লারাকে দেওয়া কথা রেখেছেন রশিদ
'সেমিফাইনালে গিয়ে কেমন লাগছে?' অনুমিতভাবে ম্যাচশেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রথমেই রশিদ খানের কাছে অনুভূতি জানতে চান ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল। কয়েক লাইন উত্তর দিয়ে এরপর নিজ থেকেই আফগানিস্তান অধিনায়ক টেনে আনেন ব্রায়ান লারার কথা। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে নিজের চার সেমিফাইনালিস্টের নাম বলেছিলেন তিনি। সেখানে আফগানিস্তানকে রেখে চমকই দিয়েছিলেন। এমন ভবিষ্যদ্বাণীর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই কিংবদন্তিকে এক প্রকার কথাই দিয়েছিলেন উচ্ছ্বসিত রশিদ, তার দল নিরাশ করবে না লারাকে।
মঙ্গলবার সেন্ট ভিনসেন্টে বাংলাদেশকে ডিএলএস পদ্ধতিতে ৮ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিতে উঠেছে আফগানরা। এরপর তারকা লেগ স্পিনার রশিদ জানান, 'সেমিফাইনালে যেতে পারা আমাদের জন্য স্বপ্ন। যেভাবে আমরা এই টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলাম, নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর বিশ্বাস এসেছিল। এটা অবিশ্বাস্য। একমাত্র মানুষ যে আমাদের সেমিফাইনালে (ওঠার দৌড়ে) রেখেছিলেন, তিনি ব্রায়ান লারা। আমরা তাকে সঠিক প্রমাণ করেছি। আমাদের যখন একটি অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল, আমি তাকে বলেছিলাম যে, তোমাকে আমরা নিরাশ করব না।'
নিউজিল্যান্ড এর আগের দশ বছরের মধ্যে কোনো বিশ্বকাপে থামেনি সেমিফাইনালের আগে। বড় বড় টি-টোয়েন্টির তারকা নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রস্তুত ঘরের মাঠে। এই দুই দুলের গ্রুপ থেকে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় পর্বে ওঠাই যথেষ্ট কষ্টসাধ্য ভাববেন যে কেউ। তার ওপর সুপার এইটও পেরিয়ে সেমিতে যাওয়া! কিন্তু আফগানদের নিয়ে স্বপ্ন দেখার সাহস করেছিলেন লারা।
লারার চোখে আরও দুই সেমিফাইনালিস্ট ছিল ভারত ও ইংল্যান্ড। এই দুটি দলও তার সম্ভাবনা সত্যি করেছে। তবে পারেনি রভম্যান পাওয়েলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অর্থাৎ তার বলে দেওয়া চার দলের তিনটিই গেছে সেমিতে। এর মধ্যে আফগানিস্তানকে নিয়ে করা ভবিষ্যদ্বাণী মিলে যাওয়াতেই বোধহয় তার সবচেয়ে বেশি আনন্দ হবে!
এদিন ব্যাট হাতে ১০ বলে ১৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ ক্যামিও খেলে ১১৫ রানের সংগ্রহ গড়তে সাহায্য করেন রশিদ। এরপর বল হাতে ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অবদান রাখেন বাংলাদেশকে ১০৫ রানে অলআউট করে দিতে। শেষ চারে জায়গা করার আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়া রশিদ বলেন, 'আমরা আফগানিস্তানে মানুষদের খুশি করতে চেয়েছি। এটাই আলোচনা করেছিলাম আমরা এবং সবাই দারুণ কাজ করেছে। আফগানিস্তানে বিশাল উদযাপন হবে। (সেমিফাইনালে যাওয়া) আমাদের জন্য বড় অর্জন। আমরা অতীতে এটা অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে করেছি। কিন্তু এই বিশ্বকাপে, আমার কাছে আফগানিস্তানের লোকজনের অনুভূতি ব্যাখ্যা করতে পারার মতো কোনো শব্দ নেই।'
২০২২ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পা রেখেছিল আফগানিস্তান। আফগান যুবারা সেমিতে আটকে গেলেও রশিদের দল ফাইনালের মঞ্চেই জায়গা করতে চাইবে। আগামী ২৭ জুন বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ছয়টায় তারা প্রথম সেমফাইনালে মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকার।
Comments