নাইট্রোজেন প্রয়োগে বিশ্বে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

নাইট্রোজেন প্রয়োগে বিশ্বে প্রথম মৃত্যুদণ্ড পেতে যাচ্ছেন কেনেথ ইউজিন স্মিথ (৫৮)। ছবি: রয়টার্স
নাইট্রোজেন প্রয়োগে বিশ্বে প্রথম মৃত্যুদণ্ড পেতে যাচ্ছেন কেনেথ ইউজিন স্মিথ (৫৮)। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যে এক আসামিকে কয়েক ঘণ্টা পর নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো আসামিকে এভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার নজির নেই।

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

আসামি কেনেথ ইউজিন স্মিথের আইনজীবীরা একে নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক শাস্তি হিসেবে অভিহিত করে এর বিরুদ্ধে আপিল করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ও নিম্ন আদালতে এই আপত্তি ধোপে টেকেনি।

কেনেথের দেহে একটি মাস্কের মাধ্যমে ১৫ মিনিট ধরে নাইট্রোজেন গ্যাস পাম্প করা হবে।

কেনেথের (৫৮) বিরুদ্ধে ১৯৮৯ সালে এক যাজকের স্ত্রী এলিজাবেথ সেনেটকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ভাড়াটে খুনে হিসেবে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটান।

আজ বৃহস্পতিবারেই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।

মৃত্যুদণ্ড শাস্তি তথ্যকেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কোনো নজির যুক্তরাষ্ট্র বা পৃথিবীর অন্য কোন দেশে নেই।

১৯৯৬ সাল থেকে কারাবন্দি আছেন কেনেথ। তার আইনজীবীরা বিবিসিকে জানান, তারা শেষ মুহুর্তে দেশের শীর্ষ আদালতে আবারও আপিল আবেদন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

দুই বছর আগেও একবার তাকে প্রাণঘাতি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মৃত্যদণ্ড দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু রাত ১২টা বাজার আগে সুঁই ফোটানোর জন্য কেনেথের শিরা খুঁজে পাননি সংশ্লিষ্টরা। যার ফলে মৃত্যুদণ্ডাদেশের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় এবং তিনি সে যাত্রা প্রাণে বেঁচে যান।

১৯৮৮ সালের ১৮ মার্চ এক হাজার ডলারের বিনিময়ে কেনেথ স্মিথ ৪৫ বছর বয়সী সেনেটকে হত্যা করেন।

তার স্বামী ছিলেন একজন ঋণগ্রস্ত যাজক। স্ত্রীর জীবন বিমার অর্থ সংগ্রহ করার জন্য তিনি কেনেথকে ভাড়া করেন। তদন্তকারীরা তাকে গ্রেপ্তার করতে এলে তিনি আত্মহত্যা করেন।

এই অপরাধে কেনেথের সহযোগী ছিলেন জন ফরেস্ট পার্কার। ২০১০ সালে পার্কারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

এই কারাগারেই তার কারাজীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন কেনেথ। ছবি: কারাগারের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া
এই কারাগারেই তার কারাজীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন কেনেথ। ছবি: কারাগারের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার গ্যাস প্রয়োগে কেনেথকে হত্যার সিদ্ধান্তকে নির্যাতন বা নির্দয়, অমানবিক ও অবমাননাকর হিসেবে অভিহিত করে এটি স্থগিতের আহ্বান জানান।

কেনেথের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। তারা যুক্তি দেন, একই কয়েদিকে একাধিকবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার প্রচেষ্টা মার্কিন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর লঙ্ঘণ, যেখানে নাগরিকদের 'নির্মম ও অস্বাভাবিক' শাস্তির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে।

তবে বুধবার শুনানি ছাড়াই এই আবেদনের নাকচ করে দেয় আদালত।

আলাবামা অঙ্গরাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্যাস প্রয়োগের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কেনেথ জ্ঞান হারাবেন এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই তিনি মারা যাবেন।

অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল স্টিভ মার্শাল এর আগে জানান, 'এটা সম্ভবত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সবচেয়ে মানবিক প্রক্রিয়া'।

প্রাণঘাতি ইঞ্জেকশনের উপকরণ দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়ায় আলাবামা ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্য দুই রাজ্যে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগে মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার দিক দিয়ে শীর্ষ স্থানে থাকা অঙ্গরাজ্যের অন্যতম আলাবামা। এ মুহুর্তে সেখানে ১৬৫ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি অপেক্ষমান রয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

32m ago