাযথ বিধিবদ্ধ করতে হবে, যাতে জনপ্রতিনিধিরা এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে। আমরা দাবি নিয়ে যতগুলো দরজা আছে সব দরজায় যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের বারবার দরজা থেকে ফেরানো হচ্ছে।'

'শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনের জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে' জানিয়ে তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, 'আমাদের নামে মামলা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম আরও ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়ে দিচ্ছি। এর মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না করা হলে আমরা আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সর্বোচ্চ ব্যক্তিকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করব।'

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাবি শিক্ষার্থী সারজিস আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সামরিক সচিব আমাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন। সামরিক সচিব অতিদ্রুত আমাদের স্মারক লিপি রাষ্ট্রপতির নিকট পৌছে দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি, রাষ্ট্রপতি সারাদেশের শিক্ষার্থীদের প্রাণের এক দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।'

এর আগে রোববার সকাল ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজ শিক্ষার্থীরাও এই মিছিলে যোগ দেন।

মিছিলটি ক্যাম্পাসের ভিসি চত্বর, টিএসসি, শাহবাগ ঘুরে প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে পৌঁছায়।

সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া/অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) আইন পাশ করতে হবে— এই এক দফা দাবিতে আজ গণপদযাত্রা শুরু করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে গত দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ করছেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। গত ৭ জুলাই থেকে 'বাংলা ব্লকেড' নামে অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়, প্রধান মহাসড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Gaza still bleeds

Death toll nears 42,000; rallies worldwide calls for ceasefire

2h ago