কোপা আমেরিকা

জেনে নিন আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া ফাইনালের ব্রাজিলিয়ান রেফারি সম্পর্কে

আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি (বামে) ও ব্রাজিলিয়ান রেফারি রাফায়েল ক্লাউস। ছবি: এএফপি

আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়ার মধ্যকার কোপা আমেরিকার এবারের আসরের ফাইনালে রেফারি থাকবেন রাফায়েল ক্লাউস। ২০১৫ সাল থেকে ফিফার ম্যাচ অফিসিয়ালদের তালিকায় আছেন ৪৪ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান। প্রায় ১০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রেফারিংয়ের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি ভালো নামডাক রয়েছে তার। তাকে দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম সেরা ম্যাচ অফিসিয়াল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

আগামী সোমবার মায়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে কোপার শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া। ক্লাউস দ্বিতীয়বারের মতো এই দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে রেফারির দায়িত্বে থাকবেন। আগে একবারই তিনি যখন ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন, তখন কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা।

কাতার বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের সেই ম্যাচটি ছিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কলম্বিয়ার বিপক্ষে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা খেলেছিল ঘরের মাঠ কর্দোবার মারিও আলবার্তো কেম্পেস স্টেডিয়ামে। প্রথমার্ধেই দেখা মিলেছিল ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলের। ২৯তম মিনিটে জাল খুঁজে নিলেছিলেন স্ট্রাইকার লাউতারো মার্তিনেজ। তবে সেদিন মাঠে অনুপস্থিত ছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পরও সতর্কতার অংশ হিসেবে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল তাকে।

২০২২ সালে আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়ার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ পরিচালনায় ছিলেন ক্লাউস। ছবি: এএফপি

চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, ক্লাউসের উপস্থিতিতে আর্জেন্টিনার কাছে সবশেষ ওই হারের পর অপ্রতিরোধ্য একটি দলে পরিণত হয়েছে কলম্বিয়ানরা। চলতি কোপার ফাইনালে তারা খেলতে নামবে নিজেদের ইতিহাসে টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচ না হারার রেকর্ড নিয়ে। টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত রয়েছে নেস্তর লরেঞ্জোর শিষ্যরা। ২২ জয়ের সঙ্গে তাদের নামের পাশে রয়েছে ছয়টি ড্র। দুর্বার যাত্রায় ব্রাজিল, স্পেন, জার্মানি ও উরুগুয়ের মতো দলকে হারিয়েছে তারা।

সব মিলিয়ে ক্লাউস আর্জেন্টিনার চারটি ও কলম্বিয়ার তিনটি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। সেই চার ম্যাচের মধ্যে রেকর্ড ১৫বারের কোপাজয়ী আর্জেন্টিনা দুটি করে জিতেছে (কলম্বিয়া ও প্যারাগুয়ের বিপক্ষে) ও ড্র করেছে (ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ের সঙ্গে)। অর্থাৎ হারের নজির এখন পর্যন্ত নেই আলবিসেলেস্তেদের। অন্যদিকে, ক্লাউস দায়িত্বে থাকাকালীন ওই তিন ম্যাচের মধ্যে কলম্বিয়া একটি করে জিতেছে (পেরুর বিপক্ষে), হেরেছে (আর্জেন্টিনার বিপক্ষে) ও ড্র করেছে (প্যারাগুয়ের সঙ্গে)।

কাতারের মাটিতে আর্জেন্টিনার তৃতীয়বারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আসরে দুটি ম্যাচে রেফারি ছিলেন ক্লাউস। তিনি গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ড-ইরান ও কানাডা-মরক্কো ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন। আর দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের আসরে এর আগে মোট পাঁচটি ম্যাচে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এর মধ্যে চলতি কোপায় একটি ম্যাচেই দেখা গিয়েছিল তাকে। গ্রুপ পর্বে মেক্সিকো-ভেনেজুয়েলা ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন ক্লাউস।

২০২০ সালে আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ের মধ্যকার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে রেফারি ছিলেন ক্লাউস। ছবি: এএফপি

সেই ম্যাচের রেফারিং নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা বিতর্ক এখনও ওঠেনি। তবে সমালোচনা কম হচ্ছে না এবারের কোপা আমেরিকায় ম্যাচ পরিচালনার সার্বিক মান নিয়ে। গ্রুপ পর্বে ব্রাজিল-কলম্বিয়া ম্যাচে ভিএআরের ভুল হয়েছিল স্বীকার করে বিবৃতিও দিয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা (কনমেবল)।

পুরনো স্মৃতি হাতড়ালে অবশ্য বিতর্কের ঊর্ধ্বে নেই ক্লাউসও। কাতার বিশ্বকাপেরই বাছাইয়ে তিনি রেফারি ছিলেন বুয়েনস এইরেসের লা বোম্বোনেরা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আর্জেন্টিনা-প্যারাগুয়ে ম্যাচে। আর্জেন্টিনার মাটিতে ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ওই খেলা ড্র হয়েছিল ১-১ গোলে। প্রথমার্ধে আলবিসেলেস্তেদের বিপক্ষে পেনাল্টি দিয়েছিলেন ক্লাউস, দ্বিতীয়ার্ধে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে বাতিল করেছিলেন মেসির গোল।

দুটি সিদ্ধান্তই সেসময় জন্ম দিয়েছিল আলোচনা-সমালোচনার। ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তারকা ফরোয়ার্ড মেসি। তিনি ক্লাউসকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, 'তুমি আমাদের বিরুদ্ধে দুবার অন্যায় করেছো।' আর্জেন্টাইন কোচ স্কালোনিও ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন ডাগ আউট থেকে। মেসির গোল বাতিল হওয়ার পর  বলেছিলেন, 'সমস্যাটা কোথায়? এটা লজ্জাজনক, লজ্জাজনক!'

উল্লেখ্য, কোপার এবারের আসরের ফাইনালে ব্রাজিলের মোট পাঁচ অফিসিয়াল থাকবেন। সহকারী হিসেবে দুই স্বদেশি রেফারি ব্রুনো পিরেস ও রদ্রিগো কোরেয়াকে পাবেন ক্লাউস। ভিএআরের দায়িত্বে থাকবেন আরেক ব্রাজিলিয়ান রোদোলফো তস্কি। তাকে সহায়তা করবেন স্বদেশি দানিলো মানিস।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

4h ago