তিস্তার পানি কমলেও, এখনও বিপৎসীমার ওপরে

তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুর ও কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ছবি গতকাল তোলা। ছবি: স্টার

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় কমলেও এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৩২ সেন্টিমিটার পানি কমে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার প্রায় ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান রংপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে, ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা প্রায় ছুঁইছুঁই।

গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নদীর পানি অনেকটা কমেছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

এদিকে, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে আছে গত  দুই দিন ধরে। ভারতের উজানে মুষলধারে বৃষ্টির ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানির স্তর বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যায়।

ইতোমধ্যে উপজেলার প্রায় ১০টি গ্রাম আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও খেতের ফসল। 

এছাড়া তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে উপজেলার ১১টি চরাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও বর্তমানে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত।

আকস্মিক এই বন্যায় বিশেষ করে বালাপাড়া ও ঢেপামধুপুর ইউনিয়নের বন্যাকবলিত গ্রামগুলোর অনেক বাসিন্দা তাদের পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে অনেক ঘরবাড়ি। ঢেপামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, আকস্মিক বন্যায় অনেক পরিবার গবাদি পশু নিয়ে বিপদে পড়েছেন।

তলিয়ে গেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ফসলি জমিও।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে সুপেয় পানির তীব্র সংকটে উদ্বেগ প্রকাশ করে চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত অনেক বাসিন্দার কাছে এখনো ত্রাণ তৎপরতা পৌঁছায়নি।

কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক আজ শনিবার দ্য ডেইলি স্টারকে ফোনে জানান গত ২৪ ঘণ্টায় পানি অনেকটা কমে যাওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তিনি আজও ঢেপামধুপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখেছেন। জেলা প্রশাসক অফিস থেকে প্রায় ২০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত বলে জানান তিনি।

চলমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ও দেশের উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকায় তিস্তা, দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানি আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী এলাকার কিছু এলাকায় বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে গতকাল শুক্রবার।  অন্যদিকে, রংপুরে স্বল্প সময়ের জন্য বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

1h ago