সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ১১ নাগরিকের বিবৃতি

‘এটা খুবই দুঃখজনক এবং উদ্বেগের বিষয় যে কী কারণে সুন্দরবনের গভীরে বার বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, তা স্পষ্টভাবে এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি বন কর্তৃপক্ষ।’

সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১১ নাগরিক।

আজ বুধবার ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সদস্যসচিব শরীফ জামিলের পাঠানো এই যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, 'বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যে গত ৪ মে বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া এলাকায় একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সুন্দরবনের লতিফের ছিলা নামক জায়গায় স্থানীয় জেলেরা এই আগুন দেখতে পান।'

'সবশেষ জানা যায়, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই আগুন তিনদিন পর নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে, এরমধ্যেই সুন্দরবনের ওই এলাকার যৌগিক বাস্তুতন্ত্র, বন্যপ্রাণী ও বনজ সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।'

'এটা খুবই দুঃখজনক এবং উদ্বেগের বিষয় যে কী কারণে সুন্দরবনের গভীরে বার বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, তা স্পষ্টভাবে এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি বন কর্তৃপক্ষ। তবে, সুন্দরবনে এই ধরনের অগ্নিকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। যেহেতু ধারাবাহিকভাবে এমন ঘটনা ঘটছে, তাই এর কারণ অনুসন্ধান ও মানবসৃষ্ট প্রতীয়মান হলে দায়ীদের চিহ্নিত করতে সঠিক তথ্য উদঘাটন করা বাঞ্ছনীয়।'

'আমরা আরও জেনেছি যে গত ২৪ বছরে সুন্দরবনে ২৬ বার আগুন লেগে সরকারি হিসেবে প্রায় ৭৫ একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে এবং ২৪টি তদন্ত প্রতিবেদনে ১৫ বার বনজীবীদের ফেলে আসা আগুন থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সুন্দরবনের জমি দখল ও প্রাণবিনাশী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে এই অগ্নিকাণ্ডের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা দরকার।'

'তাই, আমরা এশিয়ার ফুসফুসখ্যাত সুন্দরবনে মানবসৃষ্ট অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে বনবিভাগ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, পরিবেশকর্মী, সুন্দরবন গবেষক ও বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।'

'একই সঙ্গে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে যেকোনো সম্ভাব্য দুর্ঘটনা মোকাবিলায় বিজ্ঞানভিত্তিক আগাম প্রস্তুতি ও তড়িৎ উদ্যোগের জোর দাবি জানাচ্ছি।'

এই যৌথ বিবৃতিতে সই করেন—

১. সুলতানা কামাল, মানবাধিকার ও পরিবেশ কর্মী

২. রাশেদা কে. চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা

৩. খুশী কবির, সমন্বয়ক, নিজেরা করি

৪. ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, সাবেক চেয়ারম্যান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন

৫. অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ ও সমাজকর্মী

৬. ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

৭. শারমিন মুরশিদ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা

৮. এমএস সিদ্দিকী, বেসরকারি উপদেষ্টা, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন

৯. অধ্যাপক আকতার মাহমুদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

১০. অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান, সভাপতি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স

১১. শরীফ জামিল, সদস্যসচিব, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago