একই মামলায় ১৬ জনের জামিন, পাননি ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্টার ফাইল ফটো

গত বছরের ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৬ আসামি জামিন পেলেও একই মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখনো নিম্ন আদালত কিংবা হাইকোর্ট থেকে জামিন পাননি।

৭৬ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ এখন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামিন চাইবেন, কারণ তিনি কোনোভাবেই ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে দ্য ডেইলি স্টারকে গত শুক্রবার জানিয়েছেন তার আইনজীবী মো. সগীর হোসেন।

'এই মামলায় তার জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়া গত ১০ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আমার মক্কেলের (মির্জা ফখরুল) পক্ষে আজ (রোববার) বা আগামীকাল (সোমবার) আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে,' বলেন তিনি।

হাইকোর্ট বলেছে, 'আবেদনকারী (ফখরুল) ঘটনার মাস্টারমাইন্ড কিনা বা বিপর্যয়কর, বিশৃঙ্খল ঘটনাগুলিতে কোনো ভূমিকা ছিল কিনা তা কেবল সুষ্ঠু তদন্তের পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে, তবে তদন্তে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য, আমরা মনে করি যে এই পর্যায়ে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া ঠিক হবে না।'

রায়ের পূর্ণাঙ্গ বিবরণীতে আরও বলা হয়, সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালত এই মামলায় অভিযুক্ত আবেদনকারীর সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছেন।

গত ২৯ অক্টোবর রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় প্রায় ৭২ জনকে আসামি করা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস প্রধান আসামি এবং একই দিনে গ্রেপ্তার হওয়া মির্জা ফখরুল ২ নম্বর আসামি।

সগীর হোসেন জানান, '২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে দায়ের করা ১১টি মামলার আসামি ফখরুল একজন প্রবীণ নাগরিক এবং তিনি ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।'

সগীর আরও জানান, পুলিশ কনস্টেবল হত্যার ঘটনায় দায়ের করা একটিসহ ১০টি মামলায় সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ফখরুলকে জামিন দিয়েছেন।

ভাঙচুরের মামলায় নিম্ন আদালত থেকে জামিন পাওয়া ১০ জন এফআইআরভুক্ত আসামি হলেন- মো. নাসির উদ্দিন, মিজানুর রহমান মন্টু, মহিউদ্দিন মোহন, মো. শাহিনুর ইসলাম, মো. নুরুল ইসলাম, সোহেল আহমেদ, হারুন-উর-রশিদ, মো. ইমন, মো. ইমরান ও উজ্জল হোসেন। তারা এখন কারামুক্ত।

এছাড়া একই মামলায় বিএনপির ছয় নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল আউয়াল মিন্টু, জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও নিপুণ রায় চৌধুরীকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মির্জা ফখরুলের আইনজীবী বলেন, হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ পাঠে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগ রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন, যদিও আপিল বিভাগ এক রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, রাজনৈতিক আন্দোলনের মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা যায় না।

অপর এক রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, একই মামলার সহ-আসামি জামিন পেলে কোনো আসামি জামিন পেতে পারেন।

ফখরুলের আপিল প্রথমে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির কাছে যাবে। চেম্বার বিচারক তাকে জামিন না দিলে তা আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হবে বলে জানান সগীর।

তিনি আরও জানান, গত ২৯ অক্টোবর ম্যাজিস্ট্রেট প্রথমে ফখরুলের জামিন আবেদন নাকচ করে দেন। এরপর ২২ নভেম্বর ঢাকার সংশ্লিষ্ট জজ আদালত তার জামিনের আবেদন নাকচ করেন।

তিনি বলেন, গত ১০ জানুয়ারি বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নুরুদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল খারিজ করে দেন এবং কিছু পর্যবেক্ষণসহ ফখরুলের জামিন আবেদন খারিজ করেন।

যোগাযোগ করা হলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিএম আবদুর রাফেল ডেইলি স্টারকে বলেন, হাইকোর্ট মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছে কারণ তার বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্ররোচিত করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

মির্জা ফখরুলের ডাকে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হন, অনেকে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর করেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'দণ্ডবিধির ১০৯ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি যার তাগিদে ফৌজদারি অপরাধের ঘটনা ঘটে, তিনি এর দায় এড়াতে পারেন না।'

Comments

The Daily Star  | English

Moody's downgrades Bangladesh's ratings to B2, changes outlook to negative

“The downgrade reflects heightened political risks and lower growth, which increases government liquidity risks, external vulnerabilities and banking sector risks, following the recent political and social unrest that led to a change in government,” said Moody’s.

1h ago