মিশরে প্রবাসীদের ঈদ উদযাপন
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলিম বিশ্বে আনন্দের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। মধ্যপ্রাচ্য ও আরব-আফ্রিকার অন্যান্য দেশের মতো পিরামিড, নীলনদ আর সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবীর দেশ মিশরে ১০ মার্চ উদযাপিত হয়েছে মুসলমানদের সর্ববৃহৎ এই ধর্মীয় উৎসব।
ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশের বিভিন্ন মসজিদ থেকে ধ্বনি আসতে থাকে 'আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ'।
ভোরের আলো ফোটার আগেই দেখা যায়, সব বয়সের নারী, পুরুষ ও শিশুরা জায়নামাজ হাতে নিয়ে ছুটে চলেছেন মসজিদ ও মাঠের দিকে। সূর্য ওঠার ঠিক ২০ মিনিটের মাথায় রাজধানী কায়রোসহ দেশটির সব মসজিদ ও খোলা ময়দানে একযোগে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের জামাত।
মিশরে ঈদের নামাজের জন্য আলাদা কোনো ঈদগাহ মাঠ নেই। ছোট-বড় সব মসজিদের ভেতর, স্কুল, বিভিন্ন ক্লাব সংলগ্ন মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
দেশটির রাজধানীর ইসলামিক কায়রো এলাকায় অবস্থিত বেশ কয়েকটি বড় বড় মসজিদে দেশের দূরদূরান্ত থেকে এসে বাংলাদেশি প্রবাসীরাও মিশরীয় মুসল্লিদের সঙ্গে যোগ দেন ঈদের জামাতে।
মিশরের বিভিন্ন শহরে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের নিজ নিজ এলাকার মসজিদ ও মাঠে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিস সামিনা নাজ প্রবাসী বাংলাদেশি, তাদের পরিবার ও মিশরীয় নাগরিকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে এক বানীতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সম্প্রীতি কামনা করেন।
ফারাওদের দেশটিতে এবার ঈদের চারদিনের ছুটির সঙ্গে দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে মোট ছয়দিনের ছুটি উপভোগ করছেন সবাই।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অনেক বন্দিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।
নীলনদের দেশে ঈদুল ফিতরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো কুকিজ জাতীয় কা'হক নামক একটি মিষ্টি। ভেতরে খেজুর, ওয়ালনাটসহ বিভিন্ন বাদাম ভরে মাখন, ময়দা ও চিনির সংমিশ্রণে তৈরি কা'হক ছাড়া মিশরীয়দের ঘরে ঈদ উদযাপন চিন্তাই করা যায় না।
দেশটিতে ঈদুল ফিতরের প্রধান খাবার ফাসিখ (লবণাক্ত শুটকি মাছ), বাছাল আখদার (পেঁয়াজ পাতা) ও এইস বেলাদি (দেশী রুটি) হলেও প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবারগুলো নিজ ঘরে পিঠা-পায়েস আর মোরগ পোলাও দিয়েই ঈদ উদযাপন ও অতিথিদের আপ্যায়ন করেন।
Comments