মিয়ানমার সংঘাত

নাফ নদীতে নৌকায় মিয়ানমারের নাগরিক, আবার অনুপ্রবেশের আশঙ্কা

মিয়ানমার সেনা ও সশস্ত্র আরাকান আর্মি গোষ্ঠীর মধ্যে অব্যাহত লড়াইয়ের মধ্যে রাখাইন রাজ্যের অনেক বাসিন্দা সীমান্তের নাফ নদীতে ছোট ছোট নৌকায় আশ্রয় নিয়েছে।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার কোস্টগার্ডের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট তাহসিন রহমান বলেন, দুই দেশের মধ্যে বয়ে যাওয়া নদীটিতে মিয়ানমারের কতজন নাগরিক আছেন তা জানা যায়নি।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রায় ২০০ মিয়ানমার নাগরিককে সীমান্ত থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা কাউকে নাফ পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেবো না, এ ব্যাপারে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।'

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জুবায়ের দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মিয়ানমারের লালবুনিয়া এলাকায় ৪০০ থেকে ৫০০ রোহিঙ্গা তাদের বাড়িঘর থেকে পালিয়ে নৌকায় নিয়েছে।

তিনি বলেন, এই রোহিঙ্গাদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে মোবাইল ফোনের সিগন্যাল পাওয়ায় কক্সবাজার ক্যাম্পে তাদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

তিনি আরও বলেন, উত্তর রাখাইনের মংডু শহরে এখন তীব্র লড়াই চলছে যেখানে অনেক রোহিঙ্গার বসবাস।

এদিকে গতকাল সীমান্তের ওপারের গুলি ও গোলাগুলির শব্দ টেকনাফ শহর, শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে শোনা গেছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, আমি আমার বাসা থেকে গুলির শব্দ শুনেছি। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে অসংখ্য গুলি ও মর্টার শেল বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে। বান্দরবানে সীমান্তবর্তী এলাকার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় মানুষজন। এছাড়াও গুলি ও মর্টার শেলে বাংলাদেশে কমপক্ষে দুই জন নিহত হন, আহত হন বেশ কয়েকজন।

গতকাল টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন বলেন, স্থানীয়রা আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছেন।

তিনি আরও জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত সাবরাং থেকে মাঝেমধ্যেই গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে এবং শাহপরীর দ্বীপের লোকজন হেলিকপ্টার থেকে সেনাদের গুলি ছুড়তে দেখেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল বলেছেন, সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বাংলাদেশে পাচার হয়েছে।

তিনি বলেন, 'এগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। সীমান্তরক্ষী বাহিনী এগুলো জব্দ করেছে এবং যারা নিয়ে এসেছে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'

তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বিজিবি সদস্যদের সর্বদা সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

মিয়ানমার থেকে পালাতে চাইছে হাজারো মানুষ

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, জান্তা সরকার মিয়ানমার নাগরিকদের সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করায় দেশটির তরুণরা মিয়ানমার ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। গতকাল ইয়াঙ্গুনের থাই দূতাবাসে এক হাজারেরও বেশি মানুষ লাইনে দাঁড়ান ভিসার জন্য।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের বিরোধিতা দমনে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সব পুরুষ ও ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী নারীদের অন্তত দুই বছর দায়িত্ব পালনের অনুমতি দিয়ে একটি আইন কার্যকর করা হবে।

গত শনিবার এই ঘোষণার পর থেকে ইয়াঙ্গুনে থাই দূতাবাসে ভিসা চাইছেন মিয়ানমারের হাজারো তরুণ-তরুণী।

গতকাল, এএফপির এক সাংবাদিক ইয়াঙ্গুন শহরের কেন্দ্রস্থলে থাই মিশনের কাছে রাস্তায় এক হাজার থেকে দুই হাজার মানুষের সারি দেখেন।

দূতাবাস বলেছে যে তারা দিনে ৪০০ টিকিট ইস্যু করছে।

শিক্ষার্থী অং ফিও (ছদ্মনাম) এএফপিকে বলেন, তিনি বৃহস্পতিবার রাত থেকে দূতাবাসের সামনে অপেক্ষা করছেন।

Comments

The Daily Star  | English

FY26 Budget: Subsidy spending to hold steady

The budget for fiscal 2025-26 is likely to be smaller than the current year’s outlay, but subsidy spending is expected to remain almost unchanged at Tk 1,15,741 crore.

8h ago