যশোরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু, ‘নির্যাতনে হত্যার’ অভিযোগ পরিবারের

মৃত আফরোজা বেগম। ছবি: সংগৃহীত

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় পুলিশ হেফাজতে এক নারীর মৃত্যুর হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ তাকে ইয়াবা দিয়ে আটকের পর টাকা না পেয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে।

মৃত আফরোজা বেগম অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের জলিল মোল্যার স্ত্রী। রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। 

আফরোজা বেগমের ছোট ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির মোল্যা দ্য ডেইলি স্টারকে বলে, 'গতকাল রাত ১২টার দিকে আম্মু বাড়ির পাশে টিউবওয়েলে পানি আনতে যায়। সেসময় বাড়িতে পাঁচজন পুলিশ আসে। অভয়নগর থানার এএসআই সিলন আলী আম্মুকে বলে, তোর কাছে যা আছে বের করে দে। আম্মু তার কাছে কিছু নেই জানালে সিলন আলী একজন নারী পুলিশ দিয়ে তার দেহ তল্লাশি করেও কিছু পায়নি। পরে সিলন আলী আম্মুকে বেধড়ক মারধর করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আমার সামনে আম্মুর চুল ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।'
 
মৃত আফরোজা বেগমের বড় ছেলে ইজিবাইক চালক মুন্না মোল্যা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রামের একটি মহলের ইন্ধনে অভয়নগর থানার এসআই সিলন ও শামছু গতরাত ১২টার দিকে আমাদের বাড়িতে আসে। পরে নিজেদের কাছে থাকা ইয়াবা দিয়ে মাকে আটক দেখায়।'

তিনি জানান, সিলনসহ কয়েকজন পুলিশ তার মাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারধর করে। পরে রাত ১টার দিকে থানায় নিয়ে যায়। 

মুন্না জানান, রোববার সকালে থানায় গিয়ে দেখেন তার মা খুব অসুস্থ। পরে পুলিশকে অনুরোধ করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা কয়েকটি টেস্ট দিলেও পুলিশ সদস্যরা সেগুলো করতে না দিয়ে তাকে ফের থানায় নিয়ে যায়। আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মায়ের মৃত্যু হয়।

মুন্না আরও অভিযোগ করেন, পুলিশ দুই লাখ টাকা ঘুষের দাবিতে তার মাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। 

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসিব মো. আলী হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাসপাতালে আনার আগেই আফরোজা বেগম মারা গেছেন। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই বলা যাবে তার মৃত্যুর কারণ।'

রোববার সকালে আফরোজা বেগমের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। 

যশোর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অভয়নগর সার্কেল) জাহিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মাদকসহ আটক ওই নারী হৃদরোগে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন।' 

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আফরোজা বেগমকে গতকাল রাত দেড়টার দিকে ৩০টি ইয়াবাসহ আটক করা হয়। রাতে তাকে নারী থানা হাজতে রাখা হয়। তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।'

ওসি আরও বলেন, 'আফরোজা বেগম সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। তিনি হাই ব্লাড প্রেসারের রোগী ছিলেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands. 

2h ago