নীলফামারীতে চিতা বাঘ পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জিডি
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া দোলাপাড়া গ্রামে একটি চিতা বাঘকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র মণ্ডল জানান, আজ বৃহস্পতিবার জিডিটি করা হয়েছে এবং বন বিভাগের কর্মকর্তারা চিতা বাঘটির মরদেহ নিয়ে গেছে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল সকাল ১১টার দিকে ওই গ্রামের কৃষকরা এলাকার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা সেচ প্রকল্পের একটি সেচ নালার পাশে চাষের কাজ করার সময় একটি গাছের মগডালে চিতা বাঘটি দেখতে পেয়ে আতংকিত হয়ে চিৎকার শুরু করে।
তাদের চিৎকারে গ্রামের কয়েকশ উৎসুক জনতা সেখানে ভিড় করে এবং চিতা বাঘটিকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাতে থাকলে এক পর্যায়ে বাঘটি গাছের মগডাল থেকেই উপস্থিত জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
মাগুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান মিঠু বেলেন, 'বাঘটি উপস্থিত সবাইকে আক্রমণ করলে এক শিশুসহ চারজন আহত হন। তারা হলেন বেচাপাড়া গ্রামের বুলেট মিয়া (২৮), ফেরদৌস আলম (৩৫), নায়েব আলী (৪০) এবং উত্তরনামা গ্রামের ৮ বছরের শিশু জান্নাতুন।'
তিনি আরও বলেন, 'গুরুতর আহত জান্নাতুনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।'
কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম আশিক রেজা বলেন, 'ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয় প্রাণীটিকে উদ্ধারের জন্য। কিন্তু তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই আতংকগ্রস্থ জনতা সেটিকে মেরে ফেলে।'
তিনি বলেন, 'আমরা জানার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি রংপুর বিভাগীয় বন অফিসে জানিয়েছি এবং তাদের একটি দলও ঘটনাস্থলে গিয়েছিল।'
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অফিসের বন্যপ্রাণী ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা স্মৃতি সিংহ রায় বলেন, 'এটি লেপার্ড বা চিতা। বাঘটি সম্ভবত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ওপাড়ে পশ্চিম বাংলার কুচবিহার জেলার বনাঞ্চল থেকে চলে এসেছিল পথ ভুলে কিংবা খাদ্যের সন্ধানে।'
তিনি বলেন, 'বাঘটিকে হত্যার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী বন্যপ্রাণী হত্যা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ। ঊর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষ ঘটনার বাস্তবতার নিরিখে নিয়মিত মামলার নির্দেশনা দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
Comments