আইপিএলে ফিরেই মোস্তাফিজের ঝলক
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার জন্য ভিসা-সংক্রান্ত কাজ শেষ করে মোস্তাফিজুর রহমান ভারতে ফিরে যান গতকাল। চেন্নাই সুপার কিংসের স্কোয়াডে যোগ দিয়ে একাদশে ঢুকে পরদিনই মাঠে নেমে পড়লেন বাংলাদেশের তারকা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নজর কেড়ে আবারও চলতি আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে গেলেন তিনি।
সোমবার শিরোপাধারী চেন্নাইয়ের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে মাত্র ১৩৭ রান করেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। তাদেরকে অল্প পুঁজিতে আটকাতে ভীষণ কার্যকর ভূমিকা রাখেন মোস্তাফিজ। ৪ ওভারে ২২ রান খরচায় তিনি শিকার করেন ২ উইকেট। সব মিলিয়ে ১৬টি ডট দেন। এবারের আসরে ৪ ম্যাচে মোট ৯ উইকেট রয়েছে তার নামের পাশে।
জরুরি ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছিলেন মোস্তাফিজ। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়ার জন্য পাসপোর্ট জমা দিয়ে তা ফিরে পেতে কয়েক দিন দেশে থাকতে হয় তাকে। সেকারণে চেন্নাইয়ের আগের ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে খেলতে পারেননি তিনি। তার অনুপস্থিতিতে ৪ ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়ে শীর্ষে উঠে গিয়েছিলেন রাজস্থান রয়্যালসের স্পিনার যুজবেন্দ্র চেহেল।
এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে কলকাতার ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে পান মোস্তাফিজ। ওই ওভারে একটি চার হজম করলেও মাত্র ৬ রান দেন তিনি। তাকে আক্রমণে ফেরানো হয় ষষ্ঠ ওভারে। প্রথম বলে বাউন্ডারি হলেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান তিনি। আবারও স্রেফ ৬ রান খরচ করেন।
পাওয়ার প্লে শেষে স্কোরবোর্ডে কলকাতার পুঁজি দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৫৬ রান। চলতি মৌসুমে নিজেদের মাঠে ইনিংসের প্রথম ৬ ওভারে আর কোনো দলের বিপক্ষে এত বেশি রান দেয়নি চেন্নাই। ওই সময়ে ওভারপ্রতি গড়ে নয়ের বেশি রান উঠলেও দারুণ আঁটসাঁট থাকেন মোস্তাফিজ। রান দেওয়ায় কৃপণতা তিনি দেখান ইনিংসের শেষদিকেও। সেই সঙ্গে করেন উইকেট প্রাপ্তির উল্লাস।
২৮ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার আবার যখন বোলিংয়ে আসেন, তখন মাঝের ওভারগুলোতে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো ধুঁকছিল কলকাতা। তাদের রান ছিল ৬ উইকেটে ১১৩। ক্রিজে অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গী ছিলেন মাত্রই নামা আন্দ্রে রাসেল।
অষ্টাদশ ওভারের প্রথম দুটি বল ডট হওয়ার পর তৃতীয় ডেলিভারিতে চার মারেন রাসেল। পাশাপাশি আম্পায়ার করেন নো বলের নির্দেশ। তবে রাসেলকে ফ্রি হিট কাজে লাগাতে দেননি মোস্তাফিজ। উল্টো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিস্ফোরক ব্যাটারকে সাজঘরে পাঠাতে পারতেন তিনি।
মোস্তাফিজের করা অফ কাটার ডেলিভারি সজোরে হাঁকাতে চাওয়া রাসেলের ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে পেছনে চলে যায়। কিছুটা দেরিতে প্রতিক্রিয়া দেখানো উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনি শেষমেশ এক হাতে চেষ্টা করলেও বল গ্লাভসবন্দি করতে ব্যর্থ হন। জীবন কাজে লাগাতে না পারা রাসেলকে পরে বিদায় করেন তুষার দেশপান্ডে।
চেন্নাইয়ের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড় ইনিংসের শেষ ওভারেও মোস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন। আস্থার প্রতিদান মিলে যায়। একটি বাইসহ আসে স্রেফ ২ রান, পতন হয় ২ উইকেটের। শ্রেয়াস ও মিচেল স্টার্ককে যথাক্রমে রবীন্দ্র জাদেজা ও রাচিন রবীন্দ্রর ক্যাচ বানিয়ে ছেঁটে ফেলেন কাটার মাস্টার খ্যাত তারকা।
মোস্তাফিজের ঝলকের পাশাপাশি চেন্নাইয়ের হয়ে তিনটি করে উইকেট পান দেশপান্ডে ও জাদেজা। ডানহাতি পেসার দেশপান্ডে ৩৩ রান দিলেও বাঁহাতি স্পিনার জাদেজার ৪ ওভার থেকে আসে মাত্র ১৮ রান। কলকাতার পক্ষে ৩২ বলে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন শ্রেয়াস।
Comments