মহেশখালী ফিরেছে সামিটের ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল, গ্যাস সরবরাহ ১৮ জুলাই থেকে

ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল
প্রতীকী ছবি

মেরামত শেষে মহেশখালীর অদূরে বঙ্গোপসাগরে ফিরেছে সামিটের ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল। গত ১০ জুলাই মহেশখালীর অদূরে বঙ্গোপসাগরে এসে পৌঁছে এই ভাসমান টার্মিনালটি। ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সিঙ্গাপুরে মেরামতের জন্য পাঠানো হয়েছিল ভাসমান এই এলএনজি টার্মিনালটি।

আগামী ১৮ জুলাই থেকে সামিটের ভাসমান টার্মিনালটি আবারো এলএনজি সরবরাহ শুরু করবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ভাসমান টার্মিনালটি এতদিন অপারেশনাল কার্যক্রমে না থাকায় জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ অর্ধেকে নেমে এসেছিল। এতে করে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিডেটের (আরপিজিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, সিঙ্গাপুরে মেরামত শেষে সামিটের ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি গত ১০ জুলাই মহেশখালীর অদূরে বঙ্গোপসাগরে ফিরেছে। আগামী ১৮ জুলাই থেকে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ আবারো স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে একটি ভাসমান পল্টুন এসো বঙ্গোপসাগরে ভাসমান সামিটের ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে (এফএসআরইউ) আঘাত করে। এতে ভাসমান টার্মিনালের একটি ব্যালাস্ট ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ওই টার্মিনাল দিয়ে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুই টার্মিনালের একটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। 

এদিকে এলএনজি সরবরাহের দুটি পাইপলানের মধ্যে একটি গত মঙ্গলবার ফুটো হয়ে যাওয়া ওই পাইপলাইন বন্ধ করে দেয় রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিডেটের (আরপিজিসিএল) কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ নেমে আসে ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে।

চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রাান্তে চীনা ইকোনোমিক জোনের জেটি নির্মাণের সয়েল টেস্ট করার সময় মাটির নিচে থাকা পাইপলাইনটি ফুটো হয়ে যায়। টানা তিন দিন মেরামত কাজ শেষে গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের এই পাইপলাইন দিয়ে আবারো এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়।

আরপিজিসিএলের কর্মকর্তারা জানান, দেশে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে আমদানি করা এলএনজি কার্গো কক্সবাজারের মহেশখালী এলাকার অদূরে বঙ্গোপসাগরে স্থাপন করা দুই ভাসমান টার্মিনাল দিয়েই খালাস করা হয়। এর একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির 'এক্সিলেন্স'। অন্যটি দেশিয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপের ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট। এ দুই টার্মিনালের দৈনিক রিগ্যাসিফিকেশন ক্যাপাসিটি ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট।

বর্তমানে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির ভাসমান টামিনাল 'এক্সিলেন্স' থেকে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। আগামী ১৮ জুলাই সামিটের ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট আবারো অপারেশনাল হলে আরো ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। এতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় চলমান গ্যাস সংকট কিছুটা দূর হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

Comments