‘একপক্ষ থেকে গুলি আসছে, সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ, এটা তো সত্য’

ঈদের নামাজ আদায় শেষে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দ্রব্যমূল্যের দাম যেভাবে বেড়েছে এতে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ঈদুল আজহাকে ঘিরে আনন্দ উপলব্ধি অথবা উপভোগের সুযোগ থাকছে না।    

আজ সোমবার সকালে ঈদের নামাজ আদায় শেষে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঈদুল আজহা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে দুর্নীতি যেভাবে ব্যধি হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে, আমরা আশা করি ঈদুল আজহার ত্যাগের মধ্য দিয়ে যারা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত আছেন তারা দুর্নীতি ত্যাগ করবেন, সকল অশুভ আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করবেন এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন।' 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এখন ঈদুল আজহা উদযাপন মানুষের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। যারা পশু কোরবানি দেয় তারা মূল্যস্ফীতিতে আক্রান্ত হয়েছে। সাধারণ মানুষ যারা কোরবানি দেয় না কিন্তু বিভিন্নভাবে মাংস সংগ্রহ করে, তাদের পক্ষে মাংস রান্নার উপকরণ কেনাই কষ্টকর। দ্রব্যমূল্য যেভাবে বেড়েছে ঈদুল আজহা উদযাপন তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।'     

'সেন্টমার্টিন নিয়ে বিএনপি গুজব ছড়াচ্ছে' আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথার জবাব দিতে আমার রুচিতে বাঁধে। যারা রাজনীতি করছেন, ক্ষমতায় আছেন তারা যদি সত্যকে উপলব্ধি না করেন, দেশের সমস্যাগুলোকে বুঝতে না পারেন, গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে না পারেন তাহলে তারা কীভাবে শাসক হবেন।'

'আমরা দেখছি, গত প্রায় দেড় যুগ ধরে দখলদার আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সব আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করে জোড় করে তাদের শাসন চাপিয়ে দিয়েছে। সুতরাং তাদের কথার উত্তর দিতে আমাদের ইচ্ছে করে না এজন্য যে, জনগণ এখন আর তাদের পছন্দ করে না। তারা এতটুকু উপলব্ধি করে না জনগণ এখন তাদের ঘৃণা করতে শুরু করেছে। তারা শুধু মিথ্যা কথা বলে, প্রতারণা করে, জোড় করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। সুতরাং আমি সেগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেই না', বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'সেন্টমার্টিনের বিষয়টি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যাই বলুক না কেন, এটা তো সত্য সেখানে গোলাগুলি হচ্ছে, শুধু গোলাগুলি হচ্ছে না একপক্ষ থেকে গুলি আসছে এবং টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এটাই বাস্তবতা, এখন বাস্তবতা তারা অস্বীকার করবে কী করে।'

'কেন বিজিবির প্রধান যাচ্ছেন বার বার, কেন সেনাবাহিনীর প্রধান বলছেন- আমরা সতর্ক আছি। যেখানে ওবায়দুল কাদেরও বলছেন, আমরা সতর্ক আছি। তাহলে আমরা গুজব ছড়ালাম কোথায়? এটা তো বাস্তবতা সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের ঘটনাগুলির কারণে একটা সমস্যা তৈরি করেছে। সেই সমস্যার কারণে সেন্টমার্টিনে জাহাজ যেতে পারছে না, খাদ্য যেতে পারছে না', বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'সেখানকার বাসিন্দারা অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিন পার করছে এবং একটা নিরাপত্তার অভাববোধ করছে। সেই বিষয়টি তারা স্বীকার না করে এসব কথা বলছেন, যে কথাগুলো ভিত্তিহীন, বানোয়াট। এগুলো আমরা গুরুত্ব দেই না।'

সম্প্রতি সংলাপ সম্পর্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা কখনই আলোচনার বিরুদ্ধে নই, সংলাপেরও বিরুদ্ধে নই। কিন্তু সংলাপটা হবে কার সঙ্গে? সংলাপের উদ্যোগ নেবে কে? নির্বাচন কমিশন তো বলবে আমার কোনো ক্ষমতা নেই। এখন নির্বাচন কমিশনার সংলাপ নিয়ে কথা বললে তো হবে না, যার ক্ষমতা আছে, যারা ক্ষমতাকে দখল করেছে তাদেরকে সংলাপের বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে, কথা বলতে হবে।'

'এটা শুধু আমাদের দাবি না, দেশের ৬৩টি দলের দাবি– অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হলে একটা নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে। সে কারণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল সাহেবের প্রথম যে উদ্যোগটা নেওয়া উচিত ছিল পদত্যাগ করা। সেটা করলে সবাই খুশি হতো, তিনিও সম্মানিত বোধ করতেন এবং এই সরকারকে যদি বোঝাতে পারেন, তাহলে বুঝতে হবে হাবিবুল আউয়াল সাহেবের এই কথার মূল্য আছে।'

এসময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীনসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

7h ago