চমেক হাসপাতালে ৩২ শয্যার আইসিইউ চালু হচ্ছে শনিবার

চমেক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক)। ছবি: সংগৃহীত

অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার নুর মোহাম্মদ চৌধুরী গত শনিবার হৃদরোগে আক্রান্ত হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। পরীক্ষা করার পর চিকিৎসক তাকে আইসিইউতে রাখার পরামর্শ দিলেও সে সময় হাসপাতালের ২০ শয্যার আইসিইউতে কোনো শয্যা খালি না থাকায় তিনি ভর্তি হতে পারেননি।

আইসিইউর চিকিৎসকরা তার পরিবারের সদস্যদের জানান, ভর্তি হওয়া রোগীদের কেউ মারা না যাওয়া বা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত নুর মোহাম্মদকে আইসিইউর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে নূর মোহাম্মদ বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে পারেননি। পরদিনই তিনি মারা যান।

নুর মোহাম্মদের মতো চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে শয্যা না পেয়ে প্রতিদিন অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন। হাসপাতালের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, আইসিইউর অভাবে দৈনিক মারা যাওয়া রোগীর সংখ্যা কমপক্ষে ১৫।

সংকটের এই পরিস্থিতিতে রোগীদের আশা দেখাচ্ছে নতুন চালু হতে যাওয়া ৩২টি শয্যা বিশিষ্ট আইসিইউর দ্বিতীয় ইউনিটটি। শনিবার সকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এই ইউনিটের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্মকর্তারা।

যোগাযোগ করা হলে, চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. রাজীব পালিত বলেন, হাসপাতালে আইসিইউ শয্যার জন্য প্রতিদিন অনেক চাহিদা থাকে, কিন্তু শয্যা সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের মধ্যে অনেকেই এখানে ভর্তি হতে পারেন না। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট শনিবার চালু হলে চট্টগ্রামের রোগীরা ব্যাপক উপকৃত হবেন।

জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার বিভাগের প্রধান ডা. হারুন-উর-রশিদ বলেন, ফুসফুসের মারাত্মক সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগীদের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এছাড়া হার্ট অ্যাটাক, ব্রেইন স্ট্রোক, বার্ন ইনজুরি, কিডনি ডায়ালাইসিস, ট্রমা এবং দুর্ঘটনার মাথায় আঘাত পাওয়া রোগীদের আইসিইউর প্রয়োজন হয়।

'চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ জন রোগী ভর্তি হতে আসেন, তবে শয্যা সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের মধ্যে বড় জোর এক-দুজনকে ভর্তি করানো যায়। আমরা নতুন রোগীকে কেবল তখনই ভর্তি করতে পারি, যখন চিকিৎসাধীন কোনো রোগী সুস্থ হয় বা মারা যায়।'

'আইসিইউতে ভর্তি হওয়া অনেক রোগী দুই থেকে তিন মাস পরে সুস্থ হন। এ কারণে অনেক রোগী আইসিইউতে ভর্তি হতে না পেরে মারা যান,' বলেন তিনি।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, আইসিইউতে শয্যা না পেয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ জন রোগী চমেক হাসপাতালে মারা যান। দরিদ্র রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউর চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারেন না। এমনকি সচ্ছল রোগীরাও বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে শয্যা পেতে হিমশিম খান, কারণ চট্টগ্রামের বেশিরভাগ হাসপাতালেই আইসিইউ নেই। তবে রোগীদের চাহিদা পূরণে ২২০০ শয্যার চমেক হাসপাতালে বর্তমানে কমপক্ষে ১০০ শয্যার আইসিইউ প্রয়োজন।'

তিনি বলেন, 'আগামী দিনগুলোতে আমরা ধীরে ধীরে আইসিইউতে শয্যা সংখ্যা বাড়াব।'

Comments

The Daily Star  | English

Beximco workers' protest turns violent in Gazipur

Demonstrators set fire to Grameen Fabrics factory, vehicles, vandalise property

2h ago