‘নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের বক্তব্য পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গির পুনরাবৃত্তি’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বাংলাদেশের নির্বাচনের বাস্তবতাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে তার সীমা লঙ্ঘন করেছেন।

আজ রোববার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, হাইকমিশনারের বক্তব্য মানবাধিকারকে রাজনীতিকরণে পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গির পুনরাবৃত্তি।

গত ৮ জানুয়ারি জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সহিংসতা এবং বিরোধী প্রার্থী ও সমর্থকদের দমন-নিপীড়নে ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন ও অনিয়মের পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং কার্যকর তদন্তের আহ্বান জানান তিনি।

তার ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ এ বিবৃতি দিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণতান্ত্রিক নীতি সমুন্নত রাখতে সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে স্পষ্ট হয়েছে।

মন্ত্রণালয় বলছে, কিছু ভোটকেন্দ্রে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচনের দিনটি এতটাই শান্তিপূর্ণ ছিল যা আগে কখনো দেখা যায়নি। মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা অনেক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং সাংবাদিকও এমন কথা বলেছেন।

জাতিসংঘের হাইকমিশনারের 'বিরোধী প্রার্থীদের সহিংসতা ও দমন-পীড়নের দ্বারা নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্তের' দাবি অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট ও পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অসাংবিধানিক দাবির অজুহাতে নির্বাচনে না আসার সিদ্ধান্ত নেয়। এটি দুর্ভাগ্যজনক যে বিএনপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করতে সহিংসতা ও নিরপরাধ মানুষদের হত্যার পথ বেছে নিয়েছে, যেমন এর আগেও নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা এমন করেছিল।'

মন্ত্রণালয়ের দাবি, গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি কর্মীরা ২৪ জনকে হত্যা করেছে এবং প্রায় এক হাজার যানবাহনে আগুন দিয়েছে। ট্রেনে আগুন দিয়ে এক মা ও তিন বছরের শিশুসহ যাত্রীদের পুড়িয়ে হত্যা করেছে।

'দেশকে অস্থিতিশীল করতে এবং দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাকে ব্যাহত করতে তাদের সহিংস আচরণের মধ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। এসব সত্ত্বেও, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংযতভাবে ও যৌক্তিক প্রক্রিয়ায় এবং আইনি পরিসীমার মধ্যে কাজ করেছে,' বিবৃতিতে বলা হয়।

এতে আরও বলা হয়, 'গণগ্রেপ্তার, হুমকি, গুম, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা ব্ল্যাকমেইলিং ও নজরদারির বিষয়ে মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয়ের বক্তব্য ভিত্তিহীন এবং প্রমাণিত নয়।'

'এছাড়াও মানবাধিকারকর্মীদের আত্মগোপনে যেতে বাধ্য করা, দেশ ছেড়ে পালানো, গুমের বিষয়ে মানবাধিকার হাইকমিশনারের দাবি খারিজ করে দিয়েছে সরকার,' যোগ করা হয় এতে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এটি বাস্তবতার অনেক দূরে এবং জাতিসংঘের হাইকমিশনার কার্যালয়ের দায়িত্বহীনতার দৃষ্টান্ত।

'বিবৃতি দেওয়ার আগে তথ্যের সত্যতা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ,' যোগ করা হয় এতে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আমরা গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানায় এবং যেকোনো উদ্বেগের সমাধান করতে সর্বদা প্রস্তুত। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার কার্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত বাংলাদেশ।

Comments

The Daily Star  | English

July 6, 2024: 'Bangla Blockade' announced

Beyond Dhaka, protesters hold the streets with equal resolve

21h ago