তারকাদের যেসব উপহার দিয়েছে আম্বানি পরিবার

হিন্দি সিনেমার তিন মহাতারকা শাহরুখ, সালমান ও আমির—যাদের কোনো প্রযোজক, কোনো গল্প এক পর্দায় আনতে পারেনি তাদের একসঙ্গে মঞ্চে এনেছেন ভারতীয় ধন কুবের মুকেশ আম্বানি।

অনন্ত আম্বানির প্রাক-বিয়ের অনুষ্ঠানে একসঙ্গে পারফর্ম করেছেন তারা। অস্কার পাওয়া 'আর আর আর' সিনেমার 'নাটু নাটু' গানের তালে তাদের নাচের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন রীতিমতো ভাইরাল। খানরা বিয়ের অনুষ্ঠানে পারফরম্যান্সের জন্য কোটি কোটি অর্থ নেন তো বটেই তবে আম্বানি পরিবারের জন্য হলে বিষয়টি পারিশ্রমিক থেকেও বড় কিছু হয়ে দাঁড়ায়।

এসব অনুষ্ঠানের পারর্ফম্যান্সের পারিশ্রমিক ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তারকাদের আরো বাড়তি উপহারও দিয়ে থাকে আম্বানি পরিবার।

আম্বানি পরিবার কোন তারকাকে কী উপহার দিয়েছেন এটি নিয়েই আজকের লেখা।

কিং খানের জন্য হীরার আংটি

বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান এই উপহার পেয়েছিলেন মুকেশ আম্বানির বড় ছেলে আকাশ আম্বানির বাগদানের সময়। ২০১৮ সালে ভারতের গোয়াতে আকাশ আম্বানি ও শ্লোকা মেহতার বাগদান সম্পন্ন হয়। সেখানে অন্যান্য তারকাদের মতো উপস্থিত ছিলেন কিং খান শাহরুখও। এই অনুষ্ঠানে প্রবেশের আগে কিং খানের আঙুলে কোনো আংটি দেখা যায়নি তবে বের হবার সময় সর্বকনিষ্ঠ আঙুলে দেলা মিলে বড় এক হীরার আঙটি। গণমাধ্যমে এসআরকে'র এই আংটি নিয়ে বেশ আলোচনা হয়। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের মতে, আম্বানি পরিবারের এক পারিবারিক বন্ধু শাহরুখ খানকে উপহার দিয়েছিল এই আংটি।

কিং খানের সঙ্গে ভালোই সম্পর্ক আম্বানি পরিবারের। নিজের ৫৮ তম জন্মদিনে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন আম্বানি পরিবারের সদস্যদের। সেই জন্মদিনে নিতা আম্বানি একটি স্বর্ণের টিসোট ঘড়ি উপহার দেন। ধারণা করা হয় ঘড়িটির মূল্য প্রায় ১০ কোটি রুপি।

অভিনেতা রাম চরণের সন্তানের জন্য বিশেষ উপহার

২০২৩ সালের জুনের ২০ তারিখে টলিউড দম্পতি রাম চরণ ও উপাসনার সন্তানের জন্ম হয়। কন্যা সন্তানকে স্বাগত জানাতে আয়োজনের কোনো কমতি রাখেননি রাম-উপাসনা।

যেমন তাদের আয়োজন তেমন উপহারও পেয়েছেন তারকাদের থেকে। কন্যা সন্তানের নামকরণ অনুষ্ঠানে পাওয়া সেসব উপহারের মাঝে আম্বানি পরিবারের দেয়া উপহার সবার দৃষ্টিকারে। কেননা, কন্যা সন্তানের জন্য তারা দেয় একটি স্বর্ণের দোলনা।

বাণিজ্য ভিত্তিক ভারতীয় গণমাধ্যম বিজনেস টুডে'র মতো অন্যান্য গণমাধ্যমের তথ্যমতে, স্বর্ণের এই দোলনার মূল্য এক কোটি রুপি।

'বিগ বি' অমিতাভ বচ্চনের দুঃসময়ে পাশে ছিল আম্বানি পরিবার

রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের চার দশকপূর্তী উদযাপনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখের অমিতাভ বচ্চন। বক্তব্যে নিজের ক্যারিয়ারের কঠিন সময়ে ধীরুবাই আম্বানির পাশে থাকার কথা স্মৃতিচারণ করে বলেন তিনি।

১৯৯০ এর দশকে 'বিগ বি' অমিতাভ বচ্চন পুরোপুরি দেউলিয়া হয়ে যান, শূন্য হয়ে পড়ে তার ব্যক্তিগত ব্যাংক ব্যালেন্স। এমন সময় রিলায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা ধীরুবাই আম্বানি তার ছোট ছেলে অনীল আম্বানির মাধ্যমে বলিউড শেহেনশাহকে আর্থিক সহায়তা করার জন্য বলেন। ভারতীয় গণমাধ্যম 'ডিএনএ'র প্রতিবেদনে সেই বক্তব্যের একটি অংশ উদ্ধৃতি করে, যেখানে ধীরুবাই আম্বানি বলেন, 'ওর বাজে সময় যাচ্ছে। তাকে কিছু অর্থ দিয়ে সহায়তা করো।'

অমিতাভ বচ্চন আর্থিক সহায়তা নেননি তবে দুঃসময়ে এমন এগিয়ে আশার জন্য আম্বানি পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

বলিউডের অন্যান্য তারকাদেরও বিভিন্ন সময়ে উপহার দিয়েছেন আম্বানি পরিবার। এরমধ্যে দীপিকা পাড়ুকোনের জন্য হীরার আংটি ও প্রয়াত অভিনেত্রী শ্রীদেবীর জন্য বিলাসবহুল হ্যান্ডব্যাগ উল্লেখযোগ্য।

এছাড়া নিতা আম্বানির 'ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ' এর দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের ক্রিকেটারদের তাদের পারফর্ম্যান্সের জন্য বিভিন্ন সময়ে উপহার দিয়েছেন। এরমধ্যে ক্যারিবীয় ক্রিকেটার কায়রোন পোলার্ডকে দিয়েছেন স্বর্ণের চেইন, নিকোলাস পুরাণ ও হারদিক পান্ডিয়াকে ঘড়ি।

আম্বানি পরিবারের দানশীলতা, তাদের উপহার দেওয়ার ধরণ বাণিজ্য থেকে শুরু সিনেমা জগৎ দুই ক্ষেত্রেই সমান জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তার পালে হাওয়া লাগে যখন এই পরিবার বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে। যেমন ১ মার্চ থেকে ৩ মার্চ ব্যাপী চলেছে মুকেশ ও নিতা আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানির প্রাক-বিয়ে অনুষ্ঠান পর্ব।

এই অনুষ্ঠানে বলিউড অভিনয়শিল্পীদের পাশাপাশি যোগ দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের সাবেক ও বর্তমান তারকা কিক্রেটাররা। এসেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন জসিম আল থানি ও কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার। প্রায় ১২০০ জনের অতিথির তালিকায় ছিল জনপ্রিয় পপ তারকা রিয়ানা, মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস, ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গসহ আরও অনেকে।

Comments

The Daily Star  | English
India visa restrictions for Bangladeshi patients

A wake-up call for Bangladesh to reform its healthcare

India’s visa restrictions on Bangladeshi nationals, while initially perceived as a barrier, could serve as a wake-up call for Bangladesh to strengthen its healthcare system and regain the confidence of its patients.

13h ago