সিলেট বিভাগ: নদীর পানি কোথাও কমছে কোথাও বাড়ছে, দুর্ভোগ অব্যাহত

সিলেট নগরীর বন্যা পরিস্থিতি। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় সিলেটের নদ-নদীর পানি উজানে কিছুটা কমেছে। তবে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ভাটি এলাকায় দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।

প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গত ৩০ মে প্রথম ধাপের বন্যার ধকল না কাটতেই ১৭ জুন থেকে আবারও প্রবল বন্যা দেখা দেয় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায়।

ভারতের মেঘালয় ও আসামে এবং বাংলাদেশের সিলেট বিভাগে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলাতেও।

চার জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বিভাগে অন্তত ১৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। আর আশ্রয়কেন্দ্রে গতকাল বুধবার পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন অন্তত ৩০ হাজার মানুষ।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, সিলেটে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট উপজেলায় বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্লাবিত হচ্ছে, যা গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১৬ সেন্টিমিটার কম।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দুই নম্বর ইসলামপুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বন্যা পরিস্থিতি। ছবি: সংগৃহীত

এ নদীর পানি সিলেট নগরে আট সেন্টিমিটার কমে ২৯ সেন্টিমিটার ওপরে, সুনামগঞ্জের ছাতকে ১৪ সেন্টিমিটার কমে ১২৯ সেন্টিমিটার, সুনামগঞ্জ শহরে ১৭ সেন্টিমিটার কমে ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে এই নদীর পানি ভাটিতে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় তিন সেন্টিমিটার বেড়ে ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি সিলেটের জকিগঞ্জের অমলশীদে ২৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা গত সন্ধ্যায় ছিল ৬২ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারা সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওয়া পয়েন্টে গত সন্ধ্যায় বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ নদীর পানি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে মাত্র এক সেন্টিমিটার বেড়ে ১০১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে বিপৎসীমার নিচে নেমেছে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সারিগোয়াইন নদী।

এদিকে বুধবার সারাদিন এবং রাতে সিলেট নগরীতে তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নগরীর জলাবদ্ধ বিভিন্ন এলাকা থেকে নেমেছে পানি। তবে এখনো জলাবদ্ধ রয়েছে শাহজালাল উপশহর, যতরপুর, মীরাবাজার, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, তোপখানা, বেতেরবাজার, তালতলা, জামতলা, মাছুদীঘিরপাড় ও মণিপুরি রাজবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকা।

সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার মহনপুর সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

বন্যার কারণে সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও কোম্পানীগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে দুর্ভোগ বাড়ছে বন্যাকবলিত মানুষের।

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় সুরমা নদীরক্ষা বাঁধের ১৮ স্থান ভেঙে গিয়ে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এ ছাড়াও মৌলভীবাজার ধলাই নদীরক্ষা বাঁধের একটি অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে, প্লাবিত হয়েছে কমলগঞ্জের ৪০টি গ্রাম।

বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ঈদের পর ছুটি শেষে সব ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ২৩ জুন থেকে ক্লাস অনলাইনে শুরু হলেও দাপ্তরিক কার্যক্রম যথারীতি চলবে বলে জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Those involved in Ijtema ground deaths won't be spared: home adviser

He also said that those who are involved with the killings must be brought to book.

49m ago