টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

কোহলি-অক্ষরের ব্যাটে ফাইনালে ভারতের ১৭৬ রানের পুঁজি

ছবি: এএফপি

ফর্ম হারিয়ে নিজেকে খুঁজতে থাকা বিরাট কোহলি জ্বলে উঠলেন ফাইনালের মঞ্চে। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ফিফটির দেখা পেলেন তিনি। তার অসাধারণ ইনিংসের পাশাপাশি ঝড়ো ব্যাটিং করলেন লাইনআপের ওপরের দিকে উঠে আসা অক্ষর প্যাটেল ও শিবাম দুবে। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দিল ভারত।

শনিবার বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে রোহিত শর্মার দল নির্ধারিত ২০ ওভারে তুলেছে ৭ উইকেটে ১৭৬ রান। প্রথম ১০ ওভারে ৭৫ রান তোলার পর বাকি ১০ ওভারে তারা আনে ১০১ রান।

একপ্রান্ত আগলে ৪৮ বলে হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করা ওপেনার কোহলি পরে চালিয়ে খেলেন। ৫৯ বলে সর্বোচ্চ ৭৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। তিনি ৬ চারের সঙ্গে মারেন ২ ছক্কা। চাপের মুহূর্তে ৪৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন পাঁচে নামা অক্ষর। ৩১ বল মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে ১ চার ও ৪ ছক্কা। দুবে ছয়ে নেমে ১৬ বলে ২৭ রান করেন ৩ চার ও ১ ছক্কায়।

ম্যাচের প্রথম ওভারে বাঁহাতি পেসার মার্কো ইয়ানসেনকে তিনটি চার মারেন কোহলি। এরপর দ্বিতীয় ওভারেই আক্রমণে স্পিন নিয়ে আসে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাতে সুফল মেলে হাতেনাতে। টানা দুটি চার হজমের পর দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়ে রোহিতকে আউট করে দেন কেশব মহারাজ। এক বল পর বাঁহাতি স্পিনারের শিকার হন রিশভ পান্ত। খানিক বাদে সূর্যকুমার যাদবকে সাজঘরের পথ দেখান ডানহাতি পেসার কাগিসো রাবাদা।

প্রথম ওভারে কোহলির নৈপুণ্যে ১৫ রান তোলা ভারত দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে রোহিতের কল্যাণে পৌঁছে যায় বিনা উইকেটে ২৩ রানে। এরপর ঘটে ছন্দপতন। মহারাজের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল সুইপ করার চেষ্টায় কাটা পড়েন ছন্দে থাকা রোহিত। স্কয়ার লেগে তার নিচু ক্যাচ নেন হেইনরিখ ক্লাসেন। ভারতের অধিনায়কের সংগ্রহ ৫ বলে ৯ রান।

বিপজ্জনক পান্ত টিকতেই পারেননি। তিনিও সুইপ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। ব্যাটের কানায় লেগে পেছনে চলে যাওয়া বল মাথার ওপর থেকে গ্লাভসে জমান কুইন্টন ডি কক। ২ বল খেলে পান্ত রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ হন। পঞ্চম ওভারে দলীয় ৩৪ রানে পতন হয় ভারতের তৃতীয় উইকেটের। পান্তের মতো আরেক বিপজ্জনক ব্যাটার সূর্যকুমারকেও থিতু হতে দেয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। তার শাফল করে মারা শট সীমানার আগেই আটকে যায়। ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে বল মুঠোয় জমান ক্লাসেন। ৪ বলে ৩ রানে থামেন সূর্যকুমার।

১১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে ইনিংস মেরামতে মনোযোগী হন কোহলি ও অক্ষর। কোহলি দেখেশুনে ব্যাট চালাতে থাকেন। অক্ষরের কৌশল ছিল প্রতিপক্ষের স্পিনারদের ওপর পাল্টা আক্রমণ। ফলে ধীরে ধীরে প্রোটিয়াদের তৈরি করা চাপ আলগা হতে থাকে। জমে ওঠে জুটি।

অষ্টম ও নবম ওভারে যথাক্রমে অফ স্পিনার এইডেন মার্করাম ও মহারাজকে একটি করে ছক্কা হাঁকান অক্ষর। পরে আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাবরাইজ শামসিকেও সীমানার ওপারে পাঠান তিনি। ১৪তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন উইকেটরক্ষক ডি কক। তার সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে যান দারুণ খেলতে থাকা অক্ষর। এতে ভাঙে ৫৪ বলে ৭২ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। তবে ততক্ষণে ভারত পেয়ে যায় শক্ত ভিত।

দুবে ক্রিজে গিয়েই ইয়ানসেনকে মারেন ছক্কা। তার পাশাপাশি কোহলিও শেষমেশ হাত খোলেন। ১৭তম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৩৮তম ফিফটি পূরণের পর তার ব্যাট হয়ে ওঠে উত্তাল। পরের ওভারে রাবাদাকে ছক্কা-চারে সীমানাছাড়া করেন তিনি। ইয়ানসেনও চার-ছক্কা হজম করেন কোহলির কাছ থেকে। পরে লং-অনে ইয়ানসেনেরই শিকার হন তিনি। থামে ৩৩ বলে ৫৭ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি।

শেষ ওভারে জোড়া শিকার করেন ডানহাতি পেসার আনরিক নরকিয়া। তিন বলের মধ্যে দুবের পর রবীন্দ্র জাদেজাকেও ছাঁটেন তিনি। তবে ভারতের ভালো পুঁজি পাওয়া ততক্ষণে নিশ্চিত হয়ে যায়। জাদেজা করেন ২ বলে ২ রান। হার্দিক পান্ডিয়া অপরাজিত থাকেন ২ বলে ৫ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৪ ওভারে ২৬ রানে ২ উইকেট নেন নরকিয়া। সমানসংখ্যক উইকেট নিতে ৩ ওভারে মহারাজ দেন ২৩ রান। ইয়ানসেন ছিলেন বেজায় খরুচে। তার ৪ ওভারে আসে ৪৯ রান।

Comments

The Daily Star  | English

Drug sales growth slows amid high inflation

Sales growth of drugs slowed down in fiscal year 2023-24 ending last June, which could be an effect of high inflationary pressure prevailing in the country over the last two years.

17h ago