বিএনপির অধিকাংশ নেতা নির্বাচনমুখী, আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপির অধিকাংশ নেতা নির্বাচনমুখী হয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
তিনি বলেন, তৃণমূল বিএনপি ও বিএনএফ ছাড়াও অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
গোয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'আমরা বলেছি, অধিকাংশ দলই ইলেকশনে চলে এসেছে। বিএনপি ইলেকশনে না এলেও, যারা কমান্ড শুনছেন না, তারা কিন্তু ভাগ হয়ে কেউ তৃণমূল বিএনপি নামে কেউ বিএনএম নামে চলে এসেছেন।'
তিনি বলেন, 'আমরা এখন পর্যন্ত যা জানতে পেরেছি, তাদের অধিকাংশ নেতাই; যদি এই দুই ভাগেও না আসে, স্বতন্ত্র হিসেবে চলে আসবেন। আমরা দেখছি, তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি মানতে পারছেন না। তারা সবাই নির্বাচনমুখী হয়ে গেছেন, আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন। আমরা সব সময়ই বলছি, আমরা একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেবো। যেখানে আপনারা সবাই এসে নির্বাচন করতে পারবেন। আপনাদের কোনো রকম কোনো অসুবিধা, পক্ষপাতিত্ব হবে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর লাউড এবং ক্লিয়ার ভয়েস যে, কেউ এখানে পক্ষপাতিত্ব করবে না। অবাধ-সুষ্ঠু একটা নির্বাচন হবে।'
বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চাপ দিয়ে বিভিন্ন দলকে নির্বাচনে নিচ্ছে; এ প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান বলেন, 'এখানে চাপের কোনো প্রশ্নই আসে না। এরা স্বপ্রণোদিত হয়ে আসছেন। এরা আমাদের নেতাদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন যে, তারা নির্বাচন করবেন—করতে চান। আমাদের কথা একটাই, তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে, আপনারা দল ভেঙে যে নতুন দল করেছেন সেখানে আসুন কিংবা আপনারা যেভাবে আসতে পারেন। আমাদের তরফ থেকে আমরা স্বাগত জানাব।'
গতকাল আদালত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের জমিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। তার আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, সরকারের প্রভাবে বিচারক পক্ষে রায় দিচ্ছেন না। সরকার আসলে প্রভাব বিস্তার করছে কি না বিএনপি নেতাদের জামিনের ক্ষেত্রে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'সরকার প্রভাব বিস্তার করবে কেন? বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন, সেটা আপনারা দেখেছেন। আমাদের সরকারের কোনো রকম প্রভাব সেখানে নেই।'
তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, এখানে কোনো কিছুতে প্রভাবিত হয়ে বিচারকরা সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত এটা, আমাদের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত নয় এটা।'
বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে, নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে মামলা দেওয়া হচ্ছে, এ ব্যাপারে তিনি বলেন, 'আমি যদি এভাবে বলি, বিএনপির সিদ্ধান্ত তাদের নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারেনি। তার প্রমাণ আমি দেখালাম। তারা দুটি দলে ভাগ হয়ে গেছে, বিএনপি নেতারাই ভাগ করেছেন। একটায় তৈমুর আলম খন্দকার ও শমসের মবিন চৌধুরী এবং আরেকটায় বিএনপির একজন মন্ত্রী ছিলেন তিনি। বিএনএফ তৈরি করেছেন, তার সঙ্গে আরও কয়েকজন। তারা সবাই শীর্ষস্থানীয় বিএনপি নেতা। তারাই ভাগ হচ্ছে। আমাদের এখানে কাউকে জোর করতে হয়নি। তারাই মনে করছেন যে, তাদের কেন্দ্রীয় কমিটি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তাদের মন মতো হচ্ছে না।
'তারা নির্বাচনমুখী সেই জন্য তারা নির্বাচনে চলে আসছেন। তাদের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশের বাইরে চলে আসছেন। কাজেই আমাদের দল থেকে তাদের জোর দেওয়া বা তাদের আহ্বান করার প্রশ্নই আসে না। তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে আসছেন,' বলেন তিনি।
Comments