মোদিনোমিক্সের মায়া-বাস্তবতা

ভারতের অর্থনীতি
নরেন্দ্র মোদি। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

দিল্লির রাস্তায় 'স্কার্ট-প্লাজো' বিক্রি করেন ম্যানুফেকচারিং ডিপ্লোমায় স্নাতক কুলদীপ যাদব। গত কয়েক বছর চাকরি খুঁজে ব্যর্থ হয়ে শেষমেশ জীবনধারণের জন্য এই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি।

তার মতো আরও অনেক শিক্ষিত তরুণ শুধু দিল্লি নয়, দেশটির অন্যান্য ছোট-বড় শহরে হকারের কাজ করেন। বলা বাহুল্য, শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন কাজে কুলদীপ মোটেও খুশি নন।

একটি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তরুণদের ওপর। তাই তার প্রশ্ন, 'তরুণরাই যদি গভীর হতাশায় ডুবে থাকে তাহলে দেশের অর্থনীতি এগোয় কীভাবে?'

গত ৭ মে ভারতে চলমান জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে যখন এই সংবাদ প্রচার করে, তার দিন দশেক আগেই দ্য জাপান টাইমস জানিয়ে দেয়, আগামী ২০২৫ সালে জাপানের জিডিপিকে ছাড়িয়ে যাবে ভারতের জিডিপি।

এক সময়ে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতির দেশ জাপানের অবস্থান এখন ক্রমাগত নিচের দিকে। বর্তমানে চতুর্থ অবস্থানে থাকা সূর্যোদয়ের দেশটি আগামী বছর আরও এক ধাপ পিছিয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

ধারণা করা হচ্ছে—আগামী বছর জাপানের জিডিপি হবে চার দশমিক ৩১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, ভারতের জিডিপি হবে চার দশমিক ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানি মুদ্রা ইয়েনের দরপতনের কারণে আইএমএফের পূর্বাভাসের এক বছর আগেই ভারতের জিডিপি জাপানকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস সঠিক হলে আগামী বছর জাপানের অর্থনীতি হবে বিশ্বের পঞ্চম। গত বছর জাপানকে এক ধাপ পিছিয়ে দিয়ে জার্মানি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের তকমা পায়। জাপান চলে আসে চতুর্থ অবস্থানে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ভারত বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ হলেও দেশটিতে এখনো আধা-গ্রামীণ পরিবেশ রয়ে গেছে। সেখানে কোটি কোটি মানুষ ডিজিটাল সেবা নিলেও ২০২৩ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে (জিএইচআই) ভারতের অবস্থান ছিল ১২৫ দেশের ১১১তম।

শুধু যে দুর্বল ইয়েনের কারণে জাপান অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে তা নয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিক থেকেও ধুঁকছে দেশটি। ২০২৩ সালে যেখানে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল সাত দশমিক আট শতাংশ, সেখানে জাপানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল এক দশমিক নয় শতাংশ।

ভারতের অর্থনীতির এই অভাবনীয় অগ্রগতির পেছনে আছে দেশটির বিপুল অভ্যন্তরীণ চাহিদা। জাতিসংঘের হিসাবে গত বছর সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ভারতের জনসংখ্যা।

টোকিওভিত্তিক এনএলআই রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা মাকোতো সাইতো জাপান টাইমসকে বলেন, 'চীনে বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলো থেকে ভারতে বিনিয়োগ আসছে।'

দাই-ইচি লাইফ রিসার্চ ইনস্টিটিটের কর্মকর্তা হিদিও কুমানো মনে করেন, ইয়েনকে দুর্বল করার বিষয়ে জাপান সরকার ও ব্যাংক অব জাপানের নীতির কারণে দেশটির প্রবৃদ্ধি কমেছে। তার মতে, জাপানের উচিত বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও জ্বালানি সাশ্রয়কারী কারখানাগুলোর উৎপাদন বাড়ানো।

ভারতের অর্থনীতি
ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিজেদের অংশীদার ভাবতে পারছেন না তরুণদের অনেকেই। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

'মোদিনোমিক্স'

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ভারতের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোয় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক নীতিকে বোঝাতে 'মোদিনোমিক্স' শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এর ভালো-মন্দ দিকগুলো।

গত ১০ মে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এমনি এক সংবাদের শিরোনামে বলা হয়, 'আগামী দশক ভারতের'। এতে ভারতের অর্থনীতি নিয়ে দেশটির ডেভেলপার, ইনফ্লুয়েন্সার ও উদ্যোক্তাদের আশাবাদ তুলে ধরা হয়। দারিদ্র থেকে কীভাবে সমৃদ্ধির পথে তারা হাঁটছেন সেই গল্পও তুলে ধরা হয়।

যেমন, ১৩ বছর বয়সে ভারতের দারিদ্রপীড়িত বিহার রাজ্য থেকে দিল্লিতে কাজের খোঁজে আসা জুতার কারখানার স্বত্বাধিকারী জামিল শাহ সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, 'ভারতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমার ব্যবসারও প্রসার ঘটছে।'

তবে গত ১ মে বিবিসির প্রতিবেদনে আগামী দশক সত্যিই কি ভারতের—তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সব মিলিয়ে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে ভারতের অর্থনীতিতে ধারাবাহিকতা নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত এখন 'উড়াল' দেওয়ার জন্য রানওয়েতে আছে।

মরগান স্ট্যানলির বিশ্লেষকদের মতে, ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে চীন যেমন উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে ছিল, আগামী দশকে ভারতের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

ভারত বেশ কয়েকটি দিক থেকে বিশেষ করে ডিজিটাল দুনিয়ায় অনেক সুবিধাজনক অবস্থায় থাকলেও দেশটির শিশুরা এখনো আগামী দিনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগৎ থেকে অনেক পিছিয়ে। সম্প্রতি, গবেষণা সংস্থা প্রাথাম ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৪ বছর থেকে ১৮ বছর বয়সীদের একটি বড় অংশ সাধারণ লেখাই পড়তে পারে না।

করোনা মহামারির কারণে যেসব শিশু বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ রেখেছিল তাদের অনেকে আর ফিরতে পারেনি। তারপরও, সরকার ক্রমাগতভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ কম দিচ্ছে।

'মোদিনোমিক্স'র প্রথম ১০ বছরে ভারতের অনেক উন্নতি হলেও অনেকে মনে করছেন গ্লাসের অর্ধেকটা এখনো 'খালি'।

ভারতের অর্থনীতি
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটির অধিকাংশ মানুষের অবস্থা সঙ্গিন। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

কতটা শক্তিশালী ভারতের অর্থনীতি?

গত ২৫ এপ্রিল প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম 'দ্য ইকোনোমিস্ট'- এ প্রকাশিত এক সংবাদের শিরোনাম করা হয়—'ভারতের অর্থনীতি কতটা শক্তিশালী'? এতে বলা হয়, ভারতকে এখনই পরবর্তী চীন বলা না গেলেও ভারতের অর্থনীতি ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে পৃথিবীও।

প্রতিবেদনটিতে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে 'সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতা' হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, দেশটির সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে অভিজাতরা মনে করেন এই বিজেপি নেতা ভারতকে সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করছেন।

কিন্তু, প্রশ্ন রাখা হয়েছে—ভারতের এই সমৃদ্ধি কি টিকে থাকবে? এই সমৃদ্ধি মোদির ক্ষমতায় টিকে থাকার ওপর নির্ভরশীল নয় তো?

অর্থনৈতিক দিক থেকে বর্তমানে পঞ্চম অবস্থানে থাকা ভারত আগামী বছর চতুর্থ ও আগামী ২০২৭ সালে তৃতীয় অবস্থানে চলে আসতে পারে। তখন ভারতের সামনে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।

ভারত বর্তমানে বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি। এর বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছয় থেকে সাত শতাংশ।

বিশ্বের এক নম্বর অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১৫ লাখ কর্মী ভারতে কাজ করেন। সারাবিশ্বে এমন নজির আর একটিও নেই। ভারতের পুঁজিবাজার বিশ্বে চতুর্থ। বেসরকারি বিমান চলাচলে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ এই দেশটির অবস্থান তৃতীয়।

ভারতে আছে ১৪৯টি বিমানবন্দর। গত এক দশকে এই সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এই সময়ে যোগ হয়েছে ১০ হাজার কিলোমিটার পাকা রাস্তা। দেশটিতে বছরে সৌরশক্তি উৎপাদিত হয় ১৫ গিগাওয়াট। এখানে বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্ট। আধুনিক ব্যাংকিং ও ডিজিটাল কর ব্যবস্থা দেশটির জাতীয় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে।

ভারতের অর্থনীতি
ধারণা করা হচ্ছে আগামী বছর ভারতের জিডিপি হবে চার দশমিক ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

ভারতের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ সেবা রপ্তানি। জিডিপিতে এর অবদান ১০ শতাংশ ছুঁয়েছে। গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে, বিশেষ করে আইন ও অ্যাকাউন্টিংয়ে যোগ্য মানবসম্পদ তৈরি করে ভারত সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে।

তবে শীর্ষ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ভারতীয় নির্বাহীদের দেখে দেশটির প্রকৃত অবস্থা বোঝা যাবে না বলেও উল্লেখ করা হয় ইকোনোমিস্টের প্রতিবেদনে। বলা হয়, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ভারত বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ হলেও দেশটিতে এখনো আধা-গ্রামীণ পরিবেশ রয়ে গেছে। সেখানে কোটি কোটি মানুষ ডিজিটাল সেবা নিলেও ২০২৩ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে (জিএইচআই) ভারতের অবস্থান ছিল ১২৫ দেশের ১১১তম।

এতে আরও বলা হয়েছে, আবারও নির্বাচিত হয়ে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এলে ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে। তবে দেশটিকে আরও অনেক সমস্যার মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এই বিপুল জনসংখ্যার মাত্র ১০ কোটি মানুষের স্থায়ী চাকরি আছে। বাকিরা হয় অস্থায়ী কাজ করেন, নয়তো বেকার। প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে প্রচুর সংখ্যক চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।

ভারতের অর্থনীতির 'গুড, ব্যাড অ্যান্ড আগলি'

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এমন শিরোনাম দেখে মনে পড়তে পারে ১৯৬৬ সালে নির্মিত ইতালীয়-স্পেগাতি ওয়েস্টার্ন মুভি 'দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি'র কথা। চোখে ভেসে উঠতে পারে ১৮৬২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে গৃহযুদ্ধের অরাজকতার দৃশ্যপট।

ভারতের অর্থনীতি নিয়ে বিবিসির 'ইন্ডিয়া'স ইকোনমি: দ্য গুড, ব্যাড অ্যান্ড আগলি ইন সিক্স চার্টস' শিরোনামটি সেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কথাই যেন আবারও মনে করিয়ে দিলো।

গত ১ মে বিবিসির প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ১০ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও তার সরকার এমন অর্থনীতি পায়, যা ছিল খাদের কিনারে। প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে এসেছিল। দেশটির অন্তত এক ডজন ধনকুবের দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন। খেলাপি ঋণের চাপে ব্যাংকগুলো পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল প্রায়।

এর প্রায় ১০ বছরের মাথায় ভারতের উচ্চ প্রবৃদ্ধি, শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও মহামারি সত্ত্বেও স্থিতিশীল অর্থনীতির দেখা মেলে।

গত বছরই ভারত যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে বিশ্বের পঞ্চম অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠে।

ব্রিটিশ উপনিবেশিকতা থেকে স্বাধীনতার ১০০ বছর পর 'বিকশিত ভারত ২০৪৭'- এর বার্তা দিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত জানুয়ারিতে দিল্লির লালকিল্লার সমাবেশে হাজারো ভক্তের উদ্দেশে তিনি আগামী ২০৪৭ সালে ভারতকে উন্নত দেশের তালিকায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

কিন্তু, দিল্লির রাস্তায় 'স্কার্ট-প্লাজো' বিক্রি করা কুলদীপের মতো তরুণদের কাছে এসব প্রতিশ্রুতি অন্তঃসারশূন্য। ডয়েচে ভেলেকে তিনি বলেন, 'আশা করেছিলাম, এই সরকার চাকরির ব্যবস্থা করবে। কিন্তু, কিছুই পাইনি।'

গত ৯ মে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, বিরোধী ও সুশীল সমাজের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও ভারতীয় শ্রমিকদের ইসরায়েলে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে তারা ইসরায়েলি সেনাদের ছাউনি, বা ফিলিস্তিনি বন্দিদের জেলখানা বানাচ্ছেন।

গত ৭ মে ভারতীয় অর্থনীতিবিদ সন্তোষ মেহরোত্রা জার্মান সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, জনসংখ্যার হিসাবে সম্ভবত ভারতের বেকারত্বের হার এখন বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। তাই তারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করেন। যুদ্ধরত রাশিয়া-ইউক্রেন এমনকি ইসরায়েলে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে যাওয়ার চেষ্টাও করছেন কেউ কেউ।

গত ৯ মে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, বিরোধী ও সুশীল সমাজের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও ভারতীয় শ্রমিকদের ইসরায়েলে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে তারা ইসরায়েলি সেনাদের ছাউনি, বা ফিলিস্তিনি বন্দিদের জেলখানা বানাচ্ছেন।

বলা বাহুল্য, এমন দৃশ্য ভারত ছাড়া অন্য শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর ক্ষেত্রে দেখা যায় না।

প্রতিবেদনটি তৈরির সময় ডয়েচে ভেলের সংবাদদাতা অনেক শিক্ষিত যুবককে রাস্তার পাশে সবজি, ফলের রস, মোবাইল সিম কার্ড ইত্যাদি বিক্রি করতে দেখেছেন।

ভারতের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশির বয়স ৩০ বছরের নিচে। এর ভেতর ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী মানুষ ২৬ শতাংশ। দেশটির এমন অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিজেদের অংশীদার ভাবতে পারছেন না এই তরুণদের অনেকেই।

এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতেই পারে—তাহলে ভারতের এই অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল কি সবাই পাচ্ছেন না?

বিবিসির প্রতিবেদনেই এই প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে। সেখানে বলা হচ্ছে, সাদা চোখে মনে হতে পারে, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক দর্শন 'মোদিনোমিক্স' কাজ করছে। কিন্তু গভীরভাবে দেখলে বোঝা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটির অধিকাংশ মানুষের অবস্থা সঙ্গিন। এটি কোনোভাবেই ভালো অর্থনীতির লক্ষণ নয়।

Comments

The Daily Star  | English

Jatiyo Party's office set on fire in Khulna

Protesters vandalised the Jatiyo Party office in Khulna's Dakbangla area last evening

1h ago