পেঁয়াজের ভরা মৌসুমেও দাম বেশি
ফসল তোলার ভরা মৌসুম হলেও গত তিন দিনে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা।
ঢাকার কারওয়ান বাজার ও শেওড়াপাড়া কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতারা গতকাল পেঁয়াজ কেজিতে বিক্রি করেছেন ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, যা তিন দিন আগে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা সজিব শেখ জানান, গতকাল তিনি খুচরা বিক্রেতাদের কাছে প্রতি কেজি ৮২ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন যা তিন দিন আগের তুলনায় ১০ টাকা বেশি।
শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মাজেদ দাম বৃদ্ধির জন্য গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেছেন।
পাবনার জ্যেষ্ঠ কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র সর্বোচ্চ মুনাফা লাভের জন্য কৃষকরা অকাল ফসল ঘরে তুলেছেন। এর ফলে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যার ফলে দাম বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ কিনতে কৃষকের বাড়িতে যাচ্ছেন, কিন্তু কৃষকের কাছে পর্যাপ্ত মজুদ নেই। ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, বলেন তিনি।
এদিকে ফসল তোলার মৌসুমে আলুর দামও বেড়েছে।
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোর খুচরা বিক্রেতারা গতকাল প্রতি কেজি আলু বিক্রি করেছেন ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ৫ টাকা বেশি।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা মোহাম্মদ সবুজ জানান, গতকাল তিনি খুচরা বিক্রেতাদের কাছে প্রতি কেজি আলু বিক্রি করেছেন ৩৮ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৪ টাকা।
গতকাল এক ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩৫ টাকা।
রপ্তানি কমানো এবং অভ্যন্তরীণ যোগান বৃদ্ধি এবং ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ভারত প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার বেঁধে দেয়, যা আমদানিকারকরা যে দামে কিনছেন তার চেয়ে অনেক বেশি।
এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর দেশটি পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
দাম কমেনি চালের
ব্যবসায়ীদের চার দিনের মধ্যে দাম কমানোর জন্য সরকার সময় বেঁধে দিলেও গত তিন সপ্তাহের তুলনায় গতকালও ঢাকার কাঁচাবাজারে চালের দাম অপরিবর্তিত।
গত ১৭ জানুয়ারি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার দাম কমানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পর চাল ব্যবসায়ী ও মিলাররা দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
তিন সপ্তাহ আগে চালের খুচরা দাম কেজিতে ২ থেকে ৮ টাকা বাড়ে, যা ইতোমধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বর্ধিত দামের সঙ্গে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ওপর আরও বোঝা হয়ে ওঠে।
পাইকারি বাজারে গত কয়েকদিন ধরে দাম প্রতি কেজিতে ১ থেকে দেড় টাকা কমলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব এখনো পড়েনি।
ব্যবসায়ীরা মনে করছেন খুচরা দাম কমতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগবে কারণ খুচরা বিক্রেতারা তাদের আগের স্টক বেশি দামে কিনেছিলেন।
উত্তরাঞ্চলের প্রধান চাল পাইকারি কেন্দ্র নওগাঁর চাল ও ধান আড়তদার ও পাইকার বিক্রেতা সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা বলেন, সরকারের চাপের কারণে তারা চালের দাম কেজিতে ১ থেকে দেড় টাকা কমিয়েছে।
তবে চলতি মৌসুমে ধানের দাম বেশি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, ধানের দাম না কমলে চালের দাম কমার কোনো সুযোগ নেই।
Comments