গোলাগুলি থামলেও আতঙ্কে মানুষ, আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে আত্মীয় বাড়িতে   

প্রশাসনের ঘোষণা করা ১নং উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র। গতকাল এই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যায় এখানে আশ্রয় নেওয়া সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার মানুষেরা। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমার সীমান্তে সংঘাতের গোলাগুলির শব্দ থামলেও বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ির সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার মানুষেরা আতঙ্কে দিন পার করছেন।

ঘুমধুম সীমান্ত এলাকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে চলে গেলেও সীমান্তে নিজের এলাকায় না গিয়ে বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ও জনপ্রতিনিধিরা।

মিয়ানমারের সংঘাতে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টারশেলে দুই বাংলাদেশি নিহতের পর গত সোমবার ১নং উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। সেখানে ২৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। গতকাল থেকে গোলাগুলির শব্দ না থাকায় তারা আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যান।

গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় ১নং উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়ের কক্ষগুলো বন্ধ ও তালা ঝোলানো।

এই স্কুলটি ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরত্বে থাকায় যথেষ্ট নিরাপদ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি পরিস্থিতিতে আশ্রয়কেন্দ্রে হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের চা দোকানে দেখা হয় স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে।

তাদের মধ্যে বাবুল মিয়া মঙ্গলবার ঘুমধুম, তুমব্রু, পশ্চিমকুল ও বাইঁশ ফাঁড়ির সীমান্ত এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে আসা ২৭টি পরিবারের ১২০ সদস্যকে রান্না-বান্নাসহ বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছেন বলে জানান।

'পরে সীমান্তে গোলাগুলি ও উত্তেজনা কিছুটা কমে যাওয়ায় তারা গতকাল সকাল থেকে একে একে নিজ বসতভিটায় চলে গেছে বলে জেনেছি। শুনেছি অনেকে আত্মীয়ের বাসায় এখনো আশ্রয়ে আছে,' বলেন বাবুল।

আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয়ে থাকা জাহাঙ্গীর আলম (৪০) ও ইসমত জাহান (৩৪) দম্পতির সঙ্গে কথা হয়। ইসমত জাহান বলেন, তারা তার ননদের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। আসার সময় ঘরে থাকা একটি গাভী ও দুটি বাছুরসহ তিনটি গরু সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন।

স্বামী গ্রাম এলাকায় কৃষি শ্রমিকের কাজ করেন। সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেও সকাল থেকে সীমান্ত এলাকায় কাজে যান।

ইসমত জাহান জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীন একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার গ্রামভিত্তিক শিশুশিক্ষা কার্যক্রমের পাড়া কেন্দ্রের শিক্ষিকা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন তিনি। স্কুলে গেল বছরে ২৫ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে বর্তমানে আছে ১৫ জন। মিয়ানমার সীমান্তে সংঘাতের ঘটনায় পাড়া কেন্দ্রটি বন্ধ আছে। সীমান্তে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না বলেও জানান তিনি।

ঘুমধুম ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ঘুমধুম সীমান্তে গতকাল সকাল থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনা না গেলেও গত ৩-৪ দিন ধরে ঘটে যাওয়ার ঘটনায় এখানকার স্থানীয়দের মনে আতঙ্ক কাটেনি। তারা তাই নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না।

 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

1h ago