ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা বাংলাদেশের আইনের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে: যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। ছবি: সংগৃহীত

দুদকের করা অর্থ আত্মসাতের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় গত ২ জুন আদালতকক্ষে লোহার খাঁচায় কাঠগড়াতে দাঁড়াতে বাধ্য হন ড. ইউনূস।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারকে মঙ্গলবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিক মুশফিক ফজল আনসারী প্রশ্ন করেন, 'নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোববার আদালতকক্ষে একটি লোহার খাঁচায় কাঠগড়াতে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, তিনি তার অভিশপ্ত জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। একইভাবে, হাজারো বাংলাদেশি নাগরিকও গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের অভাবে এবং বড় আকারের দুর্নীতির মাঝে তাদের অভিশপ্ত জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।'

ম্যাথু মিলারের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, 'আমরা দেখেছি, আপনারা বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান ও পুলিশপ্রধানের বিরুদ্ধে স্যাংশন ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। আপনি কি মনে করেন, এ বছরের ৭ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত প্রহসনমূলক নির্বাচনের পর এসব উদ্যোগ এই শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য যথেষ্ট? নাকি আপনারা গণতান্ত্রিক ও গণতন্ত্রপ্রেমী বাংলাদেশি মানুষের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে পূর্ব-প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আরও কঠোর ব্যবস্থা নেবেন?'

জবাবে মিলার বলেন, 'আমরা নিবিড়ভাবে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আনা মামলার কার্যক্রমের ওপর নজর রাখছি। আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি এবং জানিয়েছি, এসব মামলা ড. ইউনূসকে হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের হাতিয়ার হিসেবে বাংলাদেশের শ্রম আইন অপব্যবহারের দৃষ্টান্ত হিসেবে বিশ্বমঞ্চে উপস্থাপিত হচ্ছে। আমরা উদ্বিগ্ন, কারণ শ্রম ও দুর্নীতি দমন আইনের অপব্যবহারের কারণে সার্বিকভাবে দেশটির আইনের শাসন পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, যার ফলে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে।'

টোকিও অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘তিন শূন্য’ নিয়ে বক্তৃতা দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, 'ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগের আপিল প্রক্রিয়া চলমান অবস্থায় আমরা বাংলাদেশি সরকারকে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিতের জন্য উৎসাহ দেওয়া অব্যাহত রাখবো। তবে এ মুহূর্তে আমরা আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছি না।'

দুদকের করা অর্থ আত্মসাতের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, 'পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নজির নেই যে, এক নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে আরেক নোবেল বিজয়ী মামলা করেছে।'

এ সময় ড. ইউনূস বলেন, 'এই প্রথম লোহার খাঁচায় কাঠগড়াতে দাঁড়াতে হলো। এটা একটা দেখার মতো দৃশ্য। এটা আমার জীবনের একটা স্মরণীয় ঘটনা যে লোহার খাঁচার ভেতরে দাঁড়িয়ে আছি আদালতের কাঠগড়ায়। এ অভিশপ্ত জীবনের একটা অংশ।'

(বিশেষ দ্রষ্টব্য: মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারকে প্রশ্ন করা সাংবাদিকের নাম ভুলবশত ভয়েস অব আমেরিকার গুইতা আরিয়ান লিখা হয়েছিল।)

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh lost over Tk 226,000cr for tax evasion: CPD

CPD estimated that around 50 percent of this amount has been lost to corporate tax evasion.

2h ago