রাসেল-রাদারফোর্ডের তাণ্ডবে অস্ট্রেলিয়াকে হারাল উইন্ডিজ

ছবি: এএফপি

৭৯ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরল ব্যাটিং লাইনআপের অর্ধেক। সেই বিপর্যয়ে পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন আন্দ্রে রাসেল ও শেরফান রাদারফোর্ড। দুজনের তাণ্ডবে সৃষ্ট রেকর্ড ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে বড় পুঁজি গড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লক্ষ্য তাড়ায় ডেভিড ওয়ার্নারের ঝড়ে শক্ত ভিত পেলেও অস্ট্রেলিয়া থামল অনেক দূরে।

মঙ্গলবার পার্থে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৩৭ রানে জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ২২০ রান তোলে তারা। জবাবে অজিরা করতে পারে ৫ উইকেটে ১৮৩ রান। তবে প্রথম দুই ম্যাচ জেতায় সিরিজ আগেই নিজেদের করে নিয়েছে মিচেল মার্শের দল।

ম্যাচসেরা রাসেল স্রেফ ২৯ বলে খেলেন ৭১ রানের ইনিংস। ৪ চারের সঙ্গে তিনি মারেন ৭ ছক্কা। রাদারফোর্ড অপরাজিত থাকেন ৬৭ রানে। ৪০ বল খেলে ৫টি করে চার ও ছক্কা হাঁকান তিনি। দুজনই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলেন। ষষ্ঠ উইকেটে তারা গড়েন ৬৭ বলে ১৩৯ রানের রেকর্ড জুটি।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ভীষণ চাপে পড়ে ক্যারিবিয়ানরা। অজি পেসারদের তোপে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ১৭ রানের মধ্যে তারা হারায় ৩ উইকেট। জাভিয়ের বার্টলেট নিজের পরপর দুই ওভারে আউট করেন দুই ওপেনার জনসন চার্লস ও কাইল মায়ার্সকে। মাঝে নিকোলাস পুরানকে বিদায় করেন জেসন বেহরেনডর্ফ।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে রোস্টন চেজ ও অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল প্রতিরোধ গড়েন। ৩০ বলে তারা আনেন ৫৫ রান। এরপর ফের ছন্দপতন। ৭ রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন দুজন। ২০ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ রানের ইনিংস খেলা চেজকে বোল্ড করেন লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা। রভম্যান ১৪ বলে ৩ চারে ২১ রান করে শিকার হন অ্যারন হার্ডির।

ওই অবস্থায় বড় পুঁজি পাওয়া সফরকারীদের জন্য খুব কঠিন বলে মনে হচ্ছিল। চাহিদা ছিল অতিমানবীয় কিছুর। সেটাই করে দেখান রাদারফোর্ড ও রাসেল। তরতর করে বাড়তে থাকে রান। একাদশ ওভারে একশ ছোঁয়া উইন্ডিজ ১৬তম ওভারে দেড়শ ও ১৯তম ওভারে দুইশ পেরিয়ে যায়।

রাদারফোর্ড ফিফটিতে পৌঁছান আগে, ৩৩ বল মোকাবিলায়। এরপর রাসেল হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ২৫ বলে। তাদের তাণ্ডবে শেষ ৫ ওভারে ৮৪ রান জমা হয় স্কোরবোর্ডে। সবচেয়ে বড় ঝড়টা হজম করেন জ্যাম্পা। তার করা ১৯তম ওভারে ৪ ছয় ও ১ চারে রাসেল আনেন ২৮ রান। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে স্পেন্সার জনসন থামান রাসেলকে।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের বিব্রতকর কীর্তি গড়েন জ্যাম্পা। ৪ ওভারে তিনি দেন ৬৫ রান। আগের রেকর্ড ছিল পেসার অ্যান্ড্রু টাইয়ের। তিনি ২০১৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অকল্যান্ডে ৪ ওভারে দিয়েছিলেন ৬৪ রান।

রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে দারুণ ভিত পাইয়ে দেন ওয়ার্নার। মার্শের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে তিনি ৩৯ বলে ৬৮ ও হার্ডির সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৬ বলে ৪৬ রান যোগ করেন। এরপর এলোমেলো হয়ে পড়ে দলটি। ১৩তম ওভারে হার্ডিকে ফেরান রোমারিও শেফার্ড। পরের ওভারে ওয়ার্নার ও জশ ইংলিসকে স্পিনে আউট করেন চেজ।

ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে আসে ৮১ রান। ৪৯ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৯ চার ও ৩ ছক্কা। বাকিরা ছিলেন খোলসে বন্দি। মার্শ করেন ১৩ বলে ১৭ রান। হার্ডি খেলেন ১৬ বলে ১৬ রানের ইনিংস। ইংলিস আউট হন ৩ বলে ১ রান করে।

৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কা আর সামলে নিতে পারেনি অজিরা। পারেনি সামনে থাকা ওভারপ্রতি গড়ে প্রচুর রান তোলার সমীকরণ মেলাতে। অ্যাডিলেডে গত ম্যাচে বিস্ফোরক সেঞ্চুরি করা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ছিলেন গুটিয়ে। পাঁচে নেমে ১৪ বল খেলে তিনি করেন ১২ রান। টিম ডেভিডের ২ চার ও ৪ ছয়ে গড়া ১৯ বলে অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমায়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে চেজ ছিলেন বল হাতে দারুণ আঁটসাঁট। ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান খরচায় তিনি নেন ৩ উইকেট। সমান সংখ্যক উইকেট নিতে ৪ ওভারে শেফার্ড দেন ৩১ রান।

Comments

The Daily Star  | English
US election outcome’s likely impact on the Russia-Ukraine war

US election outcome’s likely impact on the Russia-Ukraine war

The endgame of the Ukraine war remains uncertain with US policy likely to be influenced by the outcome of the US election.

3h ago