কী দেখে বলবেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি—প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

কী দেখে বলবেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি—প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছেন, তাদের উদ্দেশে পাল্টা প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, 'এবারের যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, অবাধ-সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, বলে যে, নির্বাচন হয়েছে কিন্তু অবাধ-নিরপেক্ষ হয়নি, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, তাদেরকে সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে, কী কী ক্ষেত্র দেখে তারা বলবেন যে অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ হয়নি? সেটা তাদের বলতে হবে। তারা সেটা বলে না, তারা ওই একইভাবে বলে যাচ্ছে, অবাধ-নিরপেক্ষ হয়নি—হ্যাঁ, নির্বাচন হয়েছে।

'কিছু দেশীয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বলা হয়। যারা বলছে, যে কোনো দেশই বলুক, আমার তাদের কাছে এটাই প্রশ্ন; কীভাবে কোথায় সমস্যা সেটা তাদের বলতে হবে,' বলেন প্রধানমন্ত্রী।

আজ শনিবার সকালে গণভবনে আয়োজিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'পৃথিবীর বহু বড়, উন্নত দেশেও নির্বাচন হয়েছে সে নির্বাচনও এখন দেখা যাচ্ছে, বিরোধীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এমনকি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় এমন অবস্থা যে, অনেক জায়গায় খুনোখুনি হয়ে গেছে। বাংলাদেশে অন্তত এটুকু বলতে পারি, আমাদের জনপ্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রত্যেকে অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। যার জন্য আমরা নির্বাচনটা অবাধ-সুষ্ঠুভাবে করতে পেরেছি।'

আওয়ামী লীগকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পার করতে হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'তারপরও সফলভাবে গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুধু এই নির্বাচন না, ২০১৪ এর নির্বাচন, ১৮ এর নির্বাচন—প্রত্যেকটা নির্বাচনেই, নির্বাচনটা যাতে না হয় তার জন্য চক্রান্ত করা হয়েছে। কিন্তু বারবার আমরা সেটা মোকাবিলা করেই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকারে এসেছি।'

তিনি বলেন, 'এবারের নির্বাচন নিয়েও একটা বিরাট চক্রান্ত ছিল। চক্রান্তটা ছিল নির্বাচনই যেন না হয়। বাংলাদেশের মানুষের একটা নির্বাচিত সরকার হলে আর্থ-সামাজিক উন্নতি হচ্ছে, এটাই যেন অনেকের সহ্য হয়নি। তাই এমন একটা চক্রান্ত তারা শুরু করেছিল; বিএনপি নির্বাচনে আসবে না, আসে নাই। নির্বাচন বানচাল করার জন্য তাদের জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নি সন্ত্রাস। সেই ২০১৩ থেকে শুরু করেছিল, ২০১৪ এর নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি, ১৮-তে নির্বাচনে এসেও নিজেদের কারণে তারা নির্বাচনে জিততে পারেনি। কারণ ৩০০ সিটে যদি সাড়ে ৭০০ নমিনেশন দেয় জিতবে কোত্থেকে!

শেখ হাসিনা বলেন, 'ঠিক এর পরবর্তীতে ১৮-তে এসে তারা নির্বাচন চায় না। কী চায়? অনির্বাচিত সরকার; অথচ এই বিএনপি নেত্রী এক সময় বলেছিল, "পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ না"। আমি জানি না, ওরা পাগল আর শিশু খুঁজে পেয়েছিল কি না, সেটা বলতে পারব না। আসল কথা তা না—নির্বাচনটাই যাতে না হয়, কারণ তারা জানতো জনগণের কল্যাণে কাজ করে আজকে জনগণের আস্থা-বিশ্বাস আওয়ামী লীগ অর্জন করেছে। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগই সরকার গঠন করবে। যে কারণে তারা নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছিল।

'সেই সঙ্গে তারা যুগিয়েছিল তাদের কিছু প্রভু। তাদের নির্দেশ মতো আন্দোলন করে। এখনো কিছু কিছু লম্ফ-ঝম্প করছে, করতে পারে কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ দেশের জনগণের সংগঠন, এটা তাদের মনে রাখতে হবে। এটা ভেসে আসেনি বা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জেনারেলের পকেট থেকে এই সংগঠন বের হয়নি। মাটি-মানুষের ভেতর থেকে এই সংগঠন গড়ে উঠেছে,' বলেন তিনি।

মোট ৮১টি সংস্কার প্রস্তাব কার্যকর করে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'নির্বাচন কমিশন আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল, আমরা স্বাধীন করে দিয়েছি। আর্থিকভাবে নির্ভরশীল ছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওপর, আমরা বাজেটে আলাদা বরাদ্দ দিয়েছি এবং নির্বাচন কমিশন যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থাটা আমরাই করেছি। এই সাহস একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ পারবে না। আমরাই করেছি, কারণ জনগণের ওপর আস্থা-বিশ্বাস আমাদের আছে।'

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

6h ago