মিয়ানমারে সংঘাত: নাফ নদীর ওপারে বিকট শব্দের পর ধোঁয়া

মিয়ানমার
ছবি: নাফনদীর ওপারে মিয়ানমারের একটি গ্রাম পুঁড়ছে আগুনে। এপারে হ্নীলার বাজারপাড়া থেকে ছবিটি ধারণ করেছেন হ্নীলা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ব্যবসায়ী তারেক মাহমুদ রনি।

চলমান সংঘাতের জের ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে টানা বিকট শব্দের পর দেখা গেছে আগুনের ধোঁয়া। কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা সীমান্তের ওপারে আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে এই ধোঁয়া দেখা যায়।

হ্নীলা সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের এলাকাটি বলিবাজার ও নাগাকুরা পাড়া।

হ্নীলা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ব্যবসায়ী তারেক মাহমুদ রনি বলেন, 'ওই দুই এলাকার মাঝামাঝি গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করছি। শুক্রবার সন্ধ্যার পর গোলাগুলির শব্দ কিছুটা কম শোনা গেছে। কিন্তু মধ্যরাতের পর থেকে গোলাগুলির শব্দের পাশাপাশি একের পর এক ভেসে আসতে থাকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। শনিবার ভোরের পর তা আরও বেড়ে যায়। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত আধা ঘণ্টা সময়ে পর পর ৪০-৫০টি বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। এরপর পরই দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখা গেছে আগুন। ওখানে গ্রামটিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এই আগুন দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেখা যায়। এরপর ধোঁয়া কমেছে।'

২০১৭ সালের রোহিঙ্গা সংকটেও এভাবে সীমান্তের ওপারে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'বিস্ফোরণের শব্দ আর আগুনের ধোঁয়ায় আতঙ্কিত এলাকার মানুষ।'

সীমান্তের লোকজন জানান, রাখাইন রাজ্যের মংডুর আশপাশের কয়েকটি গ্রামেও শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এপারে কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং, হ্নীলা, পৌরশহর ও সাবরাং কেঁপে উঠছে।

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, 'রাখাইন রাজ্যে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াইয়ে দুই দিন ধরে তীব্রতা বেড়েছে। নাফ নদীর ওপারে বিস্ফোরিত মর্টারশেলের বিকট শব্দে এপার কেঁপে উঠছে। সীমান্ত এলাকার হাজারও মানুষ খেত-খামারে যেতে পারছেন না।'

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ জালাল বলেন, মর্টার শেলের বিকট শব্দে তার এলাকায় কম্পন অনুভূত হচ্ছে। রাতের বেলায় ঘন ঘন কম্পনে শিশুদের ঘুম ভেঙে যাচ্ছে, অনেকে ভয়ে কান্নাকাটি করছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বিপরীতে নাফ নদীর বুকে জেগে ওঠা তোতারদিয়া দুই সপ্তাহ আগে আরাকান আর্মি দখলে নেয়। এখন মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী সেটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, রাখাইনে নতুন করে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তে গুলি এসে পড়ার খবর পাওয়া যায়নি। সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সর্তক রয়েছে।

তবে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের মানুষ তিন দিন ধরে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছেন না।

মিয়ানমারের রাখাইন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদস্যরা তৎপর বলে জানিয়েছেন টেকনাফের বিজিবি ব্যাটালিয়ন-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

1h ago