নূরজাহান মুরশিদের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

তিনি ছিলেন একাধারে সাংবাদিক, শিক্ষক ও নারী জাগরণের অগ্রদূত।
জন্মবার্ষিকী উদযাপনে প্রদীপ জ্বালাচ্ছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা, ছবি /উত্তরসূরী

বাঙালী নারী জাগরণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব নূরজাহান মুর্শিদের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন বুধবার (২২ মে) হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে উত্তরসূরী শিরোনামের একটি সংগঠন।

সকালে বাংলা একাডেমিতে কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এক স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মূল আলোচনা করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক হাসিবুর রহমান। দ্বিতীয় বক্তা ছিলেন মুর্শিদাবাদ ইতিহাস চর্চাকেন্দ্রের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। উত্তরসূরীর মহাসচিব শারমিন মুরশিদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা।

নূরজাহান মুরশিদ ১৯২৪ সালের ২৪ মে মুর্শিদাবাদ জেলার তারানগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে সাংবাদিক, শিক্ষক ও নারী জাগরণের অগ্রদূত। তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে তৎকালীন পাকিস্তানে আইয়ুবের সামরিক শাসনবিরোধী রাজনৈতিক অভিযাত্রায়, সংগ্রামে, আন্দোলনে এবং মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন সক্রিয়ভাবে।

উত্তরসূরীর মহাসচিব শারমিন মুরশিদের সঞ্চালনায় নূরজাহান মুরশিদের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন, ছবি/ উত্তরসূরী

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন লড়াই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে যখন ছিল স্বীকৃতির আনুষ্ঠানিক প্রয়োজন, তখন ভারতের লোক ও রাজ্যসভার যৌথ অধিবেশনে মুজিবনগর সরকারের বিশেষ দূত এবং নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে  ঐতিহাসিক এক ভাষণ প্রদান করেছিলেন, ফলে ভারতের স্বীকৃতি এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা ত্বরান্বিত হয়েছিল। এতে তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে পাকিস্তানের সামরিক জান্তা তাকে নিরুদ্দেশ অবস্থাতেই ১৪ বছরের কারাদন্ডে দণ্ডিত করে।

অন্যদিকে তিনি ১৯৫৪ সালে 'যুক্তফ্রন্টের' প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ আসন থেকে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য পদে জয়লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৮-৬৯ সালের গণ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন এবং নির্বাচন পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

নূরজাহান মুরশিদ বাংলাদেশ মহিলা সমিতির প্রথম সভাপতি ছিলেন। 'একাল' নামে তিনি একটি বাংলা সাময়িকী চালু করেছিলেন। প্রকাশনাটি দীর্ঘস্থায়ী ছিল না তবে 'এদেশ-একাল' নামে সাময়িকীটির নতুনভাবে প্রকাশ বেশ কয়েক বছর অব্যাহত ছিল।

এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভার একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

Comments