‘বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুনে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা, পরিকল্পনা ভিডিও কনফারেন্সে’

‘বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুনে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা, পরিকল্পনা ভিডিও কনফারেন্সে’
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

রাজধানী ঢাকার গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় বিএনপির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি জানান, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

ডিবি প্রধান বলেন, 'কাজী মনসুরকে গ্রেপ্তারের পর তার কাছে আমরা দুটি বিষয় জানতে পেরেছি। তার বড় ভাই, ঊর্ধ্বতন নেতা এনামুল ইসলাম খন্দকার ও রবিউল ইসলাম নয়ন, তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি ওয়ার্ডে টাকা, ককটেল ও বিস্ফোরক দ্রব্য বিতরণ করেছে; নির্বাচনী ক্যাম্পগুলোতে তারা আগুন লাগাবে। ককটেল বিস্ফোরণ করবে, উদ্দেশ্য কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে না আসে। এই পরিকল্পনায় জড়িত পাঁচজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছে ৩০ হাজার টাকা ও ২০ পিস ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।'

নবী উল্লাহ নবীকে অর্থদাতা হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলন শেষে আরও দুইজনের গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয় ডিএমপির পক্ষ থেকে।

গ্রেপ্তার আটজন হলেন—ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবী, দক্ষিণ যুবদলের সদস্য মোহাম্মদ মনসুর আলম, কামরাঙ্গীর চর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল, লালবাগ থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন স্বপন, বিএনপি নেতা কবির, দেলোয়ার, হাসান, সালাউদ্দিন।

হারুন বলেন, 'দুই দিন আগে তাদের হাইপ্রোফাইল ভিডিও কনফারেন্স ছিল। সেখানে প্রথমে আসে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বান খন্দকার এনাম। তারপরে আসে সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার ও ইকবাল হোসেন বাবলু, দপ্তর সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী এবং যুবদলের আটটি টিমের লিডার।

'সেই কনফারেন্সে ছিলেন কাজী মনসুর। কনফারেন্সে এক পর্যায়ে বলা হলো, বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা পর্যন্ত ট্রেনে; বিশেষ করে নরসিংদীর কাছে এসে সুবিধাজনক জায়গায় অগ্নি সংযোগ করা। আরেকটি হলো কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ রুটে যাত্রীবাহী বগিতে অগ্নি সংযোগ করা। যাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। জনগণ চূড়ান্তভাবে ভীত হয়,' বলেন হারুন।

তিনি আরও বলেন, 'রবিউল ইসলাম নয়নের তত্ত্বাবধায়নে যুবদলের কয়েকটি টিম লিডার বৃহত্তর কয়েকজন দাগী বোমা সন্ত্রাসী দিয়ে; ভিডিও কনফারেন্সের এক পর্যায়ে তারা বলছিল, আগুন লাগাতে হবে ট্রেনে, আপনাদের কে রাজি আছেন? ১০-১২ জনের মধ্যে একজন শুধু বললো, আমি পারব। এই মুহূর্তে আমি নাম বলছি না। ২০১৩-১৪ সালে বাংলামোটর এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ করেছিল এ রকম তিনজনকে তারা ঠিক করে। তাদের নামও আমাদের কাছে আছে।'

হারুন বলেন, 'তিনজন ও ভিডিও কনফারেন্সের একজন মিলে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আগুন লাগানোর ব্যবস্থা করেছে। আমরা নাম-নম্বর পেয়েছি, রাজনৈতিক পরিচয় জানতে পেরেছি। প্রকৃত আসামিদের আমরা গ্রেপ্তার করব। এই ঘটনায় নবী উল্লাহ নবীর সম্পৃক্ততা আমরা পাচ্ছি। তাকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।'

এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, 'একটি গ্রুপ ভিডিও কনফারেন্সে এসে কারা কারা ঘটনা ঘটাবে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আরেকটি গ্রুপ হচ্ছে দূর থেকে পরামর্শ ও অর্থদাতা। পরামর্শ ও অর্থদাতা হিসেবে আমরা যাদের নাম পেয়েছি তার মধ্যে এক নম্বর হচ্ছেন নবী উল্লাহ নবী। তাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands. 

2h ago