প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি: গাইবান্ধা, রংপুর ও দিনাজপুরে আটক ৭৪

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে গাইবান্ধায় ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপের পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে গাইবান্ধায় ৩৭, রংপুরে ১৯ এবং দিনাজপুরে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে।

গাইবান্ধা র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-১৩) কোম্পানি কমান্ডার মোস্তাফিজুর রহমান এবং রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান এসব তথ্য জানান।

র‍্যাব-১৩ জানায়, আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তারা জানতে পারে যে একটি জালিয়াতি চক্র ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে গাইবান্ধা জেলা শহরের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। পরে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে জালিয়াতি চক্রের পাঁচ মূলহোতাসহ ৩২ জন পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়।

অভিযানকালে ২৪টি মাষ্টার কার্ড, ২০টি ব্লুটুথ, ১৭টি মোবাইল, ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করে র‌্যাব।

র‍্যাব-১৩ জানায়, আটককৃত পরীক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং মোবাইলের মাধ্যমে সুকৌশলে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে আসছিল। মারুফ, মুন্না, সোহেল, নজরুল ও সোহাগ বিভিন্ন পরীক্ষার্থীকে ১৪-১৮ লাখ টাকায় চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পরীক্ষার্থীরা জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত জালিয়াতি চক্রের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।

অপরদিকে, রংপুরে আটককৃতদের বিষয়ে আজ দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান জানান, শুক্রবার পরীক্ষা চলাকালে সিন্ডিকেট দলের সদস্য শিক্ষকরা অভিনব কায়দায় আধুনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে তা বাইরে সরবরাহ করে। এরপর বাইরে থেকে উত্তর সরবরাহের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়। 

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ আগে থেকে তৎপর থাকায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে আটজন পরীক্ষার্থী এবং অন্যভাবে তিনজন পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এ ছাড়া, তিনজন শিক্ষকসহ সিন্ডিকেট দলের আরও পাঁচ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এসময় ৮০টি মোবাইল ফোন এবং আধুনিক ডিভাইস জব্দ করা হয় বলে জানান তিনি।

পুলিশ কমিশনার বলেন, 'সাধারণ প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় পরীক্ষা শুরুর আগে। কিন্তু এখানে আগে থেকে কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। মূলত পরীক্ষা শুরুর পর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে প্রশ্নপত্র বাইরে পাঠিয়ে তার উত্তর সরবরাহের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়।' 

রংপুর ছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে এই সিন্ডিকেট দলের আরও সদস্যদের আটক করা হয়েছে। একইভাবে দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। 

এ বিষয়ে আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ পরবর্তীতে যাদের নাম আসবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

আজ রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮টি জেলার ৫৩৫টি কেন্দ্রে প্রাথমিক ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রথম ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ পর্বের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Palak admits shutting down internet deliberately on Hasina's order

Former state minister for ICT Zunaid Ahmed Palak has confessed to shutting down the internet nationwide deliberately during the July mass uprising on former prime minister Sheikh Hasina’s orders. .His testimony was recorded by ICT’s investigation agency following a questioning session held

5m ago