যেভাবে আমেরিকানদের মন জয় করে নিচ্ছে শুঁটকির পিৎজা
আমরা যারা বাংলাদেশে বড় হয়েছি, ছোটবেলা থেকেই শুঁটকির গন্ধের সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নেওয়ার একটা গল্প থাকে। এ দেশের ঘরদোরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার হিসেবে এই শুঁটকি মাছের বহু প্রকরণ দেখা যায়, সেইসঙ্গে এর তীব্র ও বিশেষ স্বাদের জনপ্রিয়তাও কম নয়। সাধারণত ভর্তা ও তরকারির মতো রান্নাগুলোতে শুঁটকি দেওয়া হয়। তবে এই খাবারটি এখন বিশ্বদরবারে। এটি পৌঁছে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েটের পিৎজারিয়াতেও।
ডেট্রয়েটে অবস্থিত 'আমার পিৎজা' সবার দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে এর অন্যতম আকর্ষণ ও উদ্ভাবনী রেসিপি শুঁটকির পিৎজার মাধ্যমে। ভালো করে নাক সিঁটকানোর আগেই যেন শুঁটকি অতিক্রম করে ফেলল বাংলাদেশিদের সীমারেখা! পিৎজার মতো জনপ্রিয় একটি খাবারে শুঁটকি যোগ করার মাধ্যমে এই পিৎজার দোকানটি যুক্তরাষ্ট্রের 'নিউ ইয়র্ক টাইমস বেস্ট পিৎজাস ইন দ্য ইউএস' তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
শুঁটকি পিৎজার গল্পটা যেন বহু বছর ধরে চলে আসা সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও রন্ধনশৈলীর উদ্ভাবনের কথাই বলে। কীভাবে ঐতিহ্যবাহী স্বাদগুলো স্থানভেদে, মানুষ ও সংস্কৃতিভেদে নতুন নতুনভাবে প্রকাশ পায়, মানুষের কাছে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে নন্দিত হয়– তারই একটি বড় উদাহরণ এই খাবারটিও। যারা শুঁটকি একেবারেই পছন্দ করেন না, তারা বাদে সব বাংলাদেশিই দেশের বাইরে ঘরের স্বাদ পেয়ে এই শুঁটকি পিৎজাকে আপন করে নিয়েছেন।
শুধু কি রান্নায় নতুনত্ব? শুঁটকি পিৎজার এই সাফল্য তো সব উৎসাহী রাঁধুনি এবং খাদ্যপ্রেমীদের জন্যই একটি নতুন মাত্রা নিয়ে এসেছে। এতে করে ঐতিহ্যবাহী, প্রথাগত রান্নার উপাদান থেকেও যে একেবারেই নতুন কোনো খাবার তৈরি করা যায়, তাই যেন আরেকবার প্রমাণ হলো।
শুঁটকির বৈশ্বিক জনপ্রিয়তা একইসঙ্গে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশি পণ্য ও রন্ধনপ্রণালীর জন্য সম্ভাবনার বিশাল সব দুয়ার খুলে দিচ্ছে। শুঁটকি পিৎজার গল্প আমাদের আরও একবার জানান দেয়, পুরোনো ও নতুন, ঐতিহ্য ও উদ্ভাবন চাইলেই হাতে হাত মিলিয়ে একসঙ্গে থাকতে পারে।
অনুবাদ করেছেন অনিন্দিতা চৌধুরী
Comments