ভারতে অস্ত্র চোরাকারবারির রুট আমরা বন্ধ করেছি: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সরকারে এসে ভারতে অস্ত্র চোরাকারবারির রুট বন্ধ করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শনিবার সকালে বঙ্গবাজারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেনের বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
গণতন্ত্রের জন্য আওয়ামী লীগ লড়াই করেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদেরই মানুষ জীবন দিয়েছে এবং গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। ২০০৮-এ নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩টি সিট পেয়েছিল ৩০০ সিটের মধ্যে। আর বিএনপি, তাদের ২০ দলীয় জোট জামায়াতসহ সিট পেয়েছিল মাত্র ৩০টি। এরপর থেকে তারা নির্বাচন বিমুখ।'
তিনি বলেন, 'নির্বাচন ঠেকাও, নির্বাচন বন্ধ করো আর এই দেশটাকে তারা কোথায় নিয়ে গিয়েছিল! সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ, অস্ত্র চোরাকারবারি; ওই তারেক জিয়া তো অস্ত্র চোরাকারবার মামলায় সাজা প্রাপ্ত আসামি। ওখানে (লন্ডনে) বসে এখন নানাভাবে ওই অগ্নি সন্ত্রাস দিয়ে মানুষ মারা, মানুষ খুন করা, আগুন দিয়ে মানুষকে পড়ানো এসব কাজ করে বেড়ায়।
'আওয়ামী লীগ সরকার এসে এই বাংলাদেশে অস্ত্র চোরাকারবারির যে রুট, সেটা আমরা বন্ধ করেছি। ভারতে উলফা থেকে শুরু করে যেখানে যেখানে যারা অস্ত্র সাপ্লাই দিতো, সেগুলো আমরা বন্ধ করেছি। তাদেরও যাতে শান্তি আসে তাদের ওই সেভেন সিস্টারে—সেই ব্যবস্থাটা কিন্তু আওয়ামী লীগ করেছে। এটা সব থেকে বড় কাজ,' বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'এছাড়া আমাদের যে ল্যান্ড বাউন্ডারি (ছিটমহল) সেটাও বিনিময় করে সারা বিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। বিশাল সমুদ্র সীমা আমরা জয় করেছি। যারা আগে ক্ষমতা ছিল তারা তো এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগই নেয়নি; জানতোই না! আসছিল লুটপাট করতে, দুর্নীতি করতে, অস্ত্র চোরাকারবারি করতে, সেটাতেই ব্যস্ত ছিল; আর মানুষ খুন করতে। ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা থেকে শুরু করে, যত রকমের মানুষ খুন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার, ধরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার, দিনের পর তিনি অত্যাচারই করতে পেরেছে।'
বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'যে বস্তিতে যে ভাড়ায় থাকে, সে রকমই ভাড়া দিতে হবে কিন্তু থাকবে তারা ফ্ল্যাটে। শুধু বড়লোকরা ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা তো হতে পারে না! আমার ওই রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুরও ফ্ল্যাটে থাকবে। স্বল্প ভাড়া, কেউ যদি প্রতিদিনের ভাড়া দিতে চায়, সে ব্যবস্থা আছে। কেউ যদি সাত দিনে ভাড়া দিতে চায় সে ব্যবস্থা হবে, কেউ যদি মাসে ভাড়া দিতে চায় সে ব্যবস্থাও হবে। সেভাবে ইতোমধ্যে আমরা ৩০০ পরিবার তুলেছি। আস্তে আস্তে ঢাকায় কাঁচা বস্তি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকবে না। সুন্দর পরিবেশে সবাই বসবাস করবে। সেইভাবে করে দেবো, সেই পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। মানুষের কল্যাণে কাজ করা, এটাই আমাদের লক্ষ্য।'
ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে ঘর করে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ঢাকা শহরে বস্তিবাসী অনেকেই নানা কারণে এখানে বস্তিতে আসে। কেউ যদি নিজের জায়গায় ফিরে যেতে চায়, যদি তার নিজের ভিটামাটি থাকে সেখানে বিনা পয়সা ঘর তৈরি করে দেবো। তাকে ঋণের ব্যবস্থা করব। জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেবো। ছেলে-মেয়েদের পড়ার ব্যবস্থা করে দেবো।
'যার কিছু নেই, তার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর তৈরি করে দেবো। শহরের এই কষ্টকর জীবন না পালন করে নিজের বাড়িতে ফিরে যেতে পারবে এবং সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে; ঘরে ফেরা কর্মসূচি নিয়েছি, সেটা আমরা করব,' বলেন প্রধানমন্ত্রী।
Comments