উপহারেও বসতে পারে কর
কারো কাছ থেকে উপহার পাওয়া সবসময়ই আনন্দের। তবে সেই আনন্দ আগামী অর্থবছর থেকে ফিকে হয়ে যেতে পারে। কারণ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রিয়জনের কাছ থেকে পাওয়া উপহারকে বাড়তি আয় হিসেবে বিবেচনা করবে। এর অর্থ উপহার প্রাপকের জন্য বাড়তি খরচের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কেউ উপহার পেলে বছর শেষে তা তার আয়কর রিটার্নে দেখাতে হবে। একই সঙ্গে যিনি উপহার দেবেন তাকেও তা তার আয়কর রিটার্নে জানাতে হবে।
এই কর স্বামী, স্ত্রী, বাবা-মা বা সন্তানদের জন্য উপহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। যদিও তা কর রিটার্নে উল্লেখ থাকতে হবে।
গত ৬ জুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পেশের সময় অর্থবিল ২০২৪-এ এমন বিধানের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কর ফাঁকি বন্ধ ও ব্যাংকিং চ্যানেলে অবৈধ আয়কে উপহার হিসেবে দেখানোর সুযোগ কমাতে রাজস্ব কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগ নিচ্ছে।
উপহারের সব সুবিধাভোগী প্রস্তাবিত অর্থ বিলের অধীনে কর দেওয়ার যোগ্য হবেন। অর্থাৎ, প্রাপককে যথাযথ উপায়ে আয়কর দেওয়ার পাশাপাশি উপহার দেওয়া ব্যক্তিকেও উপহারের ওপর কর দিতে হবে।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট স্নেহাশিস বড়ুয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই উদ্যোগ অবশ্যই লেনদেনের স্বচ্ছতা বাড়াতে সহায়তা করবে।'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দীন ইসলাম এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, 'এটি অভ্যন্তরীণ সম্পদ লেনদেনে ভূমিকা রাখবে। প্রত্যক্ষ কর বাড়িয়ে দেবে। এটি দেশে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে।'
তিনি মনে করেন, এই বিধান কর ফাঁকি ও অনুৎপাদনশীল খাতে খরচকে নিরুৎসাহিত করতে পারে।
করযোগ্য উপহার হলে তার ওপর কর কার্যকর করা ভালো উদ্যোগ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
'তবে, দ্বৈত কর এড়াতে এটি কেবল উপহার গ্রহীতা বা দাতার ওপর আরোপ করা উচিত। সবার ওপরে নয়,' বলে মনে করেন অধ্যাপক দীন ইসলাম।
Comments