ডিসেম্বরে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র
মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: ইউএনবি থেকে নেওয়া

কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটির আগামী ডিসেম্বরে উৎপাদনে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এটি জাতীয় গ্রিডে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করবে।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা চলতি সপ্তাহে সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্ল্যান্টটি উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৬৪ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন কয়লা বহনকারী একটি জাহাজ গত ২৩ জুন ইন্দোনেশিয়া থেকে আসে।

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ১ হাজার ৪১৪ একর জমির ওপর ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে।

৭ বছর আগে কক্সবাজার উপকূলে জাপানের অর্থায়নে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি জাহাজ থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য বন্দর অবকাঠামো ও জেটি নির্মাণও শুরু হয়।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) এই মেগা প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে কয়লা খালাসের জন্য জেটির কাজ প্রায় শেষ। জেটিতে জাহাজও ভিড়তে শুরু করেছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রকল্পটি পুরো এলাকার দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে।

পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন ১৩ হাজার ১০৪ টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এর জন্য কয়লা খালাসের জেটি ও সাইলো নির্মাণ করা হয়েছে।

৬০ দিনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা বিশাল আকৃতির সাইলোগুলোয় রাখা হয়েছে। ৮০ হাজার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন মাদার ভেসেল সরাসরি কয়লা নিয়ে জেটিতে আসতে পারবে। মাদার ভেসেল থেকে কয়লা খালাস করতে সময় লাগবে দেড় থেকে ২ দিন।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছাই সংরক্ষণের জন্য ২টি পৃথক অ্যাশপন্ড রাখা হয়েছে। একটির আয়তন ৯০ একর, অন্যটির আয়তন ৬০০ একর। কয়লা সংরক্ষণের জন্য ৮০ একর জমিতে কয়লা ইয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে।

২০১৪ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে এ প্রকল্পের জন্য ঋণ চুক্তি হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

এর মধ্যে ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা জাইকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে এবং বাকি ৭ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও সিপিজিসিবিএলের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে জেটি ও ভৌত অবকাঠামোর ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সার্বিক ভৌত অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে ৯০ শতাংশ।

মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ডিসেম্বরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উদ্বোধন করবেন।

তিনি আরও বলেন, 'তবে আমরা উদ্বোধনের আগে এখান থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করতে চাই এবং তা হবে। মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চালু হওয়ার কথা থাকলেও আমরা আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তা পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।'

আগামী বছর জুলাইয়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তবে ২টি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে জানিয়ে নাজমুল হক বলেন, পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করে প্রকল্পটির কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, 'জাহাজ থেকে খালাসের পর কয়লা একবারই দেখা যাবে। এরপর কয়লা জেটি থেকে সরাসরি প্ল্যান্টে যাবে। এটি পরিবেশ দূষিত করবে না।'

প্রকল্পের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে নির্বাহী পরিচালক বলেন, 'আমাদের এই প্রকল্পের ২টি অংশ—একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, অন্যটি বন্দর।'

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান সাংবাদিকদের বলেন যে, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প।

Comments

The Daily Star  | English

Prioritise reform over revenge, Tarique tells party men

BNP Acting Chairman Tarique Rahman today urged his party leaders and workers to make the party's 31-point proposal a success

16m ago