‘শূন্য’ থেকে অভিষেকের শতকে ভারত ফিরল সমতায়
জিরো থেকে হিরো! প্রবাদটা অভিষেক শর্মার দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে আপাতত খাপে খাপ মিলে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে 'অভিষেক' ম্যাচে তিনি আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে থামলেন ঠিক ১০০ রান করে। তরুণ এই ওপেনারের সঙ্গে রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের ফিফটিতে চড়ে ভারত গড়ে ২৩৪ রানের বিশাল সংগ্রহ। এরপর দলটির বোলাররা তাদের কাজ সারেন জিম্বাবুয়েকে ১৩৪ রানে গুটিয়ে দিয়েই।
রবিবার হারারে স্পোর্টস ক্লাবে ৪৬ বলের সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়েকে দিশেহারা বানিয়ে ছাড়েন অভিষেক। শেষদিকে গায়কোয়াড়ের অপরাজিত ৭৭ রানের ইনিংসের সঙ্গে রিঙ্কু সিং ঝড় তুলে করেন ২২ বলে অপরাজিত ৪৮ রান। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়েই তাই ভারত পায় বড় পুঁজি। তাদের বোলিংয়ের বিপরীতে এরপর কোনো জবাব দিতে পারেনি স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। ১৮.৪ ওভারে সিকান্দার রাজার দলকে অলআউট করে সফরকারীরা পেয়েছে ১০০ রানের দাপুটে জয়। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে প্রথমটিতে ১৩ রানে হারের পর এই জয়ে ভারত ফিরল সমতায়।
লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইনোসেন্ট কাইয়াকে ডাক উপহার দেন মুকেশ কুমার। ব্রায়ান বেনেট এসে আগ্রাসী রূপ দেখিয়ে দ্রুত রান তোলেন। কিন্তু ডানহাতি এই ব্যাটারের ইনিংস ৯ বলে থামে। তিনি ৩ ছক্কা ও ১ চারে করেন ২৬ রান। এরপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে থাকে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ডিয়ন মায়ার্স ও ক্লাইভ মাদান্দে আউট হন শূন্য রানে। অধিনায়ক রাজা ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ফিরে যান এক অঙ্কেই। জোনাথন ক্যাম্পবেল যেতে পারেন ১০ রান পর্যন্তই। ৭৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে দলের ছিটকে যাওয়া একপাশ থেকে দেখেন ওপেনিংয়ে নামা ওয়েসলি মাধেভেরে। ১৭তম ওভার পর্যন্ত খেলে গিয়ে শুধু হারের ব্যবধান কমাতেই পারেন তিনি।
রবি বিষ্ণোইয়ের বলে মাদেভেরে বোল্ড হন ৩৯ বলে ৪৩ রান করে। ৩ চার ও ১ ছক্কায় গড়া ইনিংস খেলে যখন তিনি বিদায় নেন, জিম্বাবুয়ের রান মাত্র ১১৭। তাদের ইনিংসের শেষ উইকেট হয়ে লুক জঙ্গুয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ২৬ বলে ৩৩ রান করে। ভারতের দুই পেসার মুকেশ ও আবেশ খান নেন ৩ উইকেট করে।
এর আগে এদিন প্রথম বলেই ছক্কা মেরে ঝড়ের আভাস দেন অভিষেক। কিন্তু সঙ্গীকে ফিরে যেতে দেখেন দ্বিতীয় ওভারেই। ব্লেসিং মুজারাবানির বলে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ২ রানেই বিদায় নেন অধিনায়ক শুবমান গিল। গায়কোয়াড় বেশ নিরাপদে খেলতে থাকেন। ঝড়ো শুরুর পর অভিষেকও তার দলে যোগ দেন। ৯ বলে ১৮ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটার ২৮ রানে যেতে নেন ২৪ বল। এর আগে অষ্টম ওভারে জঙ্গুয়ের স্লোয়ারে অভিষেকের খাঁড়া ক্যাচ উঠলে মিস করে ফেলেন মাসাকাদজা। সেই জীবন দেওয়ার মাশুল এরপর টের পান তিনি হাড়ে হাড়ে। তার সতীর্থদের উপর চড়াও হয়ে অভিষেক ৩৩ বলেই ফিফটি পূর্ণ করেন।
১১তম ওভারে মায়ার্সকে ২ ছক্কা ও ৩ চারে অভিষেক আনেন ২৮ রান। ৮ ওভারে ৪৯ রান তোলা ভারত শতরানের দেখা পেয়ে যায় ওই ওভারেই। একের পর এক বাউন্ডারি বের করে অভিষেক দ্রুতই পৌঁছে যান শতকের নাগালে। ৮২ রান থেকে এরপর টানা ৩ ছক্কায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। মাসাকাদজার বলে আরেকবার মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান ওই ১০০ রানে। ৪৭ বলের ইনিংস তিনি গড়েন ৭ চারের সঙ্গে ৮ ছক্কা মেরে।
শূন্য রানে মুজারাবানির কাছে ফিরতি ক্যাচে তুলে বেঁচে যাওয়া গায়কোয়াড় ৪৪ রানে আবার পেয়ে যান জীবন। ৩৮ বলে ফিফটির দেখা পাওয়ার পর তার ব্যাটেও ছক্কা-চারের ঝলক ওঠে। মাত্র ৩৬ বলে ৮৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন রিঙ্কুর সঙ্গে মিলে। ইনিংসের দ্বিতীয় অর্ধে ভারত আনে ১৬০ রান। ভারতের শেষ ১০ ওভারের ওই রানের থেকেও জিম্বাবুয়ে ২৬ রান পিছিয়ে থাকে শেষমেশ।
Comments