দেশের মানুষকে কষ্ট দিয়েছি, দলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি: শান্ত
বোলারদের সৌজন্যে সেমিফাইনালে ওঠার সুযোগ তৈরি হলো বাংলাদেশের। কিন্তু আরও একবার ব্যাটিং ব্যর্থতার মঞ্চায়নের সঙ্গে প্রশ্নবিদ্ধ কৌশল ও ব্যাটিং অর্ডার মিলিয়ে আশা জাগিয়ে ডুবল তরী। ইতিহাসগড়া আফগানিস্তানের কাছে এমন হতাশাজনক হার দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ করার পর টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ক্ষমা প্রার্থনা করলেন দেশবাসীর কাছে।
মঙ্গলবার সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভেল স্টেডিয়ামে থেমেছে এবারের আসরে বাংলাদেশের যাত্রা। কোয়ার্টার ফাইনালে রূপ নেওয়া সুপার এইটের বৃষ্টিবিঘ্নিত লড়াইয়ে ডিএলএস পদ্ধতিতে তাদের বিপক্ষে ৮ রানে জিতেছে আফগানরা। এতে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিতে ওঠার গৌরব অর্জন করেছে রশিদ খানের দল। আফগানিস্তানের জয়ে ছিটকে গেছে অস্ট্রেলিয়াও।
রান তাড়ায় ১২.১ ওভারে জিতলে সেমিফাইনালে উঠত বাংলাদেশ। এমন অবস্থায় শুরু থেকে তাড়না দেখান লিটন দাস। কিন্তু আরেক পাশে পড়তে থাকে একের পর এক উইকেট। কোনো রান না করেই আউট হন তানজিদ হাসান তামিম। অধিনায়ক শান্ত টিকতে পারেননি। সাকিব আল হাসান ফেরেন গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ নিয়ে। তাওহিদ হৃদয়ের অল্প সময়ের ঝলকের আগে বিদায় নেন সৌম্য সরকার। এরপর সেমির টিকিট পেতে ১৯ বলে ৪৩ রানের চাহিদা যখন ছিল, তখন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ খেলেন মন্থর ইনিংস। শেষমেশ সমীকরণ মেলানো তো দূরে থাক, অলআউট হয়ে হেরেই বসে বাংলাদেশ।
গ্রুপ পর্বে চার ম্যাচ খেলে তিনটিতে জয়ে পেলেও সুপার এইটে প্রতিটি ম্যাচই জিততে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। হেরেছে তিনটিতেই। আসরজুড়ে তাদের ব্যাটিংয়ের ছিল ভীষণ করুণ দশা। বিদায় নিশ্চিত হওয়ার পর সেদিকে ইঙ্গিত করে শান্ত স্পষ্ট সুরেই ক্ষমা চান সংবাদ সম্মেলনে, 'বিশ্বকাপের পুরো যাত্রা সম্পর্কে বলব, আমরা দল হিসেবে বাংলাদেশের সব সমর্থককে হতাশ করেছি। যারা আমাদের খেলা অনুসরণ করেন, সব সময় অনুসরণ করেন, তাদেরকে হতাশ করেছি। তো আমি দলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি।'
'আমরা ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে দেশের মানুষকে ভালো কিছু দিতে পারিনি। এটার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। সামনের দিকে আমাদের এটাই চেষ্টা থাকবে, কীভাবে এখান থেকে বের হয়ে আসতে পারি।'
সমর্থনের যোগ্য প্রতিদান দিতে না পারলেও তাদের দিক থেকে চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না বলে জানান বাংলাদেশের দলনেতা, 'ইতিবাচক দিক অবশ্যই বোলাররা খুবই ভালো বোলিং করেছে। রিশাদ (হোসেন) এরকম একটা প্রতিযোগিতায় এসে সবগুলা ম্যাচে ভালো বোলিং করেছে। তো বেশ কিছু ইতিবাচক দিকও ছিল। তবে ব্যাটিংয়ের দিক থেকে আমরা সমর্থকদের হতাশ করেছি। দেশের মানুষকে আমরা বলতে গেলে কষ্ট দিয়েছি। তবে এটাও আমি বলতে চাই, চেষ্টার কমতি ছিল না। শতভাগ দিয়ে সবাই চেষ্টা করেছে। সবাই নিজের কাজে সৎ ছিল। তবে দিন শেষে আমরা পারিনি। তাই এটার জন্য দলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি।'
এদিন কিছুটা মন্থর পিচে টস জিতে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১১৫ রান করতে পারে আফগানিস্তান। জবাবে বৃষ্টির বাগড়ায় এক পর্যায়ে ১৯ ওভারে ১১৪ রানে নেমে আসা লক্ষ্যের পেছনে ছুটে ১০৫ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। তখনও বাকি ছিল ৭ বল। এক প্রান্ত আগলে ৪৯ বলে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করে অপরাজিত থাকেন ওপেনার লিটন।
Comments