ই-টিকিট উধাও, ঢাকায় আবারও সিটিং সার্ভিস নৈরাজ্য: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় সিটি বাসে ই-টিকিটিং সার্ভিস চালুর বছর না ঘুরতেই তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহানগরীতে যাতায়াতকারী বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা আবারও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

আজ মঙ্গলবার সংগঠনটি থেকে পাঠানো বার্তায় এ অভিযোগ করা হয়।

এতে বলা হয়, যাত্রী ও নাগরিক সমাজের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, ওয়েবিলের নামে যাত্রীদের মাথা গুণে স্বল্প দূরত্বে গেলেও অতিরিক্ত পথের ভাড়া আদায় বন্ধের লক্ষ্যে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি কর্তৃক ঢাকঢোল পিটিয়ে মহাসমারোহে ঢাকার সিটিবাসের ই-টিকিটিং সার্ভিস চালু করে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই সেই সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা মহানগরীতে যাতায়াতকারী বিভিন্ন রুটের যাত্রীসাধারণ আবারও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর শিকার হচ্ছে।

যাত্রী অধিকার সুরক্ষায় কাজ করা এই সংগঠনটির ভাষ্য, ঢাকা মহানগরীর সড়ক পরিবহনের ইতিহাসে দীর্ঘদিন পরে বাস মালিকদের পক্ষ থেকে যাত্রীবান্ধব ই-টিকিটিং প্রকল্প চালু হওয়ার পর বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিকে গণমাধ্যমে বার্তা দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়েছিল। যাত্রী কল্যাণ সমিতি মনে করেছিলেন, সরকারি-বেসরকারি নানা মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে বাস মালিক সমিতির বোধোদয় হয়েছে। তারা ধীরে ধীরে যাত্রীসেবায় মনোযোগী হবে। এতে করে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হবে। সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।

সেসময়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলেছিল, পরিবহন খাতে দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি এই খাতের আমূল সংস্কার করা না গেলে ই-টিকিটিং সিস্টেম এক সময় মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই, সবার আগে পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকের হাতে দৈনিক জমার চুক্তিতে বাস ইজারা দেওয়া বন্ধ করা জরুরি। এছাড়াও বাস ভাড়া নির্ধারণের শর্তানুযায়ী চালক-সহকারীর বেতন ও ঈদ বোনাস দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি পরিবহন পরিচালনার ক্ষেত্রে নানান অদৃশ্য খরচ বন্ধে সড়কে সিসি ক্যামেরা পদ্ধতিতে ট্রাফিক প্রসিকিউশন সিস্টেম চালু করার দাবি জানানো হয়।

দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যার সমাধান না করে যেকোনো বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত সংস্কার কোনো সময় এই খাতে টেকসই হবে না বলেও যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল। কিন্তু সরকার বা বাস মালিক সমিতির কেউ এসব বিষয়ে কর্ণপাত না করায় এই ধরনের একটি যাত্রীবান্ধব প্রকল্পের অপমৃত্যু ঘটতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এই যাত্রী অধিকার সংগঠনটির।

বিবৃতি আরও বলা হয়, বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতায় পরিবহন খাতের বড় বড় মেগা প্রকল্প, বিশেষ করে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, জাতীয় মহাসড়কের চার লেন ছয় লেনে উন্নীতকরণ, বড় বড় সড়ক সেতু নির্মাণ, যাবতীয় উন্নয়ন, অর্জন, দৃশ্যমান করার মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার লক্ষ্যে ঢাকার গণপরিবহনে আমূল সংস্কার করে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানায় সংগঠনটি। একইসঙ্গে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় যাবতীয় পুরোনো বাস চলাচল বন্ধ করে সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আধুনিক উন্নত স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানায় সংগঠনটি। এ ছাড়াও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে গণপরিবহনে নগদ অর্থ লেনদেন বন্ধ করে স্মার্ট কার্ডে ভাড়া আদায় নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Govt decides to ban AL until completion of ICT trial

Law Adviser Prof Asif Nazrul said this at a press briefing after a special meeting of the advisory council tonight

26m ago