বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভোগান্তি
জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীরা।
শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা ৬ মাস বয়সী ছেলে ফাহিমকে নিয়ে গতকাল সোমবার আনোয়ারা থেকে চমেকে আনেন ফাতেমা বেগম। হাসপাতালের শিশু মেডিসিন ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা চলছে। কিন্তু, আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় শিশুটিকে নেবুলাইজ করা যাচ্ছিল না।
ফাতেমা বেগম বলেন, 'দিনে ৪ বার নেবুলাইজ করতেন চিকিৎসক। কিন্তু, দুপুর থেকে নেবুলাইজার চালানো যাচ্ছে না। কারণ বিদ্যুৎ নেই।'
সরেজমিন যায়, জেনারেটরের সাহায্যে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও সার্বিকভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে কয়েকটি ওয়ার্ডে। জেনারেটরের সাহায্যে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও বিভিন্ন ওয়ার্ডের দু'একটি বৈদ্যুতিক বাতি ছাড়া পাখা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। এমনকি নেবুলাইজার মেশিন চালানোর সকেটও বন্ধ রাখা হয়।
বিকেল সাড়ে ৪টায় হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের নেবুলাইজ করা যাচ্ছে না। ওয়ার্ডটিতে শতাধিক রোগী ভর্তি আছেন। ওয়ার্ডের চিকিৎসক ফারহানা নওরিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিদ্যুৎ না থাকায় নেবুলাইজ বন্ধ আছে। এসিও চলছে না। ফ্যানও সব সচল নেই।'
বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, গরমে রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। তাদের হাতপাখা বা বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে বাতাস করছেন স্বজনরা। ওয়ার্ডে দু-একটি বৈদ্যুতিক বাতি জ্বললেও পর্যাপ্ত আলো ছিল না।
অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডে ভর্তি এক রোগীর স্বজন নাছিমা খাতুন বলেন, 'হাসপাতালের বাথরুমে পানি বন্ধ হয়ে গেছে।'
জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, 'বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি। মোটামুটিভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। অস্ত্রোপচার কক্ষ, সিসিইউ, আইসিইউ চলছে। ওয়ার্ডে লাইট জ্বলছে। কিছু সমস্যা তো থাকবেই। তবে, আমরা তেল মজুত করে রেখেছি, যাতে বিদ্যুৎ না এলেও চালানো যায়।'
চমেক হাসপাতালে প্রতিদিন ২ থেকে আড়াই হাজার রোগী ভর্তি থাকেন।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো রেজাউল করিম বলেন, 'গ্রিড ফেইলিয়রের কারণে সমস্যা হয়েছে। দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে চেষ্টা চলছে।'
Comments