বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়: ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। সে কারণে বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, 'আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ বিরোধী দল দমনে বিশ্বাস করে না। তবে সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় নেই। সে যে দলেরই হোক না কেন, সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।'

আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ কথা বলেন।

তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের 'রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্যের' নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। 

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা লাগাতারভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই। একদিকে তারা আগুন-সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছেন, অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিরোধীদল দমনের মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করছেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টে বিএনপি লাগাতারভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণতন্ত্র ও নির্বাচন বানচালের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছিল বিএনপি।'

তিনি বলেন, 'ইতোপূর্বে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি সারাদেশে ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে শত শত নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। তাদের এই ভয়াবহ সম্মিলিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই, বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের কথা বলে। সরকার বেপরোয়াভাবে কাউকে কারাগারে পাঠাচ্ছে না। বরং সন্ত্রাস ও সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা আইন ও আদালতের মুখোমুখি হচ্ছে। তারা জামিনে মুক্তিও পাচ্ছেন।

তবে যারা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন, জনগণের জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি করেছেন ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছেন, সেসব সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদারদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালত যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।'

বিএনপি নেতারা উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত বক্তব্য দিচ্ছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে বদ্ধপরিকর। জনগণের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি বরাবরের ন্যায় নির্বাচন ও দেশের গণতন্ত্র বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সে কারণে জনগণও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

বিএনপি নির্বাচন বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকেও কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করতে হয়েছে। তাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিচ্ছে না। দল ও দলের বাইরে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যাতে নির্বাচিত হয়, সেটাই আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করে।'

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতারা যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কঠোর সাংগঠনিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের জনগণ যখন নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে, বিএনপি নেতারা তখন বরাবরের মতো দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে নিরন্তন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। আমরা বিএনপির গণতন্ত্র-বিরোধী অপতৎপরতা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Jatrabari turns into battlefield as students clash

Students of three colleges clashed at Dhaka's Jatrabari today, turning the area into a battlefield

1h ago