রক্তস্নাত শহিদের একুশের মর্মবাণী, কী মর্যাদা দিচ্ছি আমরা 

প্রশ্ন হলো ভাষার জন্য যে রক্ত দান-সেই রক্তের প্রতি রাষ্ট্রের দায় কতটুকু? সেই রক্তের প্রতি রাষ্ট্র কতটা সম্মান দেখাতে পারছে?

অক্ষর বা বর্ণ ক্ষয়হীন এক অমর প্রতীক। মানুষের সামষ্টিক পরিচয়ের সূচক। বর্ণহীনতা মূলত পরিচয়হীনতা। গায়ক কবীর সুমন সম্প্রতি তার এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন- ''ভাগ্যিস বাংলাদেশ হয়েছিল, ভাগ্যিস বাহান্নয় ঘটেছিল একুশ... ভাগ্যিস আমার মাভাষা বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা!"

মানুষের আসক্তি তার ভাষাতে। ভাষাহীনতায় নেই জীবনের স্বাদ। ভাষা ভাবের আধার। চিন্তা ততদূর যায় যতদূর যায়  ভাষা। ভাষা কেবল চিন্তা-চর্চা বা যাপিতজীবনের অংশ নয় বরং ভাষাই ঈশ্বর আর কণ্ঠস্বর নিঃসৃত ধ্বনিই বার্তা বা দূত। ভাষা অমিত সম্ভবনার আধার। ভাষা বধ করতে পারলে একটি জনগোষ্ঠী বধ করা কঠিন হয় না।

ইতিহাসে দেখা গেছে, ভাষাকে হত্যার তৎপরতার গভীর কাজ করেছে ভাষাভিত্তিক জনগোষ্ঠীকে পরিচয়হীন বা নিঃচিহ্ন করার অশুভ ইচ্ছে। এটি আধিপত্য ও শাসনের বলয় বিস্তৃত ও একীকরণ প্রক্রিয়া চরম করে তোলে। আধিপত্যশীল গোষ্ঠীর কাছে অন্যের ভাষা ভয়ের প্রধান কারণ। ধর্মভিত্তিক, মতাদর্শিক এবং রাজনৈতিক আধিপত্যের প্রথম খড়গ পড়ে ভাষার ওপর।

সৈয়দ মুজতবা আলী পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা শীর্ষক প্রবন্ধে (১৯৪৭ সালের ৩০ নভেম্বর সিলেটের মুসলিম সাহিত্য সংসদে তিনি এ ভাষণটি দিয়েছিলেন যা ১৯৫৬ গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হয়) ভাষা আধিপত্যের জরিপ তুলে ধরেছেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পরপর তিনি দ্বিধাহীণ কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন-পূর্ব পাকিস্তানের অনিচ্ছা সত্ত্বেও যদি তার ঘাড়ে উর্দু চাপানো হয় তবে স্বভাবতই উর্দু ভাষাভাষী বহু নিষ্কর্মা শুধু ভাষার জোরে পূর্ব পাকিস্তান শোষণ করার চেষ্টা করবে।...এর ফলে জনসাধারণ একদিন বিদ্রোহ করে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।'' 

ভাষার ওপর যে কোনো আগ্রাসন টিকেনি এজন্য তিনি অমুসলিম দেশগুলোর তুলনায় মুসলিম দেশগুলোর তথ্য তুলে ধরেছেন। তিনি উল্লেখ করেন- ''আরব ও ইরানের (পারস্যের) মানচিত্রের দিকে তাকালেই দেখতে পাবেন যে এ দু' দেশের মাঝখানে কোনো কোনো তৃতীয় দেশ নেই। অর্থাৎ আরবদেশের পূর্ব সীমান্তে যেখানে আরবী ভাষা এসে শেষ হয়েছে ঠিক সেখান থেকেই ফার্সী আরম্ভ হয়েছে। উত্তর পশ্চিম সীমান্তে ও যেখানে আরবী ভাষা শেষ হয়েছে সেখান থেকেই তুর্কী ভাষা আরম্ভ হয়েছে। সকলেই জানেন, খলিফা আবু বকরের আমলে মুসলিম আরবেরা অসমুসলিম দখল করে।...ইরানদেশে সর্বত্র তখন আরবী মক্তব-মাদ্রাসার ছড়াছড়ি, আরবী- শিক্ষিত মৌলবী- মৌলনায় ইরান তখন গমগম করত। তবে কেন তিনশত বৎসর যেতে না যেতে ফাসীভাষা মাথা খাড়া করে উঠল? দশম শতাব্দির শেষ ভাগে দেখতে পাই ফার্সীভাষার নবজাগরণের চাঞ্চল্য সমস্ত ইরান ভূমি ক্ষুদ্ধ করে তুলেছে।"

সৈয়দ মুজতবা আলী আরও উল্লেখ করেন, ইরানের মতো একদিন তুর্কীতেও আরবি চালাবার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা সফল হয়নি। ভাষা আন্দোলনে ভারতের পরিপ্রেক্ষিত দেখে নেওয়া যেতে পারে। তরুণ লেখক তানভীর আনজুম তাঁর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন-তৎকালীন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে বসবাস করতো মূলত দুটি ভাষাভাষী জনগণ। তামিলভাষী আর তেলেগুভাষী। মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে তামিলদের আধিপত্য ছিল সবচেয়ে বেশি। সুতরাং, তেলেগুভাষী জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিবেচনায় শ্রী রামুলু মাদ্রাজ  প্রেসিডেন্টসিয়াল গভর্মেন্টকে ভাষার ভিত্তিতে আলাদা রাজ্য গঠনের জন্য বল প্রয়োগ করতে থাকেন। 

ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর এই আন্দোলন আরও বেগবান হয়। কিন্তু তৎকালীন জেভিপি (জওহরলাল,বল্লভভাই, পাট্টাভি) কমিটি রামুলুর দাবি মেনে নেয়নি। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শ্রী রামুলু ১৯৫২ সালের ১৯ অক্টোবর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটানা ৫৬ দিন তিনি "ভাষার ভিত্তিতে  একটি নতুন রাজ্য" গঠনের লক্ষ্যে আমৃত্যু অনশন কর্মসূচি পালন করেন। অবশেষে, ১৯৫২ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে এই অকুতোভয় ভাষাসৈনিক অনশনরত অবস্থায় মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে আন্দোলন সমগ্র মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে, শ্রী রামুলুর মৃত্যুর তিন দিন পর ১৯৫২ সালের ১৯ ডিসেম্বর তৎকালীন ভারত প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু অন্ধ্রপ্রদেশকে আলাদা একটি রাজ্য হিসেবে স্বকৃতি দেন।

ইতিহাসে দেখা যাচ্ছে, অন্যের ভাষার ওপর হাত দিলে তার ফল শুভ হয় না। অনেকক্ষেত্রে তা হয়েছে সম্পূর্ণ উল্টো। বাংলাদেশে ও ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ সৃষ্টির পেছনে মূল প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে রাষ্ট্র বা প্রদেশিক ভাষার মর্যাদা। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ঘিরে মূলত বাঙালি জাতীয়তাবাদ ধারণা বিকশিত হয়েছে, পরিপক্ক হয়েছে। একটি স্বাধীন দেশের নিশানা স্থির হয়েছে। ভাষা একটি জাতিগোষ্ঠকে বিনাসূতার মালার মতো গেঁথে রাখে। অনুভবের আবেশে রাখে। ভাষা হলো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে সাধারণ লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া সবচেয়ে বড় শক্তি। তাত্ত্বিক রেমন্ড ইউলিয়াম একেই বলেছিলেন 'অনুভব কাঠামো'। বাঙালি মানস বুননের মূল রসদ বাংলা ভাষা।

বাংলা ভাষা নানা দিক থেকে বৈচিত্র্যময়। তার একটি বিশেষ দিক হলো সংকরপ্রবণতা। সংযুক্তিপণা। বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে তা ঘটেছে প্রবল গতিতে। সংস্কৃতি, ইংরেজি, ফার্সী, হিন্দি, উর্দু, চীনা, আরবি এমন অনেক ভাষায় শব্দ ঢুকেছে বাংলা ভাষায়। বাংলার দুহিতা অনেক। আসলে পৃথিবীতে বিশুদ্ধ ভাষা বলে কিছু নেই। সব ভাষাতে শব্দের অনুপ্রবেশ ঘটে, আত্মীকরণ হয়। এর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ভাষা ক্রমশ ঋদ্ধ হয়। বাংলা ভাষাও আলিঙ্গনপ্রিয় ভাষা। এ ভাষায় আশা বিদেশী কোনো শব্দ বেখাপ্পা বা বেমানান মনে হয় না। এ ভাষার মধ্যে রয়েছে অন্য ভাষা আপন করার এক অদম্য শক্তি- এ শক্তি বাংলা ভাষাকে বাড়বাড়ন্ত ও সমৃদ্ধ করেছে।

সৈয়দ মুজতবা আলী একই প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, মুসলমান বিজয়ের পূর্বে মিশরের ভাষা তো আরবী ছিল না। মিশর জয়ের পর লক্ষ লক্ষ আরব মিশরে বসবাস শুরু করে ও কালক্রমে দেশের আদিম আধিবাসী ও বিদেশীতে মিলে গিয়ে যে ভাষা গড়ে উঠে তারি নাম মিশরী-আরবী। 

কলিম খান ও রবি চক্রবর্তী বঙ্গীয় শব্দার্থকোষসহ একাধিত গ্রন্থে বাংলা ভাষায় ক্রিয়াভিত্তিক রূপ তুলে ধরে মন্তব্যে করেছেন এ ভাষার মরে যাওয়ার বা হারিয়ে যাওয়ার কোনো আশংকা নেই। বাংলা ভাষার কাঠামোগত বিন্যাসের কারণে তা টিকবে অনন্তকাল। অন্যদিকে বাংলা ভাষা কখনও রাজভাষার মর্যাদা পায়নি। বাংলার সেটা দরকারও হয়নি। মোঘল আমলে ফার্সি আর ইংরেজ আমলে ইংরেজির প্রবল দাপটে বাংলা হারিয়ে যায়নি। কারণ বাংলা ভাষার অবস্থান সমাজের নিচুস্তরে। আর যার অবস্থান নিচে সন্ত কবীরের বয়ানে তাই সমৃদ্ধ। 

বাংলা ভাষা সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা। কৃত্রিমতাবর্জিত এক আপনভাষা। কলিম খান ও রবি চক্রবতী বক্তব্য আরেটু দেখে নেওয়া যাক-একসময় সমাজের অধিপতি শ্রেণি সংস্কার করে সংস্কৃত ভাষা বানিয়েছিল। এ ভাষার ওপর ভিত্তি করে তারা শাস্ত্রচর্চা করতো। শাস্ত্রে সাধারণ মানুষের প্রবেশগম্যতা ছিল না। সংস্কৃত ভাষাকে কেন্দ্র করে আধিপত্যবাদী মনোভাবের কারণে এর মৃত্যু ঘটেছে। বাংলা যেহেতু সাধারণ মানুষের ভাষা ফলে আজও তা ঠিকে আছে।
 
এতো আপন ও স্বজনতোষী ভাষার ওপর পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী আক্রমণ করলো। বাঙালি বুঝেছে এ আঘাত তার মর্মমূলে। সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষ বিশেষত ছাত্র ও শ্রমিক প্রতিবাদে রাজপথে নেমে পড়ে। বদরুদ্দীন উমরের পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি গ্রন্থে দেখা গেছে, প্রথমদিকে শিক্ষিত শ্রেণির কাছে রাষ্ট্রভাষার প্রসঙ্গটি প্রণিধানযাগ্য হলেও ক্রমশ তা শহরের গণ্ডি ছাড়িয়ে মফস্বলের শহর এবং নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তের মধ্যে বিস্তৃত হয়েছে। 

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির অভিজ্ঞতা নিয়ে হাসান হাফিজুর রহমানের সম্পাদনায় প্রথম সংকলনটি বের হয় ১৯৫৩ সালের মার্চ মাসে। এ প্রকাশনার শুরুতে উল্লেখ করা হয়েছে-...এক ঝলক আর্শীবাদের আলোর মতো এলো একুশে ফেব্রুয়ারি। শহীদের আত্মদান সমগ্র আন্দোলনকে এমন এক মহিমায় ম-িত করল যে দেশের আপামর সাধারণ মানুষ প্রতিক্রিয়ার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা এই আন্দোলনে সামিল হতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা বোধ করল না। প্রথম দিকে ছাত্র ও শহরের মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীদের উদ্যোগে ভাষা ও সংস্কৃতির এই আন্দোলনের সূত্রপাত হলেও ছড়িয়ে গেলো দেশের আনাচে কানাচে, গ্রাম-গ্রামান্তরের সুদূরতম প্রান্তে।"

''রাষ্ট্র ভাষা বাঙলা চাই'' স্লোগান বুকে ধারণ করে যাঁরা এ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিলেন তাঁদের ঋণ অপ্রতিশোধ্য। বাংলা ভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে এটি সর্বোচ্চ আত্মদান। ভাষা আন্দোলনে শহিদ আটজনের পরিচিতি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আবুল বরকত, রফিক উদ্দীন, শফিউর রহমান ছিলেন ছাত্র আর আবদুল জব্বার ছিলেন গ্রামীণ কর্মজীবী এবং  আবদুস সালাম ছিলেন রেকোর্ড কিপার, মো. অহিউল্লাহ শিশুশ্রমিক ও একজন বালক (যাঁর পরিচয় জানা যায়নি। ভাষা আন্দোলনে ছাত্র ও সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগ ও অংশগ্রহণ ছিল বেশি। ভাষা আন্দোলন মূলত সাধারণ মানুষের আন্দোলন, গরিব মানুষের আন্দোলন।

৫২-এর ভাষা আন্দোলন নির্ভেজাল রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন। ভাষা প্রশ্নে রাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করার আন্দোলন। ভাষাভিত্তিক পরিচয় নির্ধারণের আন্দোলন। এ আন্দোলনকে পরে জাতীয় ভাষা, মাতৃভাষা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা নানা অভিধায় অভিহিত করা হলো। ভাষা আন্দোলন কেবল রাজনৈতিক বিষয় নয় এর পেছনে কাজ করেছে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিপ্রেক্ষিতও। আতিউর রহমান ও লেলিন আজাদ ভাষা আন্দোলনের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সংস্কৃতিক পটভূমি বিশ্লেষণ করে তিন খ-ে প্রকাশিত গবেষণা গ্রন্থে তা নিপুণভাবে তুলে ধরেছেন।

প্রশ্ন হলো ভাষার জন্য যে রক্ত দান-সেই রক্তের প্রতি রাষ্ট্রের দায় কতটুকু? সেই রক্তের প্রতি রাষ্ট্র কতটা সম্মান দেখাতে পারছে? রাষ্ট্র বাংলা ভাষার মর্যাদা সুরক্ষায় কতোটুকু আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিচ্ছে। সহজ করে বললে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারি অফিস-আদালতে যে বাংলা ভাষাচর্চা হচ্ছে তা একেবারে হ য ব র ল। আমলাতন্ত্রের নিচে ভাষার ওপর আঘাত আসছে প্রতিনিয়ত। তার অন্যতম দিক ভাষার অশুদ্ধ, বাংলা ও ইংরেজির মিশেল ও ভুল বানান প্রয়োগ। বাংলা ভাষার প্রতি এ এক নিদারুণ প্রেমহীনতা। সাধারণত শুদ্ধ, সমৃদ্ধ ও পরিশীলত ভাষা চর্চার বিশেষ কোনো তাগাদা সরকারি অফিস-আদালতে দেখা যায় না। 

বাংলা ভাষা চর্চা, মান সুরক্ষা এবং বানানের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সরকারি নির্দেশনা থাকলে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে গা করা হচ্ছে না। বাংলা ভাষার মর্যাদা সৃরক্ষায় রাষ্ট্রকে আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। তবে শহিদের রক্তের প্রতি যথাযর্থ সম্মান দেখানে যাবে। মনে রাখতে হবে, একুশের মর্মবাণী শহিদের রক্তস্নাত ও বিশ্বাসে অনন্য।

Comments