কুষ্টিয়ায় রেলের জমি লিজ নিয়ে বিক্রি

রেলের জায়গায় নির্মিত বাড়ি। ছবি: স্টার

দেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশন কুষ্টিয়ার জগতি রেলস্টেশন থেকে পশ্চিম দিকে তাকালেই চোখে পড়ে বিস্তীর্ণ সবুজ আখের খেত। তারই এক পাশে চেঁচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ের মাঠ সংলগ্ন জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে তিন কক্ষের একটি আধাপাকা বাড়ি। 

স্থানীয়রা জানান, যে জায়গায় বাড়িটি নির্মিত হয়েছে, সেটি রেলওয়ের মালিকানাধীন জমি। রেলের কাছ থেকে দুই একর জমি লিজ নিয়ে কিছু অংশ আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে কথা হয় ওই বাড়ির মালিক সিদ্দিকের স্ত্রী আসমার সঙ্গে। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'গত রমজান মাসে স্থানীয় প্রভাবশালী ইমদাদুল হকের কাছ থেকে তিন কাঠার কিছু বেশি পরিমাণ জমি কিনেছি। প্রতি কাঠা জমির দাম পড়েছে ৮০ হাজার টাকা।'

এসময় পার্শ্ববর্তী জমির দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, 'এখানে অনেক জমিই বিক্রি হয়ে গেছে।'

আগামী ১০০ বছরের জন্য এই জমির কাগজ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন আসমা। 

তিনি বলেন, 'ইমদাদুল পাকশী থেকে কাগজপত্র করে দিয়েছেন। তবে এখনো সেই কাগজপত্র আমরা হাতে পাইনি।'

তবে ভিন্ন কথা বলেছেন ইমদাদুল হক। ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'যে জায়গায় বাড়িটি নির্মিত হয়েছে একসময় সেই জমি আমার দখলে ছিল। তবে সেটি রেলের কাছ থেকে লিজ নেওয়া দুই একর জমির মধ্যে পড়ে না। আমি জমিটি ছেড়ে দেওয়ার পর তাদের কাগজপত্র করে নিতে বলেছি। এখানে কোনো ধরনের কেনাবেচা হয়নি।'

ইমদাদুল হকের লিজ নেওয়া দুই একর জমিতে বর্তমানে চাষাবাদ করেন কুষ্টিয়া পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন বাবলু। 

ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'বাড়ির জমিটি আমার চাষের অংশেই ছিল। বাড়ির মালিক সিদ্দিক একসময় ইমদাদুলের বাড়িতে কাজ করতেন। সেই সূত্রে ইমদাদুল তাকে বাড়ি করার জন্য জমিটি দিয়েছেন। কেনাবেচার বিষয়টি জানি না।'

ভূ-সম্পত্তি বিভাগ বাংলাদেশ রেলওয়ের পোড়াদহ ফিল্ড কানুনগো মো. সহিদুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যে জমিতে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে, তার দাগ নম্বর ৩৮৫। জমিটি ভূসম্পত্তি বিভাগ বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশীর অন্তর্গত। ওই জমির দুই একর অংশের লিজ পেয়েছেন ইমদাদুল।'

'জগতি রেলস্টেশনের পাশে প্রায় ১২ একর কৃষিজমি রয়েছে রেলের। তবে সেসব জমিতে বাড়ি নির্মাণের ঘটনা এবারই প্রথম। পার্শ্ববর্তী জমিতে আমবাগান, ভুট্টা ও আখের খেত রয়েছে', বলেন তিনি।

সহিদুজ্জামান আরও বলেন, 'আধাপাকা ওই বাড়িটি রেলের জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে। এভাবে রেলের জমি কেনাবেচার কোনো সুযোগ নেই। শিগগির ওই জমিতে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হবে।'

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতিম শীল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রেলের কোনো জমিই বিক্রি করা সম্ভব না। এগুলোর কাগজপত্রও হবে না। অভিযোগ সুনির্দিষ্ট হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'    

Comments

The Daily Star  | English
us tariff impacts bangladesh synthetic shoe exports

US tariff threatens booming synthetic shoe exports

The country’s growing non-leather footwear industry now faces a major setback as a steep new tariff from the United States threatens its growth

13h ago