কেন আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে—ব্যাখ্যা দিলেন সিইসি

কেন আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে—ব্যাখ্যা দিলেন সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কেন আন্তর্জাতিক মহল কথা বলছে তার ব্যাখ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস ও আইসিসিপিআরে (ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস) অনুস্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। যে কারণে রাষ্ট্রের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিও বাংলাদেশের দায়বদ্ধতা আছে।

আজ শনিবার দুপুরে সিলেট জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'বিএনপি একটি দল, ওরা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে এবং জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছে নির্বাচন বর্জন করার জন্য। এটা যদি ওভাবেই বলে, শান্তিপূর্ণভাবে, এটা কিন্তু খুব বড় চ্যালেঞ্জ নয়। কারণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে, গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে কোনো একটা নির্বাচনের পক্ষে যেমন বলা যায়—সে নির্বাচনের সমালোচনাও করা সম্ভব।

'আমরা যেটা বলেছি, নির্বাচনকে প্রতিহত করতে পারবে না। এখন তারা যদি নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে তাহলে একটা চ্যালেঞ্জ যেটা আসবে সেটা আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বলা হয়েছে তারা যেন বোঝার চেষ্টা করেন; আসলেই তারা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন বর্জন করার যে আহ্বান জানাচ্ছেন ওর মধ্যেই যদি সীমাবদ্ধ থাকেন তাহলে আমাদের কোনো সংকট নেই। যদি নির্বাচনের দিন বা আগে তাদের অবস্থান পরিবর্তিত হয়ে নির্বাচন প্রতিহত করার কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করেন, ভোটারদের যদি ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা প্রদান করা হয়, তাহলে অবশ্যই একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তবে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে,' বলেন তিনি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, 'নির্বাচনের দিন ব্যান্ডউইথ কমানো হবে না। সেদিন যদি ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দেওয়া হয়; দুটি কারণে আমি জানতে চেয়েছিলাম, একটি হলো অপপ্রচার—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক কিছু বানিয়ে নির্বাচনকে বরবাদ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়। আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ব্যান্ডউইথটা থাকবে। যদি অপপ্রচার হয়, সেটা যে অপপ্রচার; সেটাকেও প্রচার করার জন্য সত্য-মিথ্যার বিচার করার দায়িত্ব নাগরিকদের গ্রহণ করতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রেখে আমরা নির্বাচন পরিচালনার চেষ্টা করব।'

নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রে কেবল দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা আছে—কারণ ব্যাখ্যা করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, 'কেন বাইরে থেকে বিভিন্ন দেশের লোকরা কথা বলে? এর কারণ হচ্ছে ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে মূল নথি। সেখানে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করা আছে। এছাড়া আইসিসিপিআরে (ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস) মানুষের যে ভোট দেওয়ার অধিকার এবং ভোট পাওয়ার অধিকার, নির্বাচিত হওয়ার অধিকার এবং কীভাবে নির্বাচিত হবে, মানদণ্ড কী হবে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। আমরা ওটাতে অনুস্বাক্ষর করেছি। কাজেই আমাদের রাষ্ট্রের প্রতি যেমন দায়বদ্ধতা আছে, ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির প্রতিও আমাদের দায়বদ্ধতা আছে।'

তিনি বলেন, 'ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির প্রতি আমাদের যে দায়বদ্ধতা, সেটাকে আমরা স্বীকার করি। জনগণের কাছে আমাদের যে দায়ভার, সেটাও আমরা স্বীকার করি।'

Comments

The Daily Star  | English

Admin getting even heavier at the top

After the interim government took over, the number of officials in the upper echelon of the civil administration has become over three times the posts.

11h ago