‘তোদের এখানে কাজ কী’ ছাত্রলীগ নেতাদের প্রশ্ন করেই গুলি ছোড়েন আ. লীগ নেতা

শাহবাগে গত রোববার রাতে ছত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা চলাকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মোশাররফ হোসেন হঠাৎ গুলি ছোড়েন। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শাহবাগে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর মধ্যে বাগবিতণ্ডা চলাকালে অস্ত্র বের করে ফাঁকা গুলি ছুড়েছেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা।

গুলিতে কেউ হতাহত হয়নি। তবে ঘটনার পর ওই আওয়ামী লীগ নেতার অস্ত্র নিয়ে যায় শাহবাগ থানা পুলিশ।

গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগের রসনা বিলাস রেস্টুরেন্টের সামনে এ ঘটনা ঘটলেও, আজ বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মোশাররফ হোসেন শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ক্যাম্পাস সংলগ্ন রসনা বিলাস রেস্টুরেন্টের সামনে মোশাররফ হোসেন গুলি ছোড়েন।

সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক জাকির হোসেন কোতোয়ালসহ আরও কয়েকজন নেতাকর্মী।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, 'ওই রেস্টুরেন্টের মালিক লিটন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব জুয়েল হোসেনের ভাই।'

তিনি জানান, রেস্টুরেন্ট মালিক লিটন গত ১৭ নভেম্বর টাকা চুরির অভিযোগে তার কর্মচারী শারফিন মিয়াকে মারধর করেন এবং রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে দেন। শারফিনকে বাঁচাতে গেলে রেস্টুরেন্টের আরেক কর্মচারী ইফতিকেও মারধর ও চাকরিচ্যুত করে মালিক।

পরে ইফতি তার এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে এ ঘটনা জানালে, তার মাধ্যমে জাকির বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারেন।

পরে জাকির আরও কিছু সাবেক নেতাকর্মীদের নিয়ে রোববার রাতে ওই রেস্টুরেন্টে যান।

তখন হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফ। তিনি গিয়ে জাকির ও অন্যান্য ছাত্রলীগ নেতাদের জিজ্ঞাসা করেন, 'এখানে কী? তোমরা এখানে কী করছ?'

এক পর্যায়ে মোশাররফ পিস্তল বের করে পরপর দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সেখানে উপস্থিত অন্যান্যরা তাকে আটকালে তিনি আরেকটি গুলি ছোড়েন।

গুলির বিষয়টি নিশ্চিত করে ওসি নুর মোহাম্মদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। আমরা ওই আওয়ামী লীগ নেতার হাত থেকে পিস্তল ছিনিয়ে নিয়েছি।'

জানা গেছে, পরে ১৯ নভেম্বর রাতে শাহবাগ থানায় স্থানীয় ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান (ঢাকা দক্ষিণ) ও ওসি নুর মোহাম্মদের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে আপসরফা করে।

জানতে চাইলে কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আওয়ামী লীগ নেতা ওই রাতে ফাঁকা গুলি ছুড়েছেন। তিনি আত্মরক্ষার জন্য এটা করেছেন বলে দাবি করেছেন। পরে উভয় পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে।'

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

5h ago