প্রকৃতিকে রক্ষা না করলে প্রকৃতি আমাদের শেষ করে ফেলবে: জয়া
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জনের রেকর্ড গড়েছেন তিনি। ভারতে তিনবার পেয়েছেন ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন। বলিউডেও অভিনয় করেছেন, প্রথমবারের মতো ইরানি সিনেমায় অভিনয় করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোচিত হয়েছেন।
অভিনয়ের বাইরে প্রাণীকূলের প্রতি প্রবল ভালোবাসা তার। প্রাণীদের অধিকার আদায়ে বারবার সোচ্চার হতে দেখা গেছে জয়াকে। তার করা রিটের কারণেই সার্কাস-সহ চাঁদাবাজির কাজে হাতির বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধে লাইসেন্স প্রদান নিষিদ্ধ করে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এসব বিষয় নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সাথে কথা বলেছেন জয়া আহসান।
তিনি বলেন, 'চারপাশের অনেককিছু নিয়েই আমরা ভাবি না। কিন্তু ভাবা উচিত। আমি মনে করি নতুন জেনারেশন অবশ্যই ভাবে। নতুন জেনারেশনের মধ্যে মানবিক গুণ আছে। মানবিক গুণ থাকলেই মানুষ। প্রকৃতিতে এত প্রাণীকূল রয়েছে, রাস্তাঘাটে অনেক প্রাণী (কুকুর-বেড়াল) ঘুরে বেড়ায়, তাদের প্রতিও সহানুভূতি এবং ভালোবাসা জানানো দরকার। এটা আমাদের দায়িত্ব।'
'রাস্তাঘাটে তাকালেই হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি চোখে পড়ে। এটা বন্ধের জন্য দেড়বছর ধরে চেষ্টা করছিলাম। সম্প্রতি সেই চেষ্টার প্রতিফলন হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। এটা একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। হাতিদের যেসব কাজে ব্যবহার করা হয়, তা কিন্তু অনেক কঠিন কাজ । হাতিদের বাচ্চাকালে মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এটা মধ্যযুগীয় বর্বরতা। এটা আধুনিক বাংলাদেশে চলতে পারে না। হাতি দিয়ে চাঁদাবাজিহ করে, খেলা দেখায়, নানা কাজ করে। এটা আইনত অপরাধ। নৈতিকতা বিরোধী,' বলেন তিনি।
চাঁদাবাজির মাধ্যমে অনেক সময় হাতির মৃত্যুও ঘটেছে। এজন্য আমরা বন বিভাগকে অনুরোধ করেছি। যার জন্য মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। রায়ও পেয়েছি। এই রায়টা খুব দরকার ছিল। রায় হওয়াতে আমরা খুব খুশি। ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব ও তার টিম কাজ করেছেন। রাকিবুল হক এমিল কাজ করেছেন। তাদের মতো ভালো মানুষ সমাজে প্রয়োজন। এখন রায়ের বাস্তবায়ন করা দরকার,' বলেন তিনি।
'ব্যক্তিগতভাবে লাইসেন্স নিয়েও এখন হাতি ব্যবহার করা যাবে না। বিয়েবাড়ি থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক কাজেও হাতির ব্যবহার হয়। এখন সবই বন্ধ হবে। বনবিভাগ ও কিছু এনজিও কাজ করেছে,' জয়া বলেন।
এই অভিনেত্রী আরও বলেন, 'থাইল্যান্ড, ভুটানসহ বেশ কয়েকটি দেশে হাতির অভয়ারণ্য রয়েছে। আমাদেরও অভয়ারণ্য দরকার। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে, যারা হাতি নিয়ে কাজ করছে তারা কী করবে? হাতির অভয়ারণ্য হলে তারা সেখানে কাজ করবে। যদি প্রকৃতিকে রক্ষা না করি তাহলে আমরাই সমস্যায় পড়ব। প্রকৃতি আমাদের শেষ করে ফেলবে। তাই আমাদের মানবিক হতে হবে। প্রাণীদের ভালোবাসতে হবে।'
Comments