লুকমানের হ্যাটট্রিকে লেভারকুসেনের স্বপ্নযাত্রা থামিয়ে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন আতালান্তা
অবশেষে থামল চলতি মৌসুমের শুরু থেকে বায়ার লেভারকুসেনের টানা ৫১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার স্বপ্নযাত্রা। প্রথমার্ধেই খেই হারিয়ে ফেলা জার্মান বুন্ডেসলিগার শিরোপাধারীরা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারল না। তাদের বিপক্ষে রীতিমতো উজ্জীবিত পারফরম্যান্স উপহার দিল আতালান্তা। অ্যাডেমোলা লুকমান অসাধারণ হ্যাটট্রিক করে কেড়ে নিলেন সব আলো। তার নৈপুণ্যে একাধিক রেকর্ড গড়ে উয়েফা ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন হলো ইতালিয়ান ক্লাবটি।
বুধবার রাতে ডাবলিনের আভিভা স্টেডিয়ামে আসরের ফাইনালে লেভারকুসেনকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আতালান্তা। প্রথমার্ধে জোড়া লক্ষ্যভেদের পর দ্বিতীয়ার্ধে আরেকবার জাল কাঁপিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড লুকমান।
প্রথমবারের মতো ইউরোপা লিগ জয়ের উৎসবে মাতল আতালান্তা। ২০০৯-১০ মৌসুমে ইউরোপা লিগ (এর আগে পরিচিত ছিল উয়েফা কাপ হিসেবে) নামকরণ হওয়ার পর থেকে এই প্রতিযোগিতায় এটাই কোনো ইতালিয়ান ক্লাবের প্রথম শিরোপা। শুধু তাই নয়, নিজেদের ১১৬ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো ইউরোপিয়ান ক্লাব প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হলো আতালান্তা। দীর্ঘ পথচলায় এর আগে কেবল একটি ঘরোয়া শিরোপাই ছিল তাদের ঝুলিতে। ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে কোপা ইতালিয়ার শিরোপা জিতেছিল তারা। অর্থাৎ ছয় দশকের শিরোপাখরা ঘোচাল দলটি।
ইউরোপা লিগের ফাইনালে হ্যাটট্রিকের মধুর স্বাদ নিয়ে অনন্য কীর্তি গড়লেন লুকমান। তার আগে এই মঞ্চে কেউ করে দেখাতে পারেননি এমন অসাধারণ কিছু। চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, ২৬ বছর বয়সী উইঙ্গারের ক্যারিয়ারে প্রথম হ্যাটট্রিকও এটি।
ফাইনালে ফেভারিট হিসেবে খেলতে নেমেছিল কোচ জাবি আলোনসোর লেভারকুসেনই। তবে এবারের মৌসুমে স্মরণীয় পথচলায় নানান কীর্তি গড়া দলটি দেখাতে পারেনি চেনা ছন্দ। রক্ষণে তালগোল পাকিয়ে ফেলার পাশাপাশি আক্রমণেও তারা ছিল বিবর্ণ। ফলে গোটা ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকাটা কোনো কাজে আসেনি তাদের। উল্টো পাল্টা আক্রমণ নির্ভর কৌশল বেছে নিয়ে লেভারকুসেনের অভেদ্য দুর্গ তছনছ করে দেয় জান পিয়েরো গাসপেরিনির শিষ্যরা।
ম্যাচের ১২তম মিনিটে দারুণ এক আক্রমণ থেকে দাভিদ জাপাকোস্তার পাসে বল পেয়ে দুর্দান্ত শটে আতালান্তাকে এগিয়ে দেন লুকমান। ব্যবধান বাড়াতেও বেশি সময় ব্যয় করেননি তিনি। ২৬তম মিনিটে লেভারকুসেনের ডি-বক্সের কাছে বল দখলে নেন। এরপর একজনকে কাটিয়ে কোণাকুণি শটে গোল করেন। তারপরও অতীত পরিসংখ্যান স্মরণ করে আতালান্তার স্বস্তিতে থাকার উপায় ছিল না। কারণ চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এর আগেও চারবার দুই গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে হার এড়িয়েছিল লেভারকুসেন।
এদিন অবশ্য সেরকম কিছুর পুনরাবৃত্তি ঘটানোর পরিস্থিতি আলোনসোর শিষ্যদের তৈরি করতে দেয়নি আতালান্তা। বরং ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে বলা চলে সমস্ত জল্পনা-কল্পনার ইতি টেনে দেন লুকমান। জানলুকা স্কামাকার পাসে দর্শনীয় গোলে হ্যাটট্রিক স্পর্শ করেন তিনি।
Comments