মন্ত্রিসভার আলোচনায় কিশোর গ্যাং

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক। ছবি: পিআইডি

মন্ত্রিসভার অনির্ধারিত আলোচনায় স্থান পেয়েছে কিশোর গ্যাং। কিশোর অপরাধীদের শাস্তি দিতে গিয়ে তারা যেন সারা জীবনের জন্য অপরাধী না হয়ে ওঠে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের সরকার প্রধানের এ নির্দেশনার কথা জানান।

মো. মাহবুব হোসেন বলেন, 'কিশোরদের মধ্যে যারা অপরাধ করছে, তাদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংশোধন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে। কিশোর অপরাধীদের সংশোধনে প্রয়োজনীয় আরও বেশি উদ্যোগ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন সরকার প্রধান।'

তিনি জানান, প্রথাগতভাবে অন্য অপরাধীদের মতো কিশোর অপরাধীদের যেন দেখা না হয়। তাদের সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা রাখতে হবে। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তাদের নিয়োজিত করার যেন সুযোগ রাখা হয়। বিশেষ করে, জেলখানায় সাধারণ আসামিদের সঙ্গে কিশোর অপরাধীদের যাতে রাখা না হয়, সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশে এখন তিনটি কিশোর সংশোধনাগার রয়েছে টঙ্গী, গাজীপুর ও যশোরে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'এগুলোতে এখন অনেক ভিড়। তাই প্রয়োজন অনুপাতে সংশোধনাগারের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে সংশোধনাগার আরও সুযোগ-সুবিধা তৈরি করতে বলেছেন তিনি।'

সংশোধনাগারে কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 'কিশোর অপরাধীদের ব্যবস্থাপনায় মনোবিজ্ঞানীরা বড় ভূমিকা পালন করেন। একই সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের সমস্যা সমাধানে অভিভাবক, শিক্ষক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করতে হবে।'

এ ছাড়া, মন্ত্রিসভায় 'জাতীয় লজিস্টিক নীতি, ২০২৪' এর খসড়া অনুমোদন পেয়েছে।

এ নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য তুলে ধরে মাহবুব হোসেন জানান, নির্ধারিত সময় বা স্বল্পতম সময়ে স্বল্পতম ব্যয়ে দ্রুত পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে এবং কী ব্যবস্থা নিলে এই সার্ভিসটা দেওয়া সম্ভব হবে, তা নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কাউন্সিল গঠন করা হবে।

এই কাউন্সিল সামগ্রিক দিক নির্দেশনা দেবে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি সমন্বয় কমিটি থাকবে। এটি বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণে নীতি সহায়তা দেবে।

উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'আমাদের অর্থনীতিতে মানবসম্পদ উন্নয়ন একটি বড় খাত। আমরা দেখেছি, এখানে ১০৬ ধরনের পেশার কথা হয়েছে। সেখানে ৫২টি পেশায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে, বাকি ৫৪টিতে নেই। এ নীতিমালার কারণে এসব বিষয় চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে আমাদের মানবসম্পদের দক্ষতা দ্রুত বৃদ্ধি করা যায়।'

মন্ত্রিসভায় 'ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৪' এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

Comments