‘পাঠকের বিপুল ভালোবাসা পেয়েছি, তাই কোনো পুরস্কারের আশা ছিল না’

লুৎফর রহমান রিটন পরিচিত 'ছড়া সম্রাট' হিসেবে। সমসাময়িককালে তো বটেই, বাংলা সাহিত্যেরও অন্যতম প্রভাবশালী ছড়াকার তিনি।

রিটন ছড়ার পাশাপাশি বিচিত্র বিষয়ে গদ্য লিখেছেন। লেখার ক্ষেত্রে তিনি ছড়ার সঙ্গে কখনো আপোস করেননি। সারাটা জীবন সততার সঙ্গে ছড়া লিখে চলেছেন।

প্রখ্যাত এই ছড়া-কবিতা লেখক লুৎফর রহমান রিটন ১৯৬১ সালের ১ এপ্রিল ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। কীর্তির জন্য ২০০৭ সালে তিনি পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, এ বছর পেয়েছেন একুশে পদক।

পুরস্কার প্রাপ্তি, লেখালেখি ও সমাজ-সাহিত্য নিয়ে লুৎফর রহমান রিটন কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

লুৎফর রহমান রিটন। ছবি: সংগৃহীত

দ্য ডেইলি স্টার: যাদের লেখা পড়ে অনুপ্রাণিত হয়েছেন, তাদের মতো আপনিও রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছেন।

লুৎফর রহমান রিটন: যাদের হাত ধরে, স্নেহের ছায়ায় বিকশিত হয়েছি, তারা এই পুরস্কার পেয়েছেন অতীতে। একই ধারাবাহিকতায় আমি পেয়েছি—এটা অনেক বড় প্রাপ্তি।

যেকোনো পুরস্কারই সম্মানের ব্যাপার, সেটা যে পুরস্কারই হোক। যদিও আমি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলাম ২০০৭ সালে, ওটা ছিল বাংলা একাডেমি কর্তৃক আমাদের সাহিত্যে সর্বোচ্চ মার্কিং। এরপরে হলো একুশে পদক। এটি একটি রাষ্ট্রীয় সম্মান, অনেক গৌরবের। আমিও সেই গৌরবটা পেয়েছি। যে লেখককে রাষ্ট্র শনাক্ত ও সম্মানিত করে, সেটি সাধারণ না। জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তির।

একুশে পদক প্রদানের পর লুৎফর রহমান রিটনের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: লুৎফর রহমান রিটনের ফেসবুক থেকে

ডেইলি স্টার: আপনার বেশ কিছু ছড়া সারাদেশে অনেক জনপ্রিয়। পাঠকের ভালোবাসা কেমন অনুভব করেছেন?

লুৎফর রহমান রিটন: পাঠকের ভালোবাসা আমি বিপুলভাবে পেয়েছি। ফলে আর কোনো পুরস্কার পাওয়ার আশা আমার ছিল না, এখনো নেই। এই পুরস্কারটি আমাকে দেওয়ায় গৌরব বোধ করেছি; কিন্তু আমাকে যদি না-ও দেওয়া হতো—অনেককে তো দেয়নি, এতোদিন পাইনি—আক্ষেপ ছিল না।

বারবার গৌরবের কথা বলছি এই কারণে, রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিলে মনে হয় যেন মাথার ওপর একটা ছায়া থাকে। যে দেশে জন্মেছি, যে দেশের ছোট শিশুদের জন্য লিখেছি, সে দেশ যখন স্বীকৃতি দেয়, তখন অন্যরকম উচ্চতা কিংবা মাত্রা থাকে। এ কারণে খুবই আনন্দিত ও আপ্লুত এবং জীবনের আরেকটি অধ্যায়ের শুরু।

ছেলেবেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহ ও আশীর্বাদ পেয়েছিলাম। আমার গালে, চিবুকে, মাথায় তিনি মমতার চুমু এঁকেছিলেন। তখন (১৯৭৪) তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রায় পঞ্চাশ বছর পর তার সুযোগ্য কন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে যখন আমি পুরষ্কার গ্রহণ করেছি, তখন গৌরব অনুভব করছি। পুরস্কার প্রদানের পর তিনি ঠিক বঙ্গবন্ধুর মতো করেই হাত বুলিয়ে তার আদর-স্নেহ-মমতায় জড়ালেন। এই পুরস্কারের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু থেকে তার কন্যার মমতার এই ধারাবাহিকতা আমার জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।

লুৎফর রহমান রিটনের একুশে পদক গ্রহণের মুহূর্তকে আরও বেশি স্মরণীয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে একমাত্র মেয়ে সাবরিনা শারমিন নদীর ছুটে আসা। ছবি: লুৎফর রহমান রিটনের ফেসবুক থেকে

ডেইলি স্টার: অনেকে বলেন, পুরস্কার দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। তার মানে কি পুরস্কারের আগে দায়িত্ব কম ছিল?

লুৎফর রহমান রিটন: এই কথার সঙ্গে আমি একমত নই। পুরস্কার আমার দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়নি—একসুতোও না। পুরস্কার পাওয়ার আগে থেকেই দায়িত্বশীল ছিলাম। পুরস্কার পাওয়ার আগে যেমন লিখতাম, এখনো তেমনই লিখবো।

ডেইলি স্টার: রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রভিত্তিক। কোথায় যেন শূন্যতা কাজ করে। এই সংকট কীভাবে কাটানো যায়?

লুৎফর রহমান রিটন: স্বাধীনতা পরবর্তীতে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল বিকাশ হচ্ছিল একযোগে। শিল্প-সাহিত্যের সব শাখায় বিকাশমান একটি ধারা ছিল; আমাদের চলচ্চিত্রে, সঙ্গীতে কিংবা সাংবাদিকতায়। নতুন জন্ম নেওয়া একটি দেশে এই বিকাশটি ঘটে। সত্তর-আশির দশক সেজন্য আমাদের খুবই উজ্জ্বল দশক। উজ্জ্বল দশকে যারা বেরিয়ে এসেছেন, তারাই কিন্তু শিল্প-সাহিত্যের বড় মানুষ। এই ধারাবাহিকতা নব্বই দশক পর্যন্ত ছিল। তারপর থেকে পাল্টে গেছে চিত্র।

কারণ, শিল্প-সাহিত্যের চর্চাকারী, লালন-পালনকারীরা হলো মধ্যবিত্ত। তখনকার মধ্যবিত্ত আর এখনকার মধ্যবিত্তের ধারণা পাল্টে গেছে। চরিত্র পরিবর্তনের পাশাপাশি চাহিদারও পরিবর্তন ঘটেছে। সবচেয়ে বড় কথা, মধ্যবিত্ত বলতে যা বোঝায়, তা এখন নেই বললেও চলে—হয় একেবারে নিম্নবিত্ত, নয় উচ্চবিত্ত।

যারা মাঝামাঝি পর্যায়ে আছেন, তারা উচ্চবিত্ত হতে চাইছেন কিংবা নিম্নবিত্তের চেয়ে একটু উপরে আছেন বলে একটা আক্ষেপ। আগে ঘরে-ঘরে নজরুল-রবীন্দ্রনাথের ছবি ছিল। এখন সেগুলোর জায়গায় অন্যকিছু স্থান পেয়েছে।

এ জন্য আমি মোটেও হতাশ নই। যেহেতু মধ্যবিত্তের চরিত্র পাল্টে গেছে, আমাদের শিল্প-সাহিত্য চর্চার মাধ্যমও পাল্টে যাচ্ছে এবং যাবে। এ ক্ষেত্রে আগে পত্র-পত্রিকার যে ভূমিকা ছিল, এখন সে জায়গায় অন্তর্জাল এসে গেছে—ফেসবুক কিংবা গুগল এসে গেছে। এসব আসায় আগের সেই চিত্রটা নেই। আগে একেকটি পত্রিকাকে ঘিরে লেখকগোষ্ঠীর একটি বলয় তৈরি হতো, সেই বলয় কিন্তু এখন আর তৈরি হচ্ছে না। লেখক তৈরির ক্ষেত্রে পত্রিকার একটা ভূমিকা থাকে।

আমি নিজে ইত্তেফাক (দাদাভাই) থেকে বেরিয়ে এসেছি। এখনকার পত্রিকা নানান ইভেন্ট করে, কিন্তু সেই কাজটি করছে না। আমি আশাবাদী মানুষ। নতুন করে যারা আসবে, লিখবে কিংবা গাইবে। এই প্রতিকূল পরিবেশ অতিক্রম করেই লেখক এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

লুৎফর রহমান রিটন। ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: সময় কিংবা মাধ্যম বদলেছে ঠিক, কিন্তু অগ্রজ আর অনুজদের সম্পর্কও কি ভেঙে গেছে মধ্যবিত্তের মতো?

লুৎফর রহমান রিটন: আগে সম্পর্ক ছিল আত্মিক, এখনকার সম্পর্ক লোক দেখানো। অতীতে বড়রা অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করে ভূমিকা রাখতেন। আমাকে যদি বলেন, ৬২ বছর বয়সে আপনি কি ভূমিকা রাখেন অগ্রজ হিসেবে? আমি বলবো, আমি রাখার চেষ্টা করি, পেরে উঠি না। আত্মকেন্দ্রিক একটা জীবনকে যাপন করি তো প্রত্যেকেই। এই আত্মকেন্দ্রিক যখন আমরা হয়ে গেছি, সারাবিশ্বেই এই পরিবর্তন এসে গেছে, এখন 'হিজ হিজ হুজ হুজ' ঘটনা ঘটছে।

প্রবীণরা তরুণদের বুকে ঠাঁই দেন না, তরুণরা সেরকম করে বড়দের সম্মান করেন না; মান্যতা দেখাতে চান না এবং সেটা আমি সমর্থন করি; তরুণরা কখনো পরাভব মানতে চান না—এটা স্বাভাবিক। তারা সব অচলায়তন ভেঙে দিতে চান। কিন্তু তাদের মননের, মেধার প্রকাশ ঘটে না। আমি চাই তারা মন ও মননশীলতার বিকাশ ঘটানোর মাধ্যমে অগ্রাহ্য করবে এবং এগিয়ে যাবে। সুতরাং, অগ্রজ ও অনুজ সম্পর্কের বিরাগের অভিযোগ একদিকে নয়, বরং দুইদিকেই।

ডেইলি স্টার: এর ফলেই কি সাহিত্যে প্রতিভাবানদের দেখা যায় না?

লুৎফর রহমান রিটন: শিল্প-সাহিত্যে মেধাবী মানুষ প্রতি বছর আসে না, পরিবর্তন ঘটায় না। দুই-দশক তিন-দশক, চার-পাঁচ দশক পরপর এক-দুজন মেধাবীকে আমরা পাই। স্বাধীনতার পর শিল্প-সাহিত্যে কতজন উজ্জ্বল মানুষকে পেয়েছেন? ১৯৭১-৭২ সাল থেকে যারা উজ্জ্বল মানুষ ছিলেন, তারা আজও শিল্প-সাহিত্যের আকাশে দীপ্যমান। তারপর কতজন এসেছেন নতুন? আসেননি খুব একটা। অনেকে আমার উপর ক্ষিপ্ত হবেন; আছেন হয়তো কেউ কেউ; কিন্তু হিমালয়স্বরূপ উচ্চতা নিয়ে ধরা দিচ্ছেন না। তবুও আমি আশায় আছি।

ডেইলি স্টার: রাষ্ট্র বলছে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আপনি বলছেন মেধাবীদের অভাব। তাহলে এই এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে মেধা ও মননের সমন্বয় কি নেই?

লুৎফর রহমান রিটন: চিরকালই শিল্পের বিকাশ যখন ঘটে তখন শিল্প-সাহিত্যের সঙ্গে মেধার বিকাশ অনেক সময় হাত ধরাধরি করে হাঁটে না। বন্ধ্যা কিংবা বন্ধ সময়ে বিকাশটা বেশি হয়, সুফল ফলে। শিল্পী-সাহিত্যিকরা বাধাপ্রাপ্ত হলে আরও বেশি উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন। তারা যখন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বিরাজ করেন, তখন তারা ঝলসে ওঠেন না।

কবি-সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিক অগ্রবর্তী। তারাই দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়ে সমাজকে এগিয়ে নেবেন। অন্ধকারকে দূরে ঠেলে সমাজকে আলোকিত করবেন। রাষ্ট্র এগিয়েছে ঠিক, মেধার বিকাশ তুলনামূলক কম হয়েছে। তবে উন্নয়নের সঙ্গে মেধার কোনো দ্বন্দ্ব নেই, কোনো যোগসূত্রও নেই। পৃথিবীর দেশে-দেশে এমনটি ঘটেছে। সামরিক শাসনামলে আমরা যখন লেখালেখি করেছি, তখন উজ্জ্বল ফসল পেয়েছি। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে উজ্জ্বল শিল্প নির্মাণ হয় না।

লুৎফর রহমান রিটন। ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: সংকটে লেখালেখির কথা বলছেন—বর্তমানে গণতন্ত্র, বাক-স্বাধীনতা কিংবা রাষ্ট্রীয় অন্ধকার আছে বলে মনে করেন কি? এই সময়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কতটা?

লুৎফর রহমান রিটন: লেখকরা যখনই মনে করবেন যে এখন প্রতিবাদ হওয়া উচিৎ, তখনই প্রতিবাদ করবেন। প্রতিবাদ করতে কে বাঁধা দিচ্ছে! এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আছি। গণতন্ত্র কিংবা বাক-স্বাধীনতার আমি অভাব দেখি না। টেলিভিশন টকশোগুলো আমি খেয়াল করি—সেখানে ধুয়ে দিচ্ছে, প্রতিবাদ হচ্ছে। কথা বলতে দিচ্ছে না, এমন পরিবেশ এখন নেই। হয়তো সমাজ যাদের থেকে আশা করে, তাদের কেউ-কেউ কথা বলছেন না; সেটি তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।

সুতরাং, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে এবং বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চিরকাল এরকমই ছিল। স্বাধীনতার পর থেকে ধরে ধরে আগালে দেখা যাবে যে কখন কেমন পরিস্থিতি ছিল। দেশে দেশে এর চরিত্রের ভিন্নতা থাকতে পারে; প্রতিটি দেশের বাস্তবতা আলাদা।

আমেরিকা, কানাডার গণতন্ত্রের সঙ্গে বাংলাদেশকে মেলালে চলবে না। আমাদের জনগোষ্ঠী, শিক্ষা, মূল্যবোধ, অতীত, ঐতিহ্য, বর্তমান সবকিছু মিলিয়েই কিন্তু দেখতে হবে যে গণতন্ত্রের চর্চা কেমন। সুতরাং, দেশের বাস্তবতাকেও মনে রেখে আগাতে হবে।

লুৎফর রহমান রিটন। ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: গত সপ্তাহে নাগরিক দুর্ভোগ নিয়ে পোস্টার ডিজাইন করায় মামলা ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কবি শামীম আশরাফকে। তারপর মানববন্ধন ও প্রতিবাদ করা হয়। এরপর তিনি জামিন পান। এই বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখবেন?

লুৎফর রহমান রিটন: এটা অন্যায়। একে আমি সমর্থন করি না। তাকে কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তারা যে অন্যায় করেছে, তা মাথা পেতে স্বীকার করে নিয়েছে। অতিউৎসাহী হয়ে কেউ করেছেন এটা।

আমি মনে করি, যে দেশে থাকবেন, সে দেশের আইন মেনে চলতে হবে। সেই আইনে ঝামেলা থাকলে তা নিয়ে মতামত দিতে পারেন। জনস্বার্থবিরোধী আইন হলে মানববন্ধন হবে, প্রতিবাদ হবে—সরকার বাধ্য হবে সেই আইন পরিবর্তন করতে।

ডেইলি স্টার: বঙ্গবন্ধু দীর্ঘসময় কারাগারে ছিলেন স্বাধীনতা অর্জনে জনগণকে উস্কে দেওয়ার প্রশ্নে। শামীম আশরাফও নাগরিকদের অধিকার সচেতন করার জন্য প্রচারণা চালিয়েছিলেন—নাগরিক হিসেবে তিনি এটা পারেন না?

লুৎফর রহমান রিটন: একজন নাগরিক হিসেবে করতে পারেন এবং তার প্রতি অন্যায় হয়েছে বলে রেহাইও দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, সাধারণ মানুষ তার পক্ষে আছে। তবে মনে রাখতে হবে যে, কেউ কেউ অতিউৎসাহী হয়ে বেআইনি কাজ করে ফেলতে পারেন। এ সরকারের আমলে নাগরিক তার অধিকার বুঝে নেবে, তা-ই প্রাসঙ্গিক। তবে প্রতিবাদও যৌক্তিকভাবে হতে হবে।

সুজন চৌধুরীর আঁকা কার্টুনে লুৎফর রহমান রিটন। ছবি: লুৎফর রহমান রিটনের ফেসবুক থেকে

ডেইলি স্টার: অনেক গুণী শিল্পী দুহাত ভরে অর্থ উপার্জন করেন জীবনভর। শেষ সময়ে রাষ্ট্রের কাছে সাহায্য চান—শিল্পীর জন্য এটা কি সম্মানজনক? প্রজন্ম এটাকে কীভাবে দেখে?

লুৎফর রহমান রিটন: শিল্পীর জন্য এটা মোটেও সম্মানজনক না। আর তারা দুহাত ভরে অর্থ উপার্জন করেন ঠিক, কিন্তু সঞ্চয় করেন না। রাষ্ট্রের এরকম একটি ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন তাদের জন্য যারা শেষ সময়ে কষ্টে থাকেন। সরকারের এরকম ব্যবস্থা থাকলেও তা পর্যাপ্ত না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসলে সমাজের কল্যাণ হবে।

ডেইলি স্টার: মরণোত্তর পুরস্কারকে কীভাবে দেখেন আপনি?

লুৎফর রহমান রিটন: একজন শিল্পীর কাজকে জীবিত থাকতে মূল্যায়ন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ, জরুরি। কেননা, একজন কবি-সাহিত্যিক কখনো অর্থবিত্ত কিংবা বৈভবের ধার ধারেন না। একটু ভালোবাসা চান। সেটা তাকে জীবিত অবস্থায় দেওয়াটাই বাঞ্ছনীয়।

ডেইলি স্টার: শিশুসাহিত্যিকদের সঙ্গে কবি-কথাসাহিত্যিকদের সম্পর্ক সংকুচিত হয়ে থাকে কেন?

লুৎফর রহমান রিটন: এটা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে। সমাজে শিশুসাহিত্যিকরা এমনই অবহেলিত। তারা আবার নিজেদের আরও দূরে রাখেন, যা স্বাভাবিক আচরণ না। তবে তাদের শক্তিশালী পাঠ জরুরি। নিবিড় মন ও মননশীলতা এই সংকুচিত থাকা বা দোলাচল কাঁটাতে পারবে বলে মনে করি।

অনুলিখন: শাহাদাত সুফল

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

16h ago